পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
৫ম শ্রেণি: ইবাদত

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর: ইবাদত শব্দের অর্থ আনুগত্য, দাসত্ব, বন্দেগি ইত্যাদি। আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য স্বীকার করে তাঁর যাবতীয় আদেশ, নিষেধ মেনে চলাকে বলে ইবাদত। আল্লাহ আমাদের ‘ইলাহ’। ইলাহ মানে মাবুদ। আর আমরা তাঁর আবদ। আবদ মানে অনুগত বান্দা। আমাদের কর্তব্য হলো আল্লাহ তায়ালা যেসব কাজ করলে খুশি হন, যা যা করতে বলেছেন তা করা, আর যা যা করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা। আল্লাহ তায়ালার আদেশ-নিষেধ মেনে চলাই ইবাদত।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের লালন-পালন করেন। তিনিই আমাদের রব। আমাদের জীবন-মৃত্যুর মালিকও তিনিই। তিনি এই মহাবিশ্বকে আমাদের জন্য কতো সুন্দর করে সাজিয়েছেন। আসমান-জমিন, চন্দ্র-সূর্য, ফল-ফসল, গাছ-পালা, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত সবকিছুই আমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তিনি সবকিছুকে আমাদের অনুগত করে দিয়েছেন। আর তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁরই ইবাদতের জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- ‘আর আমি জিন ও মানবজাতিকে কেবল আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি’। (সূরা যারিয়াত, আয়াত: ৫৬)

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর:

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন:

ক. বহু নির্বাচনি প্রশ্ন
সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন () দাও
১. ইবাদত শব্দের অর্থ কী?
ক. প্রার্থনা
খ. আনুগত্য
গ. দান করা
ঘ. সিয়াম সাধনা।

২. ইসলাম কয়টি রুকন-এর ওপর প্রতিষ্ঠিত?
ক. তিনটি
খ. চারটি
গ. পাঁচটি
ঘ. সাতটি।

৩. সালাতের নিষিদ্ধ সময় কয়টি?
ক. তিনটি
খ. চারটি
গ. পাঁচটি
ঘ. সাতটি।

৪. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে কত রাকআত ফরজ?
ক. পাঁচ রাকআত
খ. দশ রাকআত
গ. পনের রাকআত
ঘ. সতের রাকআত।

৫. সালাতের আরকান কয়টি?
ক. পাঁচটি
খ. সাতটি
গ. তেরটি
ঘ. পনেরটি।

৬. কাবা শরিফ কোথায় অবস্থিত?
ক. মক্কায়
খ. মদিনায়
গ. জেরুজালেমে
ঘ. ফিলিস্তিনে।

৭. দীন ইসলামের সেতু কী?
ক. সালাত
খ. সাওম
গ. হজ
ঘ. যাকাত।

৮. হজের ফরজ কয়টি
ক. তিনটি
খ. চারটি
গ. পাঁচটি
ঘ. সাতটি।

৯. আল্লাহর কাছে কুরবানির কী পৌঁছায়?
ক. গোশত
খ. রক্ত
গ. তাকওয়া
ঘ. চামড়া।

১০. সকল রাসুলের প্রতি বিশ্বাস করা মুসলিমদের কী?
ক. ইচ্ছাধীন
খ. ইমানের অঙ্গ
গ. সৌজন্য
ঘ. সুন্দর আচরণ।

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর:

খ. শূন্যস্থান পূরণ কর
১. ___ইমানের অঙ্গ।
২. সালাত দীন ইসলামের___।
৩. সালাত___চাবি।
8. ___মানে সংক্ষিপ্তকরণ।
৫. সালাতের ভেতরের ফরজগুলোকে___বলে।
৬. ঢাকা শহরকে বলা হয়___শহর।
৭. সাওমের মূল উদ্দেশ্য হলো___অর্জন করা।
৮. ___অর্থ যাকাত ব্যয়ের খাতসমূহ।
৯. জীবনে___হজ করা ফরজ।
১০. পরস্পর সাক্ষাৎ হলে বলব___।

উত্তর: ১. পবিত্রতা; ২. খুঁটি; ৩. বেহেস্তের; ৪. কসর; ৫. আরকান; ৬. মসজিদের; ৭. তাকওয়া; ৮. মাসারিফ; ৯. একবার; ১০. আসসালামু আলাইকুম।

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর:

গ. বাম দিকের শব্দের সঙ্গে ডান দিকের শব্দের অর্থ মিলাও

বাম ডান
ইবাদত ক্ষমা প্রার্থনা করা
সালাত ভ্রমণকারী
মুসাফির বিরত থাকা
সাওম অনুগত্য
যাকাত নির্ধারিত পরিমাণ
নিসাব সংকল্প করা
হজ পবিত্রতা ও বৃদ্ধি
কুরবানি ভেটে ফেলা
আকিকা উৎসর্গ

উত্তর:
১. ইবাদত → আনুগত্য।
২. সালাত → ক্ষমা প্রার্থনা করা।
৩. মুসাফির → ভ্রমণকারী।
৪. সাওম → বিরত থাকা।
৫. যাকাত → পবিত্রতা ও বৃদ্ধি।
৬. নিসাব → নির্ধারিত পরিমাণ।
৭. হজ → সংকল্প করা।
৮. কুরবানি → উৎসর্গ।
৯. আকিকা → ভেঙে ফেলা।

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর:

ঘ. সংক্ষিপ্ত উত্তর-প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। ইবাদত কাকে বলে?
উত্তর: দৈনন্দিন জীবনের সকল কাজকর্মে আল্লাহ তায়ালার বিধিবিধান মেনে চলাকে ইবাদত বলা হয়।

প্রশ্ন ২। আল্লাহ আমাদের কেন সৃষ্টি করেছেন?
উত্তর: আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর ইবাদত করার জন্য সৃষ্টি করেছেন।

প্রশ্ন ৩। ইসলামের রুকন কয়টি ও কী কী?
উত্তর: ইসলামের রুকন পাঁচটি। যথা- ১. ইমান আনয়ন করা, ২. সালাত কায়েম করা, ৩. যাকাত প্রদান করা, ৪. হজ পালন করা ও ৫. রমজানের সাওম পালন করা।

প্রশ্ন ৪। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নাম লেখ।
উত্তর: পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নাম হলো- ১. ফজর, ২. জোহর, ৩. আসর, ৪. মাগরিব ও ৫. এশা।

প্রশ্ন ৫। সালাতের নিষিদ্ধ সময়গুলো কী কী?
উত্তর: সালাতের নিষিদ্ধ সময় ৩টি। তা হলো- ১. ঠিক সূর্যোদয়ের সময়, ২. ঠিক দ্বিপ্রহরের সময় ও ৩. সূর্যাস্তের সময়।

প্রশ্ন ৬। মুসাফির কাকে বলে?
উত্তর: কোনো ব্যক্তি তিন দিনের রাস্তা বা কমপক্ষে ৪৮ মাইল দূরে গমনের নিয়ত করে বাড়ি থেকে বের হলে তাকে মুসাফির বলে।

প্রশ্ন ৭। আহকাম কাকে বলে?
উত্তর: সালাত শুরু করার আগে প্রস্তুতিমূলক যে ফরজ কাজগুলো আছে, সেগুলোকে সালাতের আহকাম বা শর্ত বলে।

প্রশ্ন ৮। আরকান কাকে বলে?
উত্তর: সালাতের ভিতরে যে ফরজ কাজগুলো আছে সেগুলোকে সালাতের আরকান বলে।

প্রশ্ন ৯। সাওম কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সুবহ সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকাকে সাওম বলে।

প্রশ্ন ১০। সাওমের মাসকে ফজিলতের দিক দিয়ে কয় ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে?
উত্তর: সাওমের মাসকে ফজিলতের দিক দিয়ে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে।

প্রশ্ন ১১। যাকাত কাকে বলে?
উত্তর: মুসলমানদের নিসাব পরিমাণ ধনসম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ বছরপূর্তিতে আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত খাতসমূহে ব্যয় করাকে যাকাত বলে।

প্রশ্ন ১২। হজ কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ অবস্থায়, নির্দিষ্ট স্থানে, নির্ধারিত নিয়মে, নির্দিষ্ট কতকগুলো অনুষ্ঠান পালন করাকে হজ বলে।

প্রশ্ন ১৩। হজের ফরজ কয়টি এবং কী কী?
উত্তর: হজের ফরজ তিনটি। যথা- ১. ইহরাম বাঁধা, ২. আরাফাতে অবস্থান এবং ৩. তাওয়াফে জিয়ারত।

প্রশ্ন ১৪। কুরবানি কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ত্যাগের মনোভাব • নিয়ে ১০ জিলহজ হতে ১২ জিলহজ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গৃহপালিত হালাল পশু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করাকে কুরবানি বলে।

প্রশ্ন ১৫। আকিকা কাকে বলে?
উত্তর: সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে সন্তানের কল্যাণ ও হিফাজতের কামনায় আল্লাহর ওয়াস্তে কুরবানির মতো কোনো গৃহপালিত হালাল পশু জবাই করাকে আকিকা বলে।

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর:

ঙ. বর্ণনামূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। ইবাদতের তাৎপর্য বর্ণনা কর।
উত্তর: আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁরই ইবাদতের জন্য। ইবাদত শুধু সালাত, সাওম ইত্যাদির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য রাসুল (স.)-এর দেখানো পথে যেকোনো ভালো কাজই ইবাদতের মধ্যে শামিল। রাসুল (স.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি কোনো ভালো কাজের পরামর্শ দেয়, সে ব্যক্তিও কাজটি সম্পাদনকারীর সমান পুরস্কার পাবে।” (মুসলিম) ইবাদতে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন। আল্লাহ তায়ালা বিপদাপদ হতে রক্ষা করেন। তাঁর বিশেষ রহমত পাওয়া যায়। এতে দুনিয়ার জীবন সুখের হয়। পরকালে পরম শান্তিময় স্থান জান্নাত লাভ করা যায়। আর ইবাদত না করলে দুনিয়ার জীবন অশান্তির হয় এবং পরকালে জাহান্নামে যেতে হয়।

প্রশ্ন ২। সালাতের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর: ইমানের পরেই সালাতের স্থান। সালাত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সালাত মানুষকে সুন্দর মানুষে পরিণত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীলতা ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।” (সূরা আনকাবুত : ৪৫) রাসুল (স.) বলেছেন, “সালাত দীন ইসলামের খুঁটি।” (বায়হাকী) জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে হলে এবং জান্নাত লাভ করতে হলে নিয়মিত সালাত আদায় করতে হবে। মহানবি (স.) বলেছেন, “সালাত জান্নাতের চাবি।” সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করতে পারে এবং এর মাধ্যমে পরস্পরের সম্প্রীতি, একতা ও ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ৩। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময় বর্ণনা কর।
উত্তর: সময় মতো সালাত আদায় করা আল্লাহর হুকুম। নিচে – সালাতের ওয়াক্তের বিবরণ দেওয়া হলো-
১. ফজর: ফজর সালাতের সময় শুরু হয় সুবহি সাদিক হওয়ার সাথে সাথে এবং সূর্য উদয়ের পূর্ব পর্যন্ত এর সময় থাকে।
২. জোহর: দুপুরের সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়লেই
জোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়। ছায়া আসলি বাদে কোনো বস্তুর ছায়া দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত এর সময় থাকে। কোনো বস্তুর ঠিক দুপুরের সময় যে ক্ষুদ্র ছায়া থাকে তাকেই বলে ছায়া আসলি বা আসল ছায়া। জুমুআর সালাতের আলাদা কোনো ওয়াক্ত নেই। জোহরের সময়ই জুমুআর সালাত আদায় করতে হয়।
৩. আসর: জোহরের সময় শেষ হলেই আসরের সময় শুরু হয় এবং সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে। তবে সূর্যের রং হলুদ হওয়ার আগেই আসর নামায আদায় করতে হয়।
৪. মাগরিব: সূর্যাস্তের পর থেকে মাগরিবের সময় শুরু হয় এবং পশ্চিম আকাশে যতক্ষণ লালিমা বিদ্যমান থাকে ততক্ষণ সময় থাকে।
৫. এশা: মাগরিবের সময় শেষ হলেই এশার সালাতের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং সুবহি সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে। তবে রাত দুপুরের আগেই আদায় করা উত্তম। এশার সালাত আদায়ের পরে বিতর সালাত আদায় করতে হয়।

প্রশ্ন ৪। সালাতের ফজিলত ও শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর: সালাতের ফজিলত: আল্লাহ নামাজী ব্যক্তিকে ৫টি পুরস্কার প্রদান করবেন। নামাজী ব্যক্তিকে যে পাঁচটি পুরস্কার দেওয়া হবে তা হলো-
ক. নামাজী ব্যক্তির জীবিকার অভাব দূর করবেন।
খ. কবরের আজাব থেকে তাকে মুক্তি দিবেন।
গ. হাশরের দিনে আমলনামা তার ডান হাতে দিবেন।
ঘ. পুলসিরাত বিজলির মতো দ্রুত পার করে দিবেন।
ঙ. বিনা হিসাবে তাকে জান্নাত দান করবেন।
সালাতের শিক্ষা: সালাত হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য
সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। সালাতের শিক্ষা হলো-
১. সালাতের মাধ্যমে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়।
২. সালাতের মাধ্যমে অভাব দূর হয়।
৩. সালাতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করা যায়।
৪. সালাত মানুষকে আনুগত্য শিক্ষা দেয়।

প্রশ্ন ৫। দুই রাকাত ফরজ সালাত আদায়ের নিয়ম লেখ।
উত্তর: প্রথমে পাকসাফ কাপড় পরার পর ওজু করে কোনো পবিত্র স্থানে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াতে হবে। তারপর নিয়ত করে দুহাত কান পর্যন্ত তুলে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত নামিয়ে নাভির উপর হাত বাঁধতে হবে (মেয়েদের বুকের উপর হাত বাঁধতে হবে)। এরপর সানা পড়তে হবে। তারপর “আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” বলে সূরা ফাতিহা পড়ার পর ‘আমীন’ বলতে হবে। এরপর অন্য কোনো সূরা পাঠ করে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে রুকু করতে হবে। রুকুতে কমপক্ষে তিন বার “সুবহানা রাব্বিয়াল আজীম” বলতে হবে। এরপর “সামিআল্লাহ্ লিমান হামিদাহ” বলে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। দাঁড়ানো অবস্থায় “রাব্বানা লাকাল হামদ” বলে সিজদায় যেতে হবে। সিজদায় কমপক্ষে তিনবার “সুবহানা রাব্বিয়াল আলা” বলতে হবে। তারপর আল্লাহু আকবার বলে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। এভাবে প্রথম রাকাত শেষ হলো। দ্বিতীয় রাকাতের শুরুতে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম” বলে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে। এরপর অন্য কোনো সূরা পড়ে প্রথম রাকাতের ন্যায় রুকু ও সিজদা করে স্থির হয়ে বসতে হবে। বসা অবস্থায় তাশাহহুদ পাঠ করতে হবে। তারপর দরুদ এবং দোয়া মাসুরা পড়ে ডানে-বামে মুখ ফিরিয়ে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করতে হবে।

প্রশ্ন ৬। সালাতের আহকামগুলো লেখ।
উত্তর: যে ফরজ কাজগুলো নামাজ শুরু করার আগেই করতে হয়, সেগুলোকে সালাতের আহকাম বলে। সালাতের আহকাম মোট সাতটি। যথা-
১. শরীর পাক হওয়া। প্রয়োজন মতো ওযু গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে শরীর পাক পবিত্র করা।
২. কাপড় পাক হওয়া, অর্থাৎ পরিধানের কাপড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া।
৩. জায়গা পাক হওয়া (সালাত পড়ার স্থান পাক হওয়া)।
৪. সতর ঢাকা (পুরুষের নাভীর উপর থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা এবং মহিলাদের মুখমণ্ডল, হাতের কবজি এবং পায়ের পাতা ছাড়া সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা)।
৫. কিবলামুখী হওয়া (কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করা)।
৬. ওয়াক্ত হওয়া (সালাতের নির্ধারিত সময় হওয়া)।
৭. নিয়ত করা (যে ওয়াক্তের সালাত আদায় করবে মনে মনে তার নিয়ত করা)।

প্রশ্ন ৭। সালাতের আরকান বলতে কী বোঝ? আরকানগুলো কী কী?
উত্তর: যে ফরজ কাজগুলো সালাতের মধ্যে আদায় করতে হয়, সেগুলোকে সালাতের আরকান বলে।
সালাতের ৭টি আরকান রয়েছে। নিচে ৭টি আরকান উল্লেখ করা হলো-
১. তাকবিরে তাহরীমা বা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নামাজ শুরু করা।
২. কেয়াম বা দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। নারী-পুরুষ উভয়কে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতে হবে। তবে অসুস্থ হলে বসে এবং বসতে অক্ষম হলে শুয়ে ইশারায় সালাত আদায় করতে হবে।
৩. কুরআন শরিফের কিছু অংশ পাঠ করা।
৪. রুকু করা।
৫. সিজদা করা।
৬. শেষ বৈঠক করা।
৭. সালামের মাধ্যমে সালাত শেষ করা।

প্রশ্ন ৮। সালাতের ওয়াজিবগুলো কী কী?
উত্তর: সালাতের মধ্যে কতকগুলো ওয়াজিব কাজ আছে। এর যেকোনো একটিও ইচ্ছা করে বাদ দিলে সালাত আদায় হয় না।
সালাতের ওয়াজিব ১৪টি। যথা-
১. প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়া।
২. ফাতিহার সাথে অন্য সূরা বা কুরআনের কিছু অংশ পড়া।
৩. সালাতের ফরজ ও ওয়াজিবগুলো ‘আদায় করার সময় ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।
৪. রুকু করার পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো।
৫. দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।
৬. তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট সালাতে দ্বিতীয় রাকাতের পর তাশাহহুদ পড়ার জন্য বসা।
৭. সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া।
৮. মাগরিব, এশার ফরজের প্রথম দুই রাকাতে এবং ফজর ও জুমুআর ফরজ সালাতে এবং দুই ঈদের সালাতে ইমামের সরবে কুরআন পাঠ করা এবং অন্যান্য সালাতে নীরবে পাঠ করা।
৯. বিতর সালাতে দোয়া কুনূত পড়া।
১০. দুই ঈদের সালাতে অতিরিক্ত ছয় তাকবির বলা।
১১. রুকু ও সিজদায় কমপক্ষে এক তসবিহ পরিমাণ অবস্থান।
১২. সালাতে সিজদার আয়াত পাঠ করলে তিলাওয়াত সিজদাহ করা। কুরআন মজিদে এমন বিশেষ ১৪টি আয়াত আছে যা পাঠ করলে বা শুনলে সিজদা করতে হবে।
১৩. আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ বলে সালাত শেষ করা।
১৪. ভুলে কোনো ওয়াজিব কাজ বাদ পড়লে সাহু সিজদা দেওয়া।

প্রশ্ন ৯। মসজিদের আদবগুলো কী কী?
উত্তর: মসজিদ দুনিয়ার সবচেয়ে পবিত্র ও সম্মানিত স্থান। মজিদের পবিত্রতা রক্ষার্থে কতকগুলো আদব মেনে চলতে হয়।
তন্মধ্যে ৫টি আদব নিচে দেওয়া হলো-
১. পাক-পবিত্র শরীর ও পোশাক নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে হয়।
২. পবিত্র মন ও বিনয়-বিনম্রতার সাথে মসজিদে প্রবেশ করা।
৩. মসজিদে প্রবেশের সময় এ দোয়া পড়া- আল্লাহুম্মাফ তাহলী আবওয়াবা রাহমাতিকা।
৪. মসজিদে প্রবেশের সময় হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কি না করা। মসজিদে কোনো খালি জায়গা দেখে বসা।
৫. লোকজনকে ডিঙ্গিয়ে সামনের দিকে না যাওয়া।

প্রশ্ন ১০। সাওমের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সংক্ষেপে লেখ।
অথবা, সাওমের গুরুত্ব পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: ইসলামের প্রধান পাঁচটি রুকনের মধ্যে সাওম একটি। সাওম ধনী-দরিদ্র সকল মুসলমানের ওপর ফরজ ইবাদত। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হলো।” (সূরা বাকারা-১৮৩) যেহেতু সাওমকে ফরজ করা হয়েছে, সুতরাং যে তা অস্বীকার করবে সে কাফির হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি বিনা ওজরে পালন করবে না সে গুনাহগার হবে।

প্রশ্ন ১১। যাকাতের তাৎপর্য ও শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর: যাকাতের তাৎপর্য: ইসলামের পাঁচটি রুকুনের মধ্যে সালাতের
পরেই যাকাতের স্থান। কুরআন মজিদের বহু স্থানে আল্লাহ তায়ালা সালাতের সাথে যাকাতের কথাই উল্লেখ করে বলেছেন, “তোমরা সালাত কায়েম কর এবং যাকাত দাও।” (সূরা মুযযাম্মিল: ২০) আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আর তাদের (ধনীদের) সম্পদে অবশ্যই দরিদ্র ও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে।” (সূরা আয-যারিয়াত: ১৯) যাকাত দিলে দাতার অন্তর কৃপণতার কলুষতা থেকে পবিত্র হয়। তার আমলনামা গুনাহ থেকে পবিত্র হয়।
যাকাতের শিক্ষা: যাকাত প্রদান করলে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সুফল পাওয়া যায়। যাকাতের শিক্ষা হলো-
১. যাকাত দিলে সম্পদ পবিত্র হয়। যাকাত প্রদানকারীর সম্পদ বৃদ্ধি পায়।
২. যাকাত প্রদানের মাধ্যম ধনী ও গরিব শ্রেণির মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সৃষ্টি হয়।
৩. যাকাত প্রদানের মাধ্যমে ধনী-গরিব বৈষম্য দূর হয়। ফলে সমাজে শান্তি ও সমৃদ্ধি অর্জিত হয়।
৪. যাকাত দানের মাধ্যমে মুসলমানদের মধ্যে থেকে কৃপণতা ও সম্পদের প্রতি লালসা দূর হয়।
৫. যাকাত দানের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব হয়।

প্রশ্ন ১২। যাকাতের মাসারিফ কয়টি ও কী কী বর্ণনা কর।
উত্তর: ‘মাসারিফ’ অর্থ ব্যয়ের খাতসমূহ। যাদেরকে যাকাত দেওয়া যায় তাদেরকে বলে মাসারিফুস যাকাত বা যাকাতের মাসারিফ। পবিত্র কুরআনে আট শ্রেণির লোককে যাকাতের মাসারিফ বলা হয়েছে। তারা হলেন- ১. ফকির বা অভাবগ্রস্ত।
২. মিসকিন বা সম্বলহীন ।
৩. যাকাতের জন্য নিয়োজিত কর্মচারীবৃন্দ ।
৪. ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে এমন ব্যক্তি ।
৫. দাসমুক্তি ।
৬. ঋণগ্রস্ত ।
৭. আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী ।
৮. অসহায় প্রবাসী পথিক।

প্রশ্ন ১৩। হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখ।
উত্তর: ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি হলো হজ। হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক, বুদ্ধিমান ও সামর্থ্যবান মুসলিম নরনারীর ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ।
হজ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “আল্লাহর উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহ শরিফের হজ পালন করা মানুষের ওপর অবশ্য কর্তব্য, যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে।” (সূরা আলে ইমরান: ৯৭)
হজ হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন। বিশ্ব মুসলিম যে এক, অখণ্ড উম্মত, হজ তার জ্বলন্ত প্রমাণ। গায়ের রং, মুখের ভাষা, আর জীবন পদ্ধতিতে যত পার্থক্যই থাকুক না কেন, এ সম্মেলনে তারা একাকার হয়ে যায়, তাদের সকল পার্থক্য দূর হয়ে যায়। ইসলামের ঐক্য, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও প্রাণচাঞ্চল্য বজায় রাখার ব্যাপারে হজের তাৎপর্য অপরিসীম। রাসুল (স.) বলেছেন, “পানি যেমন ময়লা ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়, হজও তেমনি গুনাহগুলোকে ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়।” (বুখারি)।
রাসুল (স.) আরও বলেছেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশ্যে হজ করল, তারপর কোনো অশ্লীল কাজ করল না, পাপ কাজ করল না, সে নবজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরল”। (বুখারি ও মুসলিম)

প্রশ্ন ১৪। হজের ফরজগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তর: হজের ফরজ তিনটি। নিচে এগুলো বর্ণনা করা হলো-
১. ইহরাম বাঁধা হজের প্রথম ফরজ হলো ইহরাম বাঁধা। বিশ্ববাসীর জন্য ৭টি স্থানকে ইহরাম বাঁধার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। হাজিগণ উক্ত স্থান হতে অথবা এর পূর্বে যে কোনো স্থান থেকে হজের ইহরাম বাঁধতে পারেন।
২. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান: হজের দ্বিতীয় ফরজ হলো ৯ জিলহজ তারিখে আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা।
৩. তওয়াফে জিয়ারত: হজের তৃতীয় ফরজ হলো তওয়াফে জিয়ারত করা। কুরবানির দিনগুলোতে অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে কাবাঘরের তওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করাকে তওয়াফে জিয়ারত বলে। এ তিন দিনের যেকোনো দিন এ তওয়াফ করা যায়।
হজ পালনের সময় উপরিউক্ত তিনটি কাজ করা ফরজ। এ তিনটি কাজ অতি যত্নের সাথে আদায় করতে হয়। কোনো একটি বাদ পড়লে হজ আদায় হয় না।

প্রশ্ন ১৫। মুখ, দাঁত, হাত ও পা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর: পরিচ্ছন্নতা বা পবিত্রতা ইমানের অঙ্গ। নিচে মুখ, দাঁত, হাত ও পা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব বর্ণনা করা হলো-
১. মুখ: মুখ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মুখ পরিষ্কার না থাকলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। মানুষ তাকে ঘৃণা করে।
২. দাঁত: আমরা দাঁত দিয়ে চিবিয়ে খাবার খাই। এতে দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা লেগে থাকে। দাঁতের নানা রকম রোগ হয়। দাঁত পরিষ্কার রাখার জন্য ওযু করার আগে এজন্য মিসওয়াক করতে হয়।
৩. হাত: আমরা হাত দিয়ে নানা রকম কাজ করি। এতে হাত
ময়লা হয়, নোংরা হয়। হাতের নখ বড় হলে বড় নখে অনেক ময়লা আটকে থাকে। নোংরা হাতে খাবার খেলে খাবারের সাথে ময়লা পেটে চলে যায়। এতে নানা রকম পেটের অসুখ হয়। খাওয়ার আগে ও পরে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। পায়খানা পেশাব থেকে ফিরে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
৪. পা: রাস্তাঘাটে চলাফেরা করার সময় আমাদের পায়ে ধুলাময়লা লাগে। পা নোংরা হয়ে যায়। কাজের শেষে পা ধুয়েমুছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়।
সুতরাং আমরা আমাদের মুখ, দাঁত, হাত, পা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখব।

প্রশ্ন ১৬। কুরবানি প্রচলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বর্ণনা কর।
উত্তর: এক রাতে ইবরাহিম (আ.) স্বপ্নে দেখলেন আল্লাহ তাঁকে আদেশ করছেন প্রিয় পুত্র ইসমাইলকে কুরবানি করতে। একই স্বপ্ন দেখলেন বারবার। তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পুত্রকে কুরবানি করতে স্থির করলেন। তিনি প্রাণপ্রিয় পুত্রকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কুরবানি করতে তাঁর গলায় ছুরি চালালেন। পুত্র ইসমাইলও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ধারাল ছুরির নিচে মাথা পেতে দিলেন। এবারের কঠিন পরীক্ষায়ও পিতা-পুত্র উত্তীর্ণ হলেন। আল্লাহ তায়ালা কুরবানি কবুল করলেন এবং ইসমাইলকে রক্ষা করলেন। তাঁর পরিবর্তে একটি দুম্বা কুরবানি হয়ে গেল। আল্লাহ তায়ালার প্রতি হযরত ইবরাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর অপরিসীম আনুগত্য ও অপূর্ব ত্যাগের ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য এবং মুসলিমদের ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত করার জন্য তখন থেকে কুরবানির প্রচলন রয়েছে। এটি চিরকালের জন্য মানবসমাজে একটি পবিত্র ধর্মানুষ্ঠানরূপে প্রতিষ্ঠিত।

প্রশ্ন ১৭। ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর: ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার গুরুত্ব-
১. সালাতে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে সেই সালাতের মূল্য নেই।
২. যাকাত দিতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে। আর্থিক কর্তব্য পালনের উদ্দেশ্য বা দানশীলতা প্রদর্শনের উদ্দেশ্য থাকলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।
৩. মিথ্যা কথা, অসৎকাজ ও অসৎচিন্তা ত্যাগ না করলে আল্লাহর কাছে সাওম কবুল হয় না।
৪. হজ পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে হজে সুফল পাওয়া যায় না।
৫. ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে কোনো সুফল পাওয়া যায় না।

প্রশ্ন ১৮। সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদার, সহিষ্ণু ও শ্রদ্ধাশীল হওয়ার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর: ইসলাম সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদার, সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ মূলগতভাবে একই পিতামাতা আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-এর সন্তান। তাই ইসলাম মানবতার ঐক্যে বিশ্বাস করে, বিভেদ পছন্দ করে না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “মানুষ ছিল একই উম্মতের ‘অন্তর্ভুক্ত।” (সূরা বাকারাহ : ২১৩) হযরত মুহাম্মদ (স.) মদিনার সনদে মাধ্যমে সাম্যের মহান নীতি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, জানমালের নিরাপত্তা, সকল ধর্মের স্বাধীনতা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ঘোষণা দেন। এভাবে পরধর্মে উদার সহিষ্ণু ও শ্রদ্ধাশীল হতে ইসলাম শিক্ষা দেয়। ফলে ইসলামি সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

Read More: পঞ্চম শ্রেণী ইসলাম শিক্ষা প্রথম অধ্যায়

Read More: পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায়

Codehorse App

Check Also

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন: প্রায় চার হাজার বছর আগের কথা। ইরাক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *