বাংলাদেশের প্রকৃতি প্রশ্ন ও উত্তর: ঋতু বৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ। পৃথিবীর আর কোথাও বাংলাদেশের মতো ঋতু বৈচিত্র্য নেই। অনেক দেশে দুটি ঋতু, কি তিনটি ঋতু দেখা যায়। খুব বেশি হলে বড়জোর চারটি ঋতু। আর বাংলাদেশে আছে ছয়টি ঋতু। প্রত্যেক ঋতুর রূপ ও বৈশিষ্ট্য আলাদা।
চতুর্থ শ্রেণি-বাংলাদেশের প্রকৃতি প্রশ্ন ও উত্তর
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি, অর্থ বলি এবং শব্দ দিয়ে বাক্য তৈরি করি।
ইলশেগুঁড়ি, মুষলধারে, পেঁজা তুলো, ষড়ঋতু, বর্ষাকাল, অসহ্য, গ্রীষ্ম, তাপ, পাড়, বিচিত্র, নবান্ন।
উত্তর:
ইলশেগুঁড়ি-হালকা ঝিরঝিরে বৃষ্টি। এ ধরনের বৃষ্টিতে নদীতে জাল ফেলে জেলেরা ইলিশ মাছ অনেক বেশি পায়। এ কারণেই এমন বৃষ্টির নাম ইলশেগুঁড়ি।- ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি হলে নদীতে বেশি ইলিশ ধরা পড়ে।
মুষলধারে -খুব বড় ফোঁটায় পড়া বৃষ্টি।- আজ সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে।
পেঁজা তুলো-তুলা ধুনে বা টেনে আঁশ বের করা।-আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ দেখা যায়।
ষড়ঋতু – ছয়টি ঋতু।- বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ।
বর্ষাকাল -বৃষ্টির সময়।- বর্ষাকালে কদম ফুল ফোটে।
অসহ্য -যা সহ্য করা বা সওয়া যায় না।-গ্রীষ্মকালে অসহ্য গরম লাগে।
গ্রীষ্ম -গরমকাল, বাংলাদেশের ছয়টি ঋতুর প্রথম ঋতু।– বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস গ্রীষ্মকাল।
তাপ -উষ্ণতা।– গ্রীষ্মের সূর্য প্রচণ্ড তাপ দেয়।
পাড় -কিনারা।- বর্ষাকালে নদীর পাড় ভাঙে।
বিচিত্র -নানা বর্ণবিশিষ্ট, বিস্ময়কর।- পৃথিবীতে বিচিত্র জীবজন্তু রয়েছে।
নবান্ন -নতুন ধান কাটার পরে অগ্রহায়ণ মাসে অনুষ্ঠিত একটি উৎসব।– কৃষকের ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব।
উত্তর: আমাদের দেশে আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস নিয়ে বর্ষাকাল। এ সময় আকাশ ঘন কালো মেঘে ঢাকা থাকে। বৃষ্টি পড়ছে তো পড়ছেই। নদীতে এ সময় ঢল নামে। এ ঋতুতে কদম, কেয়াসহ নানা ফুল ফুটে প্রকৃতিকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলে। অন্যদিকে পৌষ-মাঘ এই দুই মাস শীতকাল। শীতকালে উত্তর দিক থেকে আসা হাওয়া খুব ঠান্ডা। গ্রামে খেজুরের রস পাওয়া যায়। ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস তৈরির ধুম পড়ে। রাতের বেলায় লেপ-কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমাতে হয়। দিনের বেলায়ও গরম কাপড় পরতে হয়।
(ঙ)কোন ঋতু তোমার বেশি পছন্দ? পছন্দের কারণ কী? লিখে জানাও।
উত্তর: ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। বছরে ছয়টি ঋতু। কোনটির চেয়ে কোন ঋতুই খারাপ নয়। তবে প্রত্যেকটির রয়েছে আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য। এর মধ্যে বসন্ত আমার প্রিয় ঋতু।
পছন্দের কারণ: বসন্তকালে দখিনা হাওয়া বয়। অতি শীত বা গরম কোনোটাই থাকে না। এ ঋতুতে গাছপালা নতুন পাতা, ফুলে ও ফলে নতুন করে সাজে। চারদিকে নানা রকম পাখির সমারোহ। ফুলে ফুলে প্রজাপতি আর মৌমাছি ঘুরে বেড়ায়। চলতে ফিরতে গিয়ে যেমন আনন্দ লাগে তেমনি আনন্দ লাগে মনে ও প্রাণে। এ ঋতুকে ঋতুরাজ বলা হয়। এসব কারণেই বসন্ত আমার প্রিয় ঋতু।
চতুর্থ শ্রেণি-বাংলাদেশের প্রকৃতি প্রশ্ন ও উত্তর
উত্তর:
(ক) আমাদের দেশ ষড়ঋতুর দেশ।
(খ) গ্রীষ্মকে বলা হয় মধুমাস।
(গ) বর্ষায় ফোটে কদম, কেয়া ও আরও নানা ফুল।
(ঘ) হেমন্ত সোনালি ধানের ঋতু।
(ঙ) শীতকালে উত্তুরে হাওয়া বয়।
উত্তর:
যাওয়া – আসা
খেজুরের – রস
বসন্তকাল – ফুরফুরে বাতাস
পিঠা – পুলি
গ্রীষ্ম -প্রচন্ড গরম
বৈশিষ্ট্য ➙ ঋতুর নাম
আকাশ তখন কালো ঘন মেঘে ছেয়ে যায়। ➙ বর্ষাকাল
নদীর পাড় সাদা কাশফুলে ভরে যায়। ➙ শরৎকাল
রৌদ্রের অসহ্য তাপ অনুভূত হয়। ➙ গ্রীষ্মকাল
এই ঋতুতে খেজুরের রস দিয়ে তৈরি হয় নানা পিঠাপুলি। ➙ শীতকাল
এ সময়ে কৃষকের ঘর সোনালি ফসলে ভরে ওঠে। ➙ হেমন্তকাল
গাছে গাছে জেগে ওঠে নতুন সবুজ পাতা। ➙ বসন্তকাল
৬. নিচের বাক্যটি পড়ি এবং বিশেষ্য ও বিশেষণ পদ সম্পর্কে জেনে নিই।
কোকিলের ডাক মিষ্টি।
ব্যক্তি, বস্তু, সময় বা স্থানের নাম হলেই তা বিশেষ্য। উপরের বাক্যটিতে কোকিল হলো বিষেশ্য পদ। কিন্তু কোকিলের ডাক কেমন? মিষ্টি। এটি বিশেষণ পদ। যে শব্দ বিশেষ্য পদের কোনো গুণ বা চরিত্র প্রকাশ করে, সেটিই বিশেষণ। এখানে বিশেষণ পদ হচ্ছে মিষ্টি।
এবার নিচের বাক্যগুলো পড়ি। বিশেষ্য পদগুলোকে গোল (○) চিহ্ন দিয়ে ও বিশেষণ পদগুলোর নিচে দাগ চিহ্ন দিয়ে চিহ্নিত করি।
ক. তখন হাড় কাঁপানো শীত।
খ. আকাশ হয়ে ওঠে ঘন নীল।
গ. ফুরফুরে সুন্দর বাতাস বয়।
ঘ. গ্রীষ্মে মিষ্টি ফল পাওয়া যায়।
উত্তর: বিশেষ্য পদগুলোকে Bold ও বিশেষণ পদগুলোর নিচে দাগ চিহ্ন দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ক. তখন হাড় কাঁপানো শীত।
খ. আকাশ হয়ে ওঠে ঘন নীল।
গ. ফুরফুরে সুন্দর বাতাস বয়।
ঘ. গ্রীষ্মে মিষ্টি ফল পাওয়া যায়।
চতুর্থ শ্রেণি-বাংলাদেশের প্রকৃতি প্রশ্ন ও উত্তর
৭. কর্ম-অনুশীলন।
আমার দেখা চারপাশের প্রকৃতি সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ লিখি।
উত্তর: আমার দেখা চারপাশের প্রকৃতি : অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। দেশটির চারদিকে সবুজের সমারোহ। আমার চারপাশের প্রকৃতিতে রয়েছে বিচিত্র রং আর শোভা। প্রকৃতির রং সবুজ হলেও ফসল পাকার সময় সবুজের মাঝে সোনালি আভা জেগে ওঠে। গ্রীষ্মে অসহ্য রৌদ্রের তাপ। তারপর বর্ষায় প্রকৃতি অনেকটা বদলে যায়। বর্ষাকালে হালকা মেঘের রং হয় খুব ঘন কালো। শরতে সেই মেঘগুলো দল বেঁধে কোথায় যেন উড়ে যায়। লাল-সবুজ, ধূসর-সোনালি, নীল-কালো এবং আরো অনেক রং মিলে আমাদের জন্মভূমি বাংলা সত্যিই অপরূপ হয়ে ওঠে। হেমন্ত ভারি লাজুক ঋতু। শীতে চারদিকে ছড়িয়ে থাকে ঘন কুয়াশার চাঁদর। বসন্তে প্রকৃতিজুড়ে বসে ফুলের মেলা।
অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
উত্তর: বর্ষাকালে অবিরল ধারায় সারাদিন বৃষ্টি হয়। ফলে বৃষ্টির পানিতে নদী কানায় কানায় ভরে ওঠে। কখনো নদীর পানি উপচে ফসলের মাঠকে প্লাবিত করে। তাই নদী আর ফসলের মাঠ পানিতে একাকার হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: পালকির গান প্রশ্ন ও উত্তর
Codehorse Learn Free