পঞ্চম শ্রেণীর ঘাসফুল কবিতার প্রশ্নোত্তর: পৃথিবীতে সবকিছুই সৃষ্টি হয়েছে প্রকৃতির নিয়মে। প্রকৃতির এসব উপাদান নষ্ট বা ধ্বংস করার অধিকার কারও নেই। ঘাসফুল প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি, তাই এদের তুলে ফেলা, ছিড়ে ফেলা বা পায়ে পিষে মারা উচিত নয়। ফুলকে ছেঁড়া মানে তাকে মেরে ফেলা। ফুলের সৌন্দর্য গাছে থাকলেই বাড়ে, ছিঁড়ে ফেললে নয়। তাছাড়া ফুল গাছে গাছে ফুটে হাওয়ায় দুলতে থাকে, হেসে ওঠে সূর্যের কিরণে। পৃথিবীর বুকে স্নেহ-মায়া ঘাস হয়ে ফোটে। সেই ঘাসেরই হাসি হয়ে ফোটে ঘাসফুল। ঘাসফুলগুলো রূপকথার নীল আকাশের বাঁশি শুনে শান্ত হাওয়ায় দুলতে থাকে যখন আকাশে তারা ফোটে। তাই গাছের ফুল ছেঁড়া বা নষ্ট করা কারও উচিত নয়।
পঞ্চম শ্রেণীর ঘাসফুল কবিতার প্রশ্নোত্তর:
ঘাসফুল
জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র
আমরা ঘাসের ছোট ছোট ফুল
হাওয়াতে দোলাই মাথা,
তুলো না মোদের দলো না পায়ে
ছিঁড় না নরম পাতা।
শুধু দেখ আর খুশি হও মনে
সূর্যের সাথে হাসির কিরণে
কেমন আমরা হেসে উঠি আর
দুলে দুলে নাড়ি মাথা।
ধরার বুকে স্নেহ-কণাগুলি
ঘাস হয়ে ফুটে ওঠে।
মোরা তারই লাল নীল সাদা হাসি
রূপকথা নীল আকাশের বাঁশি-
শুনি আর দুলি বাতাসে
যখন তারারা ফোটে।
১. কবিতার মূলভাব জেনে নিই।
ঘাসফুল যে কী আনন্দে বেঁচে আছে, জীবনকে উপভোগ করছে, সে কথাই এখানে তারা নিজেরা বলছে। ফুল ছিঁড়ে, পায়ের নিচে পিষে ফেলে মানুষ যেন তাদের কষ্ট না দেয়-সেই মিনতি তারা করছে। গাছে ফুল ফুটলে তা দেখে আনন্দ পাওয়া চাই। ফুল ছেঁড়ার অর্থ ফুলকে মেরে ফেলা। গাছের যেমন প্রাণ আছে, ফুলেরও তেমনই প্রাণ আছে।
২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
দোলাই, কিরণ, ধরা, তারারা, ফোটে, স্নেহ-কণা, রূপকথা।
উত্তর:
দোলাই – নাড়াই।
কিরণ – আলো।
ধরা – পৃথিবী।
তারারা – আকাশের তারকারাজি।
ফোটে – প্রস্ফুটিত হয়, ফুটে ওঠে।
স্নেহ-কণা – ভালোবাসা, আদর।
রূপকথা – কাল্পনিক কাহিনি।
৩. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
দোলায়, কিরণ, ধরার, তারারা, স্নেহ-কণা, রূপকথার, ফোটে;
ক. ছোট ছোট ফুল হাওয়াতে ___ মাথা।
খ. সকালে সূর্যের___ ততটা তীব্র হয় না।
গ. ___ বুকের স্নেহ-কণাগুলি ঘাস হয়ে ফুটে ওঠে।
ঘ. আঁধার আকাশে ___ মিটিমিটি করে চায়।
ঙ. ফুল গাছে ফুল ___।
চ. ___ বই পড়তে অনেক ভালো লাগে।
ছ. মা ___ দিয়ে আমাদের ভরে রাখেন।
উত্তর:
ক. ছোট ছোট ফুল হাওয়াতে দোলায় মাথা।
খ. সকালে সূর্যের কিরণ ততটা তীব্র হয় না।
গ. ধরার বুকের স্নেহ-কণাগুলি ঘাস হয়ে ফুট্র ওঠে।
ঘ. আঁধার আকাশে তারারা মিটিমিটি করে চায়।
ঙ. ফুল গাছে ফুল ফোটে।
চ. রূপকথার বই পড়তে অনেক ভালো লাগে।
ছ. মা স্নেহ-কণা দিয়ে আমাদের ভরে রাখেন।
৪. প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখে বলি ও লিখি।
প্রশ্ন ক. হাওয়াতে কারা মাথা দোলাচ্ছে?
উত্তর: হাওয়াতে ঘাসফুল মাথা দোলাচ্ছে।
প্রশ্ন খ. ঘাসফুল আমাদের কাছে কী মিনতি করছে? কেন করছে?
উত্তর: ফুল ছিঁড়ে, পায়ের নিচে পিষে আমরা যেন ঘাসফুলকে কষ্ট না দিই ঘাসফুল সেই মিনতি করছে। ঘাসফুল ঘাসের ছোট ছোট ফুল। ঘাসের বুকে প্রকৃতির মাঝে পরম আনন্দে তারা বেঁচে আছে। কিন্তু মানুষ ফুল ছিঁড়ে হাঁটার সময় পা দিয়ে তাদের পিষে। এতে তারা কষ্ট পায়। কারণ ফুলেরও জীবন আছে। তাই ঘাসফুল এই মিনতি করছে, তাদের যেন মেরে ফেলা না হয়।
প্রশ্ন গ. ঘাসফুল কার সাথে নিজেকে তুলনা করেছে? কীভাবে তুলনা করেছে?
উত্তর: ঘাসফুল পৃথিবীর বুকের স্নেহ-ভালোবাসার সঙ্গে নিজেকে তুলনা করেছে। ঘাসফুলের মতে পৃথিবীর বুকের স্নেহ-কণাগুলো ঘাস হয়ে ফুটে ওঠে। আর ঘাসফুল সেই স্নেহ-কণার লাল, নীল, সাদা হাসি। রূপকথা আর নীল আকাশের বাঁশি শুনে নিজেদের আনন্দে ভরিয়ে তোলে। মূলত ঘাসফুল নিজ সৌন্দর্য আর বিশেষত্ব তুলে ধরতে পৃথিবীর বুকের স্নেহ-কণার সাথে নিজেকে তুলনা করেছে।
প্রশ্ন ঘ. ফুল মানুষকে কীভাবে আনন্দ দেয়?
উত্তর: ফুল সৃষ্টিকর্তার অনন্য সৃষ্টি। ফুল সৌন্দর্য, ভালোবাসা আর পবিত্রতার প্রতীক। ফুল প্রকৃতির সৌন্দর্য বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। নল বর্ণের নানা গন্ধের ফুল মানুষকে মুগ্ধ করে। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করে, সুবাস নিয়ে মানুষ আনন্দ পায়। এভাবেই ফুল মানুষকে আনন্দ দেয়।
৫. কবিতাটি আবৃত্তি করি ও না দেখে লিখি।
উত্তর: কবিতাটি নিজে নিজে আবৃত্তি কর ও লেখ।
৬. কর্ম-অনুশীলন।
ক. আমার প্রিয় ফুল সম্পর্কে একটি রচনা লিখি।
ফুলের নাম:
ফুলের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা:
ব্যবহার:
কেন প্রিয় ফুল:
উত্তর:
আমার প্রিয় ফুল
ফুলের নাম:
আমার প্রিয় ফুল হলো গোলাপ। গোলাপ তার সুন্দর রঙ ও মিষ্টি গন্ধের জন্য খুব জনপ্রিয়। এটি ভালোবাসা ও সৌন্দর্যের প্রতীক।
ফুলের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা:
গোলাপের প্রধান অংশগুলো হলো—
-
পাপড়ি: গোলাপের পাপড়িগুলো নরম, মসৃণ ও সুগন্ধযুক্ত।
-
ডাঁটা: এর ডাঁটা সবুজ ও কাঁটাযুক্ত।
-
পাতা: গোলাপের পাতা গাঢ় সবুজ এবং কিছুটা খসখসে।
-
গোড়া: এটি গাছের শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং জল ও পুষ্টি গ্রহণ করে।
ব্যবহার:
গোলাপের বিভিন্ন ব্যবহার রয়েছে—
-
এটি সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তাই বাগানে লাগানো হয়।
-
ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে এটি উপহার দেওয়া হয়।
-
গোলাপের পাপড়ি দিয়ে সুগন্ধি ও প্রসাধনী তৈরি করা হয়।
-
এটি দিয়ে ফুলের মালা ও বিভিন্ন সাজসজ্জার কাজ করা হয়।
কেন প্রিয় ফুল:
গোলাপ আমার প্রিয় ফুল কারণ এটি দেখতে খুব সুন্দর এবং সুগন্ধি। এর বিভিন্ন রঙ যেমন লাল, হলুদ, সাদা ও গোলাপি আমাকে খুব আনন্দ দেয়। তাছাড়া, গোলাপ ভালোবাসার প্রতীক হওয়ায় এটি আমার কাছে বিশেষ প্রিয়।