চতুর্থ শ্রেণীর কোরআন মজিদ শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর

চতুর্থ শ্রেণীর কোরআন মজিদ শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর: কুরআন মজিদ আল্লাহর কালাম। এটি সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ আসমানি কিতাব। কুরআন তিলাওয়াত সর্বশ্রেষ্ঠ নফল ইবাদত। আমরা প্রতিদিন অন্তত একবার কুরআন তিলাওয়াত করব। কুরআন মজিদ তিলাওয়াত শেখার জন্য প্রথমে ২৯টি আরবি বর্ণ শিখে নেব এবং এগুলোর মধ্যে কতটিতে নুকতা আছে ও কতটিতে নুকতা নেই তা জেনে নেব।

চতুর্থ শ্রেণীর কোরআন মজিদ শিক্ষা প্রশ্ন উত্তর:

খ. শূন্যস্থান পূরণ কর:
(১) কুরআন মজিদ__কালাম।
(২) হরফ উচ্চারণের স্থানকে__বলে।
(৩) কুরআন মজিদের __আরবি।
উত্তর: (১) আল্লাহর, (২) মাখরাজ, (৩) ভাষা।

গ. বাম দিকের শব্দের সাথে ডান দিকের চিহ্নের মিল কর :
উত্তর:

সংক্ষেপে উত্তর দাও:
প্রশ্ন ১। আরবি হরফ কয়টি?
উত্তর: আরবি হরফ মোট ২৯টি।

প্রশ্ন ২। হরকত কয়টি?
উত্তর: হরকত তিনটি।

প্রশ্ন ৩। মাদ্দের হরফ কয়টি?
উত্তর: মাদ্দের হরফ তিনটি।

প্রশ্ন ৪। হরফে হালকি কয়টি?
উত্তর: হরফে হালকি ৬টি।

প্রশ্ন ৫। সাকিন কাকে বলে?
উত্তর: জযম (^) যুক্ত হরফকে সাকিন বলে।

বর্ণনামূলক প্রশ্ন:

১. কুরআন মজিদ তিলাওয়াত সম্পর্কে মহানবি (স)-এর বাণীটি লেখ।
উত্তর: কুরআন মজিদ আল্লাহর বাণী। সালাতে কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা ফরজ। তাই তিলাওয়াত শুদ্ধ হওয়া দরকার। কুরআন মজিদ তিলাওয়াত সম্পর্কে মহানবি (স) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সে উত্তম যে নিজে কুরআন শিখে এবং অপরকে শেখায়।”

২. হরকত কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: এক যবর, এক যের ও-এক পেশকে হরকত বলে। আরবি ভাষায় যবর, যের এবং পেশ এর
উদাহরণ:
اَ – আলিফ যবর আ
اِ – আলিফ যের ই
اُ -আলিফ পেশ উ

৩. তানবীন কাকে বলে? একটি করে উদাহরণ দাও।
উত্তর: দুই যবর, দুই যের ও দুই পেশকে তানবীন বলা হয়।
উদাহরণ:
اً = আলিফ দুই যবর আন।
اٍ = আলিফ দুই যের ইন।
اٌ = আলিফ দুই পেশ উন।

৪. মাদ্দ কাকে বলে? মাদ্দ-এর হরফ কয়টি? উদাহরণ দাও।
উত্তর: মাদ শব্দের অর্থ দীর্ঘ করা বা টেনে পড়া। কুরআন মজীদের কোনো কোনো হরফ টেনে পড়তে হয়। এ টেনে পড়াকে মাদ বলে। মাদ-এর হরফ তিনটি: ا, و, ي (আলিফ, ওয়াও, ইয়া)।

৫. তাজবীদ কাকে বলে?
উত্তর: কুরআন মজিদ শুদ্ধভাবে তিলাওয়াতের জন্য যে নিয়ম রয়েছে তাকে তাজবীদ বলে। অর্থাৎ কুরআন মজিদের আয়াতসমূহ এবং আয়াতের শব্দ ও বর্ণের সঠিক উচ্চারণ করার পদ্ধতিই হলো তাজবীদ।

৬. মাখরাজ কাকে বলে? মাখরাজ কয়টি?
উত্তর: আরবি হরফসমূহ মুখের বিভিন্ন স্থান থেকে উচ্চারিত হয়। আরবি হরফ উচ্চারণের স্থানকে মাখরাজ বলে। যেমন-কণ্ঠনালী, জিহ্বা, তালু, দাঁত ও ঠোঁট। আরবি হরফের মাখরাজ ১৭টি।

৭. ইদগাম কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: ইদগাম, অর্থ যুক্ত করা, একত্র করা। কাছাকাছি উচ্চারণের দুটি হরফকে যুক্ত করে পড়াকে ইদগাম বলে।
যেমন: فَهُم مُسْلِمُونَ
উচ্চারণ: ফাহুম মুসলিমূন।

৮. সূরা ইখলাস মুখস্থ বলো।
উত্তর:বাংলা উচ্চারণ:
i) কুল হুওয়াল্লা হু আহাদ
ii) আল্লা হুসসামাদ
iii) লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইউলাদ
iv) ওয়ালাম ইয়াকুল্লাহু কুফুওয়ান আহাদ

পরীক্ষা উপযোগী অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর:

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন ১। কুরআন সর্বশেষ আসমানি কিতাব। এটি কার ওপর নাজিল করা হয়েছে?
উত্তর: কুরআন মজিদ সর্বশেষ নবি ও রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর ওপর নাজিল করা হয়েছে।
প্রশ্ন ২। আসমানি কিতাব সর্বমোট ১০৪টি। এর মধ্যে সর্বশেষ কিতাব কোনটি?
উত্তর: সর্বশেষ আসমানি কিতাব হলো- কুরআন মজিদ।
প্রশ্ন ৩। আরবি বর্ণমালা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: আরবিতে ا থেকে ي মোট ২৯টি বর্ণ বা অক্ষর আছে। এর সমষ্টিকে আরবি বর্ণমালা বলা হয়।
প্রশ্ন ৪। আনোয়ার প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করে। সে কার কালাম তিলাওয়াত করে?
উত্তর: আনোয়ার আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করে।
প্রশ্ন ৫। মাকসুদা কুরআন তিলাওয়াত করে তৃপ্তি পায়। কুরআন তিলাওয়াত করলে কে খুশি হয়?
উত্তর: কুরআন তিলাওয়াত করলে আল্লাহ তায়ালা খুশি হন।
প্রশ্ন ৬। তাজবীদ কাকে বলে?
উত্তর: কুরআন মজিদ শুদ্ধভাবে তিলাওয়াতের জন্য যে নিয়ম রয়েছে তাকে তাজবীদ বলে।
প্রশ্ন ৭। আরবি হরফের মাখরাজ কয়টি?
উত্তর: আরবি হরফের মাখরাজ ১৭টি।
প্রশ্ন ৮। ইদগাম কাকে বলে?
উত্তর : কাছাকাছি উচ্চারণের দুটি হরফকে যুক্ত করে পড়াকে ইদগাম বলে।
প্রশ্ন ৯। ইযহার আরবি শব্দ। এর অর্থ কী?
উত্তর: ইযহার শব্দের অর্থ প্রকাশ করা, স্পষ্ট করা।
প্রশ্ন ১০। ইযহার করার জন্য নুন সাকিন বা তানবিনের পর হরফে হালকি থাকা আবশ্যক। এ হরফ মোট কয়টি ও কী কী?
উত্তর: হরফে হালকী মোট ৬টি, এরা হলো:(ء هـ ع ح غ خ)
প্রশ্ন ১১। নূরজাহান সহিহভাবে তিলাওয়াত করতে চায়। তাকে এজন্য কী করতে হবে?
উত্তর: সহিহভাবে তিলাওয়াত করতে হলে নূরজাহানকে তাজবীদসহ তিলাওয়াত করতে হবে।

কাঠামোবদ্ধ (যোগ্যতাভিত্তিক) প্রশ্ন:

প্রশ্ন ১। কুরআন মজিদ তিলাওয়াত তোমার জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ? ছয়টি বাক্য লেখ।
উত্তর: কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা এজন্য গুরুত্বপূর্ণ যে-
১. কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা সর্বশ্রেষ্ঠ নফল ইবাদত
২. সালাতে কুরআন তিলাওয়াত ফরজ।
৩. মহানবি (স) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কুরআন শিখে এবং অপরকে শেখায়।”
৪. তিনি আরও বলেছেন, “কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করলে প্রত্যেক হরফের জন্য ১০টি সাওয়াব পাওয়া যায়।”
৫. কুরআনে সকল কিছুর বর্ণনা রয়েছে।
৬. দুনিয়াতে শান্তিতে বসবাস করা যাবে।

প্রশ্ন ২। জযমের অপর নাম কী? জযমযুক্ত পাঁচটি শব্দের উদাহরণ দাও।
উত্তর: জযমের অন্য নাম হলো সাকিন।
জযমযুক্ত পাঁচটি শব্দের উদাহরণ:
1. يَقْرَأْ → ইয়াক্‌রা‌’
2. نَخْلُقْ → নাখ্‌লুক্‌
3. يَجْلِسْ → ইয়াজ্‌লিস্‌
4. تَكْتُبْ → তাক্‌তুব্‌
5. يَفْهَمْ → ইয়াফ্‌হাম্‌

প্রশ্ন ৩। তাশদীদ কাকে বলে? তাশদীদের ৪টি উদাহরণ দাও।
উত্তর: আরবি ভাষার কোনো হরফকে পাশাপাশি এক সঙ্গে দুই বার উচ্চারণ করতে হলে, ঐ হরফের উপর হরকতসহ একটি বিশেষ চিহ্ন ( ّ ) বসে। এই ( ّ ) বিশেষ চিহ্নকে তাশদীদ বলা হয়।
তাশদীদযুক্ত ৪টি উদাহরণ:
1. اللّٰهُ → আল্লাহু
2. الرَّحْمٰنُ → আর্‌রহ্‌মানু
3. النَّاسِ → আন্‌নাসি
4. الصَّلَاةُ → আস্‌সালাতু

প্রশ্ন ৪। কার ওপর পবিত্র কুরআন নাজিল হয়? তাজবীদ পড়ার প্রয়োজনীয়তা পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: হযরত মুহাম্মদ (স)-এর ওপর পবিত্র কুরআন নাজিল হয়।
তাজবীদ পাঠের চারটি উপকারিতা-
১. কুরআন মজিদ তাজবীদসহকারে না পড়লে আল্লাহর কালামের আয়াতসমূহ, আয়াতের শব্দ ও বর্ণ উচ্চারণসমূহ ঠিক হয় না।
২. কুরআনের শব্দের অর্থ ঠিক থাকে না।
৩. এমনকি সালাতও শুদ্ধ হয় না।
৪. তাজবীদ ব্যতীত তিলাওয়াত করলে গুনাহ হবে।
৫. শুদ্ধরূপে কুরআন তিলাওয়াতের জন্য তাজবীদ পড়া আবশ্যক।

প্রশ্ন ৫। আরবি হরফ উচ্চারণের স্থানকে কী বলে? মুখের কয়টি স্থান হতে আরবি হরফ উচ্চারিত হয়? আল-কুরআন তিলাওয়াত সম্পর্কে তিনটি হাদিস লেখ।
উত্তর: আরবি হরফ উচ্চারণের স্থানকে মাখরাজ বলে। মুখের ৫টি স্থান হতে আরবি হরফ উচ্চারিত হয়।
কুরআন তিলাওয়াত সম্পর্কে তিনটি হাদিস হলো-
১. “তোমাদের মধ্যে সে উত্তম যে নিজে কুরআন শিখে এবং অপরকে শেখায়।”
২. “কুরআন তিলাওয়াতে প্রতিটি হরফে ১০টি নেকি পাওয়া যায়।”
৩. “কুরআন তিলাওয়াত হলো উত্তম ইবাদত।”
৪. “অন্তরের মরিচা দূর করা যন্ত্র হলো কুরআন তিলাওয়াত।”

প্রশ্ন ৬। ইযহার অর্থ কী? কুরআন তিলাওয়াত শিখতে গিয়ে তুমি ইযহার সম্পর্কে যা জেনেছ, তা সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর: ইযহার শব্দের অর্থ “প্রকাশ করা” বা “স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করা”।
ইযহার সম্পর্কে ৫টি বাক্য:
1. ইযহার তখন ঘটে যখন নুন সাকিন বা তানবিন এর পর হরফে হালকী গুলোর কোনো একটি আসে।
2. ইযহারের সময় নুন সাকিন বা তানবিনকে কোনো গুন্নাহ (নাকের মাধ্যমে ধ্বনি) ছাড়া স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করতে হয়।
3. হরফে হালকী ৬টি: (ء هـ ع ح غ خ) — এগুলো এলে ইযহার হয়।
4. ইযহারের একটি সাধারণ উদাহরণ হলো: مِنْ هَادٍ → এখানে “نْ” কে স্পষ্টভাবে পড়তে হবে।
5. কুরআন তিলাওয়াত শুদ্ধভাবে করতে হলে ইযহারের নিয়ম ভালোভাবে জানতে ও প্রয়োগ করতে হয়।

প্রশ্ন ৭। কোন সূরায় আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে? সে সূরাটি কোথায় নাজিল করা হয়েছিল? সূরাটির বাংলা অর্থ লেখ।
উত্তর: সূরা আন নাসর-এ আল্লাহর সাহায্য ও বিজয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সূরাটি মদিনায় নাজিল করা হয়।
সূরাটির অর্থ- যখন আল্লাহর সাহায্য ও বিজয় আসবে এবং তুমি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবে। তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসা কর, তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর, তিনি তো তওবা কবুলকারী।

প্রশ্ন ৮। তোমার পাঠ্যপুস্তকের সর্বশেষ সূরা কোনটি? এর আয়াত সংখ্যা কত? সূরাটির বাংলা অর্থ লেখ।
উত্তর: আমার পাঠ্যপুস্তকের সর্বশেষ সূরা হলো- সূরা আল-ইখলাস।
এ সূরার আয়াত ৪টি। সূরা আল-ইখলাসের অর্থ- ১. বল, তিনি আল্লাহ, একক। ২. আল্লাহ কারও মুখাপেক্ষী নন। ৩. তাঁর – কোনো সন্তান নেই এবং তিনি কারও সন্তান নন। ৪. ‘এবং তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।

প্রশ্ন ৯। সূরা আন নাসর বাংলায় লেখ।
উত্তর: সূরা আন নাসর: ইযা জাআ নাসরুল্লাহি ওয়ালফাতহু। ওয়ারাআইতান নাসা ইয়াদখুলুনা ফী দীনিল্লাহি আফওয়াজা। ফাসাব্বিহ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াসতাগফিরহু। ইন্নাহু কানা তাওওয়াবা।

আরও পড়ুন: চতুর্থ শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা ৩য় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

আরও পড়ুন: চতুর্থ শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর