পঞ্চম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় দ্বিতীয় অধ্যায়
পঞ্চম শ্রেণি: ব্রিটিশ শাসন

ব্রিটিশ শাসন পঞ্চম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

ব্রিটিশ শাসন পঞ্চম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়: মোঘল আমলে পর্তুগিজ, ডাচ, ইংরেজ, ফরাসি বিভিন্ন ইউরোপীয় বণিকগোষ্ঠী ব্যবসায় করতে ভারতীয় উপমহাদেশে আসে। ব্যবসায় বাণিজ্যের সুবিধার জন্যই এরা ক্রমশ স্থানীয় রাজনীতি ও শাসনকাজে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে। এসব ইউরোপীয় শক্তির মধ্যে ইংরেজরাই শেষপর্যন্ত প্রতিযোগিতায় টিকে থাকে। ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশির যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলায় ইংরেজ শাসনের সূচনা হয়। এর ফলে বাংলা রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারায়। এ শাসন বাংলায় সমাজ, সংস্কৃতিতেও ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে আসে। প্রায় দুইশ বছর ধরে ইংরেজরা এদেশে রাজত্ব করে। তাদের শাসনামলে এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তার ঘটে। ফলে শিক্ষা, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে। বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের পরিণতিতে এক পর্যায়ে ১৯৪৭ সালে ইংরেজরা ভারত উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়। জন্মলাভ করে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি আলাদা রাষ্ট্র।

ব্রিটিশ শাসন পঞ্চম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়:

অল্প কথায় উত্তর দাও :

প্রশ্ন ১। সিপাহি বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ লেখ।
উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ হলো-
১. ব্রিটিশ ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির সাম্রাজ্যবাদ নীতি।
২. সেনাবাহিনীতে সিপাহি পদে ভারতীয়দের সংখ্যাধিক্য।
৩. ভারতের বিভিন্ন এলাকার সৈন্যদের মধ্যে সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি।
৪. ১৮৫৬ সালের পর ভারতের বাইরেও সৈন্যদের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া।
৫. কামান ও বন্দুকের কার্তুজ পিচ্ছিল করার জন্য গরু এবং শূকরের চর্বি ব্যবহারের গুজব নিয়ে ধর্মীয় অশান্তি তৈরি করা।

প্রশ্ন ২। ব্রিটিশ শাসনের দুটি ভালো ও দুটি খারাপ দিক উল্লেখ কর।
উত্তর:
ব্রিটিশ শাসনের দুটি ভালো দিক হলো-
১. নতুন নতুন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি হয়।
২. সড়কপথ ও রেলপথ উন্নয়ন এবং টেলিগ্রাফ প্রচলনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়।
ব্রিটিশ শাসনের দুটি খারাপ দিক হলো-
১. ‘ভাগ কর শাসন কর’ নীতির ফলে এদেশের মানুষের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, জাতি এবং অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
২. বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।

প্রশ্ন ৩। বাংলার নবজাগরণে কারা অবদান রেখেছেন?
উত্তর: উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে। এ নবজাগরণে যাঁরা অবদান রাখেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, স্যার সৈয়দ আহমদ খান, সৈয়দ আমীর আলী, নবাব আব্দুল লতিফ প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।

প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

প্রশ্ন ১। পলাশির যুদ্ধের ফলাফল সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশির প্রান্তরে ইংরেজ শক্তির সাথে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার সৈন্যদের যুদ্ধ হয়। ইতিহাসে এ যুদ্ধ পলাশির যুদ্ধ নামে পরিচিত। পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পরাজয়বরণ করেন এবং বাংলায় ইংরেজ শাসনের ভিত্তি স্থাপিত হয়। বাংলার স্বাধীনতার সূর্য ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ বছরের জন্য অস্তমিত হয়। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ের পর তার সেনাবাহিনীর প্রধান মীর জাফর আলী খান নামমাত্র নবাবি লাভ করেন। কিন্তু বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শাসনক্ষমতা ইংরেজদের হাতে চলে যায়। ইংরেজরা শাসনের নামে এদেশে শোষণ চালাতে থাকে। ফলে উপমহাদেশের সাধারণ মানুষ দুঃখ ও দুর্দশার মাঝে নিপতিত হয়। ব্যবসায় বাণিজ্যে ইংরেজরা একচেটিয়া অধিকার লাভ করে ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা সর্বস্বান্ত হন।

প্রশ্ন ২। সিপাহি বিদ্রোহে বাংলার ভূমিকা কী ছিল?
উত্তর: ১৮৫৭ সালে পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুরে মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হয়। বিপ্লব ক্রমে সারা ভারতে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে ঢাকা, চট্টগ্রাম, যশোর, সিলেট, কুমিল্লা, পাবনা, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী এ বিদ্রোহে শামিল হয়।

প্রশ্ন ৩। সাহিত্যিকগণ রাজনৈতিক আন্দোলনে কী ধরনের ভূমিকা পালন করতে পারেন?
উত্তর: ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ লেখকের কবিতা, গান ও লেখার মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধিকার চেতনা আরও বেগবান হয়।

অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর:

১. সংক্ষেপে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

প্রশ্ন ১। নবজাগরণ কী?
উত্তর: উনিশ শতকে বাংলায় শিক্ষা, সংস্কৃতি, সামাজিক, শৈল্পিক ও মুক্তচিন্তা চর্চার ক্ষেত্রে যে প্রবল জোয়ার এসেছিল, তাই নবজাগরণ নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ২। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি কত বছর এ দেশ শাসন করেছিল?
উত্তর: ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি একশ বছর এ দেশ শাসন করেছিল।

প্রশ্ন ৩। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব কে ছিলেন?
উত্তর: বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা।

প্রশ্ন ৪। ঘষেটি বেগম কে ছিলেন?
উত্তর: ঘষেটি বেগম বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার খালা ছিলেন।

প্রশ্ন ৫। বাহাদুর শাহ্ পার্ক কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: বাহাদুর শাহ্ পার্ক ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্নিকটে অবস্থিত।

প্রশ্ন ৬। সিরাজ-উদ-দৌলা কত বছর বয়সে বাংলার নবাব হন?
উত্তর: সিরাজ-উদ-দৌলা ২২ বছর বয়সে বাংলার নবাব হন।

প্রশ্ন ৭। ইংরেজরা প্রায় কত বছর রাজত্ব করে?
উত্তর: ইংজেরা প্রায় ২০০ বছর এদেশে রাজত্ব করে।

প্রশ্ন ৮। ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কী?
উত্তর: ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকালে ১৭৭০ সালে (বাংলা ১১৭৬ সাল) বাংলায় এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, যা ইতিহাসে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ৯। ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ কখন হয়েছিল?
উত্তর: ‘ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ বাংলা ১১৭৬ সালে (ইংরেজি ১৭৭০ সালে) হয়েছিল।

প্রশ্ন ১০। কোন সালে বাংলায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল?
উত্তর: বাংলা ১১৭৬ সালে (ইংরেজি ১৭৭০ সালে) বাংলায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।

প্রশ্ন ১১। কোথায়, কার নেতৃত্বে সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হয়?
উত্তর: পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুরে মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে সিপাহি বিদ্রোহ শুরু হয়।

প্রশ্ন ১২। মঙ্গল পান্ডে কোন আন্দোলনের নেতা ছিলেন?
উত্তর: মঙ্গল পান্ডে সিপাহি বিদ্রোহ আন্দোলনের নেতা ছিলেন।

প্রশ্ন ১৩। কত সালে বঙ্গভঙ্গ হয়েছিল?
উত্তর: ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হয়েছিল।

প্রশ্ন ১৪। কত সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়?
উত্তর: ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।

প্রশ্ন ১৫। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পলাশির যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন কেন?
উত্তর: প্রধান সেনাপতি মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে।

প্রশ্ন ১৬। তিতুমীর বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেছিলেন কেন?
উত্তর: ইংরেজ বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য তিতুমির বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেছিলেন।

প্রশ্ন ১৭। ইংরেজ আমলে নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় একজন নারীকে নারী জাগরণের অগ্রদূত বলা হতো। এই নারীর নাম কী?
উত্তর: এই নারীর নাম বেগম রোকেয়া।

প্রশ্ন ১৮। বাংলায় ইংরেজদের আগমন ঘটে কেন?
উত্তর: ব্যবসায় বাণিজ্যের জন্য বাংলায় ইংরেজদের আগমন ঘটে।

প্রশ্ন ১৯। কত সালে সিপাহি বিদ্রোহ হয়?
উত্তর: ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ হয়।

প্রশ্ন ২০। সিপাহি বিদ্রোহের ২টি কারণ লেখ।
উত্তর: কারণ ১. কোম্পানির সাম্রাজ্যবাদ নীতি ২. অর্থনৈতিক শোষণ।

প্রশ্ন ২১। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পলাশির যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন কেন?
উত্তর: নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পলাশির যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতার জন্য।

ব্রিটিশ শাসন পঞ্চম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়:

২. সঠিক শব্দ দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ কর।

১। তিতুমীর নারিকেলবাড়িয়ায় ___ নির্মাণ করেন।
২। সিপাহি বিদ্রোহের নেতৃত্ব দেন ___।
৩। উনিশ শতকে বাংলায় ___ ঘটে।
৪। সিরাজ-উদ-দৌলা ___ সালে নবাব হন।
৫। “ছিয়াত্তরের মন্বন্তর’ ইংরেজি ___ সালে হয়েছিল।
৬। পলাশির যুদ্ধ ___ সালে হয়েছিল।
৭। ভারতবর্ষে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা ছিলেন___।
৮। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন ___।
৯। সিপাহি বিদ্রোহ ঘটে ___ সালে
১০। ১৮৫৭ সালে ___ পার্কে বাঙালি সিপাহিদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল।
১১। শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে উনিশ শতকে বাংলায় ___ ঘটে।
১২। তিতুমির ইংরেজ বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য ___ নির্মাণ করেন।
১৩। সেনাবাহিনীতে সিপাহি পদে ___ সংখ্যাধিক্য ছিল।
১৪। সিরাজ-উদ-দৌলা ___ বছর বয়সে বাংলার নবাব হন।
১৫। ___ ইংরেজরা ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে।
১৬। ১৭৫৭ সাল থেকে ___ সাল পর্যন্ত এদেশে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলে।
১৭। কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ___ সালে।
১৮। ___সালে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এক যুদ্ধে তিতুমির পরাজিত ও নিহত হন।
১৯। ভারতীয় মুসলিম লীগ নামে রাজনৈতিক দল গঠিত হয় ___।
২০। রাজনৈতিক আন্দোলনের তৃতীয় ধাপে নেতৃত্ব দিয়েছেন ___।
২১। ___সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়।

উত্তরমালা: ১। বাঁশের কেল্লা; ২। মঙ্গল পান্ডে; ৩। নবজাগরণ; ৪। ১৭৫৬ সালে; ৫। ১৭৭০; ৬। ১৭৫৭; ৭। রবার্ট ক্লাইভ; ৮। সিরাজ-উদ-দৌলা; ৯। ১৮৫৭; ১০। বাহাদুর শাহ্; ১১। নবজাগরণ; ১২। বাঁশের কেল্লা; ১৩। ভারতীয়দের; ১৪। ২২; ১৫। ১৬০০ সালে; ১৬। ১৮৫৭; ১৭। ১৮১৬; ১৮। ১৮৩১; ১৯। ১৯০৬ সালে; ২০। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু; ২১। ১৯৪৭।

৩. বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশ মিল কর।

প্রশ্ন ১। বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশ মিল কর:

বাম পাশ ডান পাশ
(ক) নবজাগরণ সিরাজ-উদ-দৌলা।
(খ) সিপাহী বিদ্রোহ সৈয়দ আমীর আলী।
(গ) নারী শিক্ষা রানি ভিক্টোরিয়া।
(ঘ) পলাশির যুদ্ধ মঙ্গল পাণ্ডে।
(ঙ) বাঁশের কেল্লা বেগম রোকেয়া।
তিতুমীর।
বাহাদুর শাহ।

উত্তরমালা:
(ক) নবজাগরণ সৈয়দ আমীর আলী।
(খ) সিপাহি বিদ্রোহ মঙ্গল পান্ডে।
(গ) নারী শিক্ষা বেগম রোকেয়া।
(ঘ) পলাশির যুদ্ধ সিরাজ-উদ-দৌলা।
(ঙ) বাঁশের কেল্লা তিতুমির।

প্রশ্ন ২। বামপাশের বাক্যাংশের সাথে ডানপাশের বাক্যাংশ মিল কর:

বাম পাশ ডান পাশ
(ক) পলাশির যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৯৪৭ সালে।
(খ) সিপাহী বিদ্রোহ হয় ১৯০৬ সালে।
(গ) সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার নবাব হন ১৬০০ সালে।
(ঘ) বঙ্গভঙ্গ রদ হয় ১৮৫৭ সালে।
(ঙ) মুসলিম লীগ নামক রাজনৈতিক দল গঠিত হয় ১৭৫৭ সালে।
১৭৫৬ সালে।
১৯১১ সালে।

উত্তরমালা:
(ক) পলাশির যুদ্ধ সংঘটিত হয় ১৭৫৭ সালে।
(খ) সিপাহি বিদ্রোহ হয় ১৮৫৭ সালে।
(গ) সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার নবাব হন ১৭৫৬ সালে।
(ঘ) বঙ্গভঙ্গ রদ হয় ১৯১১ সালে।
(ঙ) মুসলিম লীগ নামক রাজনৈতিক দল গঠিত হয় ১৯০৬ সালে।

৪. নিচের কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

প্রশ্ন ১। সিরাজ-উদ-দৌলা কত বছর বয়সে নবাব হন? তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল কেন? নবাবের পরাজয়ের চারটি কারণ লেখ।
উত্তর: সিরাজ-উদ-দৌলা ২২ বছর বয়সে বাংলার নবাব হন। বাংলার সম্পদের জন্য এবং সিংহাসনের লোভে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। নবাবের পরাজয়ের চারটি কারণ হলো-
১. সেনাবাহিনীর প্রধান মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতা।
২. খালা ঘষেটি বেগমের সাথে খারাপ সম্পর্ক।
৩. রায় দুর্লভ এবং জগৎশেঠের মতো বণিকদের বিরোধিতা ও ষড়যন্ত্র।
৪. পলাশির যুদ্ধে নবাবের বিরুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে বণিকদের যোগ দেওয়া।

প্রশ্ন ২। পলাশির যুদ্ধ কত সালে সংঘটিত হয়েছিল? এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে কেন? পলাশির যুদ্ধের চারটি ফলাফল লেখ।
উত্তর: ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে শাসনক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য পলাশির যুদ্ধ হয়েছিল। পলাশি যুদ্ধের চারটি ফলাফল হলো-
১. নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পরাজিত হন এবং তাকে হত্যা করা হয়।
২. এ যুদ্ধের ফলে বাংলা তথা ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের ভিত্তি স্থাপিত হয়।
৩. ধীরে ধীরে বাংলার অর্থনীতি প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়।
৪. বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়।

প্রশ্ন ৩। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি কত বছর ভারতবর্ষ শাসন করেছিল? এ কোম্পানির শাসন কেন রদ করা হয়? কোম্পানি শাসনের চারটি খারাপ দিক লেখ।
উত্তর: ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি একশ বছর ভারতবর্ষ শাসন করেছিল। কোম্পানির নীতি ও শোষণের বিরুদ্ধে সিপাহিদের মধ্যে বিদ্রোহ অনুষ্ঠিত হওয়া এবং তা সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার কারণে কোম্পানির শাসন রদ করা হয়। কোম্পানি শাসনের চারটি খারাপ দিক হলো-
১. ‘ভাগ কর শাসন কর’ নীতির ফলে এদেশের মানুষের মধ্যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ এবং অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
২. অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায়।
৩. বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় যা ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
৪. অল্পসংখ্যক জমিদার অনেক জমির মালিক হন এবং বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গরিব হয়ে যায়।

প্রশ্ন ৪। ব্রিটিশ শাসনের দুইটি ভালো দিক ও তিনটি খারাপ দিক উল্লেখ কর।
উত্তর: ব্রিটিশ শাসনের দুইটি ভালো দিক-
১. নতুন নতুন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি হয়।
২. শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে।
ব্রিটিশ শাসনের তিনটি খারাপ দিক হলো-
১. এদেশের মানুষের মধ্যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়।
২. অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়।
৩. বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গরিব হয়ে যায়।

প্রশ্ন ৫। সিপাহি বিদ্রোহ কত সালে সংঘটিত হয়েছিল? এটি সংঘটিত হয়েছিল কেন? সিপাহি বিদ্রোহের চারটি ফলাফল লেখ।
উত্তর: সিপাহি বিদ্রোহ ১৮৫৭ সালে সংঘটিত হয়েছিল। কামান ও বন্দুকের কার্তুজ পিচ্ছিল করার জন্য গরুর ও শুকরের চর্বির ব্যবহারের গুজব নিয়ে ধর্মীয় অশান্তি তৈরির কারণে সিপাহি বিদ্রোহ হয়েছিল।
সিপাহি বিদ্রোহের চারটি ফলাফল হলো-
১. এই আন্দোলন দ্রুতই সৈন্যদের থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
২. এই বিদ্রোহে প্রায় এক লক্ষ ভারতীয় মারা যায়।
৩. ভারতের শাসনভার ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে মহারানি ভিক্টোরিয়ার হাতে চলে যায়।
৪. মহারানি ভিক্টোরিয়া স্বাধীনভাবে ভারত শাসন করতে থাকেন।

প্রশ্ন ৬। তিতুমির কে ছিলেন? তিনি বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন কেন? ব্রিটিশ বিরোধী চারটি আন্দোলনের নাম লেখ।
উত্তর: তিতুমির ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন নেতা। ইংরেজ বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য তিনি বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন। ব্রিটিশবিরোধী চারটি আন্দোলনের নাম হলো-
১. সিপাহি বিদ্রোহ।
২. বঙ্গভঙ্গ।
৩. স্বরাজ আন্দোলন।
৪. অসহযোগ আন্দোলন।

আরও পড়ুন: পঞ্চম শ্রেণি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থান ও নিদর্শন

আরও পড়ুন: আমাদের মুক্তিযুদ্ধ পঞ্চম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

Codehorse App

Check Also

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন: প্রায় চার হাজার বছর আগের কথা। ইরাক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *