পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন: প্রায় চার হাজার বছর আগের কথা। ইরাক দেশের বাবেল শহরে এক পুরোহিত পরিবারে হযরত ইবরাহীম (আ) জন্মগ্রহণ করেন। সেখানকার লোকেরা মূর্তিপূজা করত। মানুষকে প্রতারিত করত। পুরোহিতগণ রাজা-বাদশাহের সহযোগিতায় জনগণের ওপর অত্যাচার করত। তারা ভাগ্যের ভালোমন্দ জানার জন্য গণকদের শরণাপন্ন হত। গণকদের প্রতি ছিল তাদের অগাধ বিশ্বাস। তারা চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র ইত্যাদি সবকিছুর পূজা করত।

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন:

ঙ. বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর জন্ম ও বংশ পরিচয় দাও।

উত্তর: মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২০ এপ্রিল এবং রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ সোমবার মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল্লাহ, মাতার নাম আমিনা। তাঁর দাদার নাম ছিল আব্দুল মুত্তালিব। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয় মুহাম্মদ এবং আহমাদ। তাঁর জন্মের পূর্বেই পিতা আব্দুল্লাহ মারা যান। হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর জন্মের পর চাচা আবু লাহাবের দাসী সোয়েবা -তাঁকে মাতৃস্নেহে লালন-পালন করেন। তারপর বিবি হালিমা পাঁচ বছর পর্যন্ত নিজের সন্তানের মতো শিশু মুহাম্মদ (স.)-কে লালন-পালন করেন।

পাঁচ বছর বয়সে তিনি মা আমিনার কোলে ফিরে আসেন। – আদর-সোহাগে মা তাঁকে লালন-পালন করতে থাকেন। কিন্তু মায়ের আদর তাঁর কপালে বেশিদিন স্থায়ী হলো না। তাঁর ছয় বছর বয়সে মাও ইন্তেকাল করেন। এরপর তিনি দাদা আব্দুল মুত্তালিবের আদর-স্নেহে লালিত-পালিত হতে থাকেন। কিন্তু আট বছর বয়সের সময় তাঁর দাদাও মারা যান। এরপর তিনি চাচা আবু তালিবের আশ্রয়ে বড় হতে থাকেন।

প্রশ্ন ২। হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর জন্মের সময় আরবের অবস্থা কেমন ছিল?

উত্তর: মহানবি (স.)-এর জন্মের সময়, আরবের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ ছিল। আরবের লোকেরা নানা পাপের কাজে লিপ্ত ছিল। মারামারি, কাটাকাটি, ঝগড়া-ফ্যাসাদ, যুদ্ধবিগ্রহ, চুরি, ডাকাতি, হত্যা, লুণ্ঠন, মদ, জুয়া ইত্যাদি নিয়েই তারা মেতেছিল। এক আল্লাহকে ভুলে তারা নানা দেব-দেবীর মূর্তি বানিয়ে পূজা করত। কাবা প্রাঙ্গণে তারা ৩৬০টি মূর্তি স্থাপন করেছিল। তখন বাজারে পণ্যের মতো মানুষ বেচাকেনা হতো। মনিবরা দাস-দাসীদের প্রতি অমানবিক নির্যাতন করত। পরিবারে ও সমাজে নারীদের কোনো মান-সম্মান বা অধিকার ছিল না। মেয়েশিশুদের নিষ্ঠুরভাবে জীবন্ত মাটিতে পুঁতে হত্যা করা হতো। তাদের আচার-আচরণ ছিল বর্বর ও মানবতাবিরোধী। এসময়ে মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। তারা কুসংস্কার ও পাপ-পঙ্কিলতার অতলতলে নিমজ্জিত ছিল। এ কারণে সে সময়কে বলা হয় ‘আইয়্যামে জাহিলিয়া’ বা মূর্খতার যুগ।

প্রশ্ন ৩। শান্তি সংঘের উদ্দেশ্যগুলো কী কী?

উত্তর: হযরত মুহাম্মদ (স.) শান্তিকামী উৎসাহী যুবক বন্ধুদের নিয়ে ‘হিলফুল ফুযূল’ নামে একটি শান্তি সংঘ গঠন করেন। এ সংঘের উদ্দেশ্য ছিল-
১. আর্তের সেবা করা,
২. অত্যাচারীকে প্রতিরোধ করা,
৩. অত্যাচারিতকে সাহায্য করা,
৪. শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা,
৫. গোত্রে গোত্রে সম্প্রীতি বজায় রাখা ইত্যাদি। তিনি তাঁর প্রচেষ্টায় অনেক সফলতা লাভ করেন। সেদিনকার শান্তি সংঘের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আজও আমাদের কিশোর ও যুব সমাজ নিজেদের এ ধরনের মহৎ কাজে নিয়োজিত করতে পারে।

প্রশ্ন ৪। হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর নবুয়ত লাভের ঘটনা সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর: হযরত মুহাম্মদ (স.) মানুষের মুক্তির জন্য, শান্তির জন্য ভাবতেন। এজন্য বাড়ি থেকে তিন-মাইল দূরে নির্জন হেরা পর্বতের গুহায় নির্জনে ধ্যান করতেন। কখনো কখনো একাধারে দুই-তিন দিনও সেখানে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। এভাবে দীর্ঘদিন ধ্যানমগ্ন থাকার পর অবশেষে চল্লিশ বছর বয়সে রমজান মাসের কদরের রাতে আঁধার গুহা আলোকিত হয়ে উঠল। আল্লাহর ফেরেশতা জিবরাঈল (আ.) আল্লাহর মহান বাণী ওহি নিয়ে আসলেন। মহানবি (স.)-কে লক্ষ করে বললেন, ‘ইকরা পড়ুন। তিনি মহানবি (স.)-কে সূরা আলাক-এর প্রথম পাঁচটি আয়াত পাঠ করে শোনালেন। আর এ ঘটনার মাধ্যমেই মহানবি (স.) নবুয়ত লাভ করেন।

প্রশ্ন ৫। নবুয়ত লাভের পর মহানবি (স.) কী কী শিক্ষা দিলেন?

উত্তর: নবুয়ত লাভের পর মহানবি (স.) মানুষকে শেখালেন, আল্লাহ, ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। একমাত্র তাঁরই ইবাদত করতে হবে। তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোনো শরিক নেই। তিনি আরও শেখালেন দেব-দেবীর ও প্রতিমার কোনো ক্ষমতা নেই। এদের ভালোমন্দ করার কোনো শক্তিই নেই। আসমান-জমিন, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র ‘সবকিছুর মালিক একমাত্র আল্লাহ। তিনিই সবকিছুর স্রষ্টা, পালনকারী ও রিজিকদাতা। তিনিই আমাদের জীবন-মৃত্যুর মালিক। সুতরাং দাসত্ব, আনুগত্য ও ইবাদত করতে হবে একমাত্র তাঁরই।, তিনি বললেন, তোমরা সত্য, ন্যায় ও সুন্দরের পথে ফিরে এসো। পাপের কাজ পরিহার কর। অন্যায়-অবিচার করবে না। অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করবে না। মহানবি (স.) বোঝালেন, তোমাদের দুনিয়ার জীবনই শেষ নয়। মৃত্যুর পরে পরকালে আল্লাহর দরবারে দুনিয়ার ভালোমন্দ সব কাজের হিসাব দিতে হবে। পরকালে’ ভালো কাজের জন্য পুরস্কার এবং মন্দ কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া হবে।

প্রশ্ন ৬। মদিনা সনদ কী? এর কয়েকটি ধারা উল্লেখ কর।

উত্তর: মহানবি (স.) মদিনায় বসবাসরত সম্প্রদায়ের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে একটি লিখিত চুক্তি সম্পাদন করেন। এটিই মদিনা সনদ নামে খ্যাত। এ সনদে ৪৭টি ধারা ছিল। ৪৭টি ধারার মধ্যে নিচে কয়েকটি ধারা উল্লেখ করা হলো- ১. সকল সম্প্রদায় স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। ধর্মীয় ব্যাপারে কেউ কারও ওপর হস্তক্ষেপ করবে না। ২. সনদে স্বাক্ষরকারী সকল সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি সাধারণ জাতি গঠিত হবে এবং সকলে সমান নাগরিক সুবিধা ভোগ করবে। ৩. কেউ অপরাধ করলে তা তার ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে; সেজন্য গোত্র বা সম্প্রদায় দায়ী হবে না। ৪. হত্যা, রক্তারক্তি, ব্যভিচার ইত্যাদি পাপকর্ম নিষিদ্ধ করা হলো, মদিনা শহরকে পবিত্র বলে ঘোষণা করা হলো। ৫. হযরত মুহাম্মদ (স.)-এর পূর্ব অনুমতি ব্যতীত কেউ কারও বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে না।

প্রশ্ন ৭। বদর যুদ্ধের ফলাফল বর্ণনা কর।

উত্তর: ইসলামের ইতিহাসে বদর যুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময় ঘটনা। মদিনা থেকে সত্তর মাইল দক্ষিণে বদর নামক প্রান্তরে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয় বলে এর নাম বদর যুদ্ধ। এ যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা। স্বল্পসংখ্যক মুসলিম বাহিনীর হাতে কাফেরদের বিরাট বাহিনী পরাজিত হয়। এতে কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়। বদর যুদ্ধ জয়ের মধ্য দিয়ে মুসলমানরা বিশ্বজয়ের পথে যাত্রা শুরু করে। জোসেফ হেলের মতে, “বদর যুদ্ধ ইসলামের প্রথম সামরিক বিজয়।” তাই ইসলামের ইতিহাসে বদর যুদ্ধের ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রশ্ন ৮। মক্কা বিজয় ও রাসুল (স.)-এর অপূর্ব ক্ষমার দৃষ্টান্ত বর্ণনা কর।

উত্তর: মক্কা বিজয়: হুদায়বিয়ার সন্ধির শর্ত ভঙ্গ করে কুরাইশরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও ষড়যন্ত্র শুরু করে। ফলে মহানবি (স.) ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা বিজয়ের জন্য অভিযান পরিচালনা করেন। ৮ম হিজরির রমযান মাসে দশ হাজার সাহাবি নিয়ে মহানবি (স.) মক্কা অভিমুখে রওনা হলেন। হঠাৎ এত বড় মুসলিম বাহিনী দেখে কুরাইশরা ভয় পেয়ে গেল। অবস্থা বেগতিক দেখে কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ান মুসলিম বাহিনীর বিপক্ষে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে আর সাহস করল না। বিনা রক্তপাতে নবিজি (স.) মক্কা বিজয় করলেন। মক্কা বিজয় ইসলামের ইতিহাসে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা। এমন রক্তপাতহীন বিজয় পৃথিবীর ইতিহাসে আর নেই।

রাসুল (স.)-এর অপূর্ব ক্ষমার দৃষ্টান্ত: যে মক্কাবাসী একদিন মহানবি (স.) ও মুসলমানদের নির্মম নির্যাতন করেছিল। মহানবি (স.)-কে হত্যা করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল, যাঁকে জন্মভূমি মক্কা ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। মদিনায়ও তাঁকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। সেই মক্কার একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে মহানবি (স.) সবাইকে ক্ষমা করেছিলেন। কুরাইশ নেতা আবু সুফিয়ানকেও ক্ষমা করেছিলেন। এই আবু সুফিয়ান উহুদ যুদ্ধে কাফেরদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এতে মহানবি (স.)-এর দাঁত শহিদ হয়েছিল। তাঁর প্রিয় চাচা হযরত হামযা (রা.) শহিদ হয়েছিলেন। আবু সুফিয়ানের স্ত্রী হিন্দা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে তাঁর কলিজা চর্বণ করেছিল। তিনি তাকেও ক্ষমা করেছিলেন। ক্ষমার এ এক অপূর্ব দৃষ্টান্ত।

প্রশ্ন ৯। বিদায় হজে মহানবি (স.) যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা সংক্ষেপে লেখ।

উত্তর: বিদায় হজের ভাষণে মহানবি (স.) সমবেত লোকদের উদ্দেশে অনেক মূল্যবান কথা বলেছেন। যেমন-
১. সকল মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই।
২. আজকের এদিন, এ স্থান, এ মাস যেমন পবিত্র, তেমনি তোমাদের পরস্পরের জানমাল ও ইজ্জত-আবরু পরস্পরের নিকট পবিত্র।
৩. অধীনস্থদের সাথে ভালো ব্যবহার করবে। তোমরা যা খাবে, তাদেরও তা খাওয়াবে। তোমরা যা পরবে তাদেরও তাই পরাবে।
৪. একের অপরাধে অন্যকে শাস্তি দিবে না।
৫. ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সর্বপ্রকার সুদ হারাম করা হলো। সকল সুদের পাওনা বাতিল করা হলো।
৬. নারীর ওপর পুরুষের যেমন অধিকার আছে, পুরুষের ওপর নারীরও তেমন অধিকার আছে।
৭. জাহিলি যুগের সকল কুসংস্কার ও হত্যার প্রতিশোধ বাতিল করা হলো।
৮. আমানতের খিয়ানত করবে না, গুনাহর কাজ থেকে বিরত থাকবে। মনে রাখবে একদিন সকলকেই আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে হবে এবং তাঁর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
৯. আমি তোমাদের কাছে আল্লাহর বাণী এবং তাঁর রাসুলের আদর্শ রেখে যাচ্ছি, তোমরা এ দুটো যতদিন আঁকড়ে থাকবে, ততদিন তোমরা বিপথগামী হবে না।
– মহানবি (স.) এ ভাষণের মাধ্যমে বিভিন্ন তাৎপর্যপূর্ণ উপদেশ বাণী রেখে যান। ইসলামের ইতিহাসে বিদায় হজের ভাষণের গুরুত্ব অপরিসীম।

প্রশ্ন ১০। কুরআন মজিদে উল্লিখিত ১০ জন নবির নাম লেখ।

উত্তর: আল্লাহ তায়ালা মানুষের হিদায়েতের জন্য যুগে যুগে নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন। তাঁরা ছিলেন মানুষের মহান ও আদর্শ শিক্ষক। নবি-রাসুলগণ ছিলেন উত্তম চরিত্রের অধিকারী। তাঁরা ছিলেন সত্যবাদী, নির্লোভ ও নিষ্পাপ, দয়ালু ও মানব দরদি। নিচে কুরআন মজিদে উল্লিখিত ১০ জন নবির নাম উল্লেখ করা হলো-
১. হযরত আদম (আ.),
২. হযরত নূহ (আ.),
৩. হযরত ইবরাহিম (আ.),
৪. হযরত ইয়াকুব (আ.),
৫. হযরত ইউসুফ (আ.),
৬. হযরত দাউদ (আ.),
৭. হযরত সুলাইমান (আ.),
৮. হযরত আইয়ুব (আ.),
৯. হযরত ঈসা (আ.) এবং
১০. হযরত মুহাম্মদ (স.)।

প্রশ্ন ১১। আল্লাহ ফেরেশতাদের কী আদেশ দিলেন?

উত্তর: আল্লাহ ফেরেশতাদের আদেশ দিলেন, “আদম তোমাদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। তোমরা তাঁকে সম্মান জানাও। তাঁর সম্মানে তাঁকে সিজদা কর। সবাই তাঁকে সম্মান দেখাল। তাঁকে সিজদা করল। তবে এই ফেরেশতাদের সাথে ছিল এক জিন। নাম তার আযাযীল। সে আদমকে সিজদা করল না। সে বলল, “আমি আগুনের তৈরি। আদম মাটির তৈরি। আমি আদম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। আমি তাঁকে সম্মান করব না। সিজদা করব না। সে আদমকে সিজদা করল না।”

প্রশ্ন ১২। হযরত নূহ (আ.) মানুষকে কী কী বললেন?

উত্তর: হযরত নূহ (আ.) মানুষকে বললেন, “তোমরা আল্লাহর প্রতি ইমান আন। এক আল্লাহর ইবাদত কর। মূর্তিপূজা ত্যাগ কর। ভালো কাজ কর। মন্দকাজ থেকে বিরত থাক। আখিরাতের জীবনের ওপর বিশ্বাস রাখ।” তাঁর এ দাওয়াতে মাত্র আশি জন নারী-পুরুষ সায় দিল। ইমান আনল। বাকি লোকজন তাঁর কথার গুরুত্ব দিল না। তাঁকে পাগল বলে উপহাস করল। কষ্ট দিতে. লাগল। তারা কাফেরই থেকে গেল।

প্রশ্ন ১৩। হযরত ইবরাহীম (আ.) অগ্নিকুণ্ডে কীভাবে অক্ষত থাকেন?

উত্তর: হযরত ইবরাহিম (আ.)-এর আমলে সেখানকার বাদশাহ ছিল নমরুদ। নমরূদ ছিল নির্মম অত্যাচারী বাদশা। হযরত ইবরাহিম (আ.) নমরুদসহ সবাইকে এক আল্লাহতে বিশ্বাস করতে বলল এবং তাঁর ইবাদত করতে আহ্বান করল। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে নমরূদ হযরত ইবরাহিম (আ.)-কে মেরে ফেলার জন্য বিশাল অগ্নিকুণ্ড তৈরি করল। আর সেই জ্বলন্ত আগুনে তাঁকে ফেলে দেওয়া হলো। কিন্তু আল্লাহর আদেশে আগুন ঠাণ্ডা হয়ে গেল।
আল্লাহ বললেন, يُنَارُ كُوْنِي بَرْدًا وَسَلَمًا عَلَى إِبْرَاهِيمَ. অর্থ : “হে আগুন! ইবরাহীমের জন্য তুমি ঠাণ্ডা হয়ে যাও। আরামদায়ক হয়ে যাও।” এভাবে ইবরাহিম (আ.) অগ্নিকুণ্ডে অক্ষত থাকেন। হযরত ইবরাহিম (আ.) অগ্নিদগ্ধ হওয়া থেকে রেহাই পেলেন।

প্রশ্ন ১৪। হযরত দাউদ (আ.)-এর ন্যায়পরায়ণতা ও সুশাসন সম্পর্কে লেখ।

উত্তর: হযরত দাউদ (আ.) ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ। তাঁকে সুশাসক বলার কারণ হলো-
১. তাঁর বিচার ব্যবস্থা ছিল নিখুঁত ও নিরপেক্ষ।
২. তিনি ছিলেন সুশাসক ও সুবিচারক।
৩. জনগণের অবস্থা স্বচক্ষে দেখার জন্য ছদ্মবেশে রাস্তায় অলি গলিতে ঘুরে বেড়াতেন।
৪. তিনি রাজকোষ থেকে অর্থসম্পদ গ্রহণ করতেন না।
৫. তিনি আল্লাহর কুদরতে স্বহস্তে ইস্পাতের সেরা বা বর্ম বানিয়ে তা বাজারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতেন এবং তা দিয়ে নিজের সংসার চালাতেন।

প্রশ্ন ১৫। হযরত ঈসা (আ.) সেখানকার লোকদের কী কী উপদেশ দিলেন?

উত্তর: হযরত ঈসা (আ.) ছিলেন আসমানি কিতাবপ্রাপ্ত একজন নবি ও রাসুল। সে সময়ে সেখানকার লোকেরা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা দেবদেবীর পূজা করত। হযরত ঈসা (আ.) তাদেরকে এক আল্লাহর ইবাদতের প্রতি আহ্বান জানালেন। শিরক থেকে বিরত থাকতে বললেন। সকল দুর্নীতি ও খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে বললেন। সেখানকার লোকজন হযরত ঈসা (আ.)-এর কথা মানল না। তারা আল্লাহর ইবাদত করল না। তারা তাঁর ঘোর শত্রুতে পরিণত হলো। তারা তাঁকে হত্যা করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করল। আল্লাহ তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিলেন।

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন:

Read More: পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

Codehorse App

Check Also

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর: মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ২০ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *