এই দেশ এই মানুষ পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর
পঞ্চম শ্রেণি: এই দেশ এই মানুষ

এই দেশ এই মানুষ পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর

এই দেশ এই মানুষ পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর: বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরেছি বলে আমরা সৌভাগ্যবান। বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের আরও অনেক দেশেই বাঙালি রয়েছে; যেমন-ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা প্রভৃতি রাজ্যে। বাঙালি ছাড়াও আমাদের দেশের পার্বত্য জেলাসমূহ, রাজশাহী, জামালপুর প্রভৃতি জেলায় নানা ধরনের মানুষ বাস করে। তারা নিজ নিজ ভাষায় কথা বলে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বাঙালি হলেও বাংলাদেশে চাকমা, গারো, সাঁওতাল, রাজবংশী, ত্রিপুরা, মুরং, তঞ্চঙ্গা ইত্যাদি ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষ আছে। তাদের ভাষা এবং দৈনন্দিন জীবনযাপন, আনন্দ-উৎসব সবই নিজেদের। এ কারণে একই দেশ হওয়া সত্ত্বেও কত বৈচিত্র্য! এটাই আমাদের গৌরব। আমরা নানান জাতের মানুষ এভাবে মিলেমিশে যে বন্ধুর মতো বসবাস করছি, এতেই আমাদের আনন্দ। তাছাড়া আমাদের দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে।

এই দেশ এই মানুষ পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর:

১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
সৌভাগ্য, প্রকৃতি, বৈচিত্র্য, বেলাভূমি, প্রান্তর, স্বজন, সার্থক, সাংগ্রাই, বিজু
উত্তর:
সৌভাগ্য -ভালো ভাগ্য।
প্রকৃতি -স্বভাব, নিসর্গ।
বৈচিত্র্য -বিভিন্নতা।
বেলাভূমি -সমুদ্রতীরের বালুময় স্থান।
প্রান্তর-মাঠ, জনবসতি নেই এমন বিস্তীর্ণ স্থান।
স্বজন-নিজের লোক, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব।
সার্থক-সফল।
সাংগ্রাই-রাখাইনদের নববর্ষ উৎসব।
বিজু-চাকমাদের নববর্ষ উৎসব।

২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
প্রকৃতি, সৌভাগ্য, বৈচিত্র্য, বেলাভূমি, প্রান্তর, সার্থক
ক. আমাদের___যে আমরা এদেশে জন্মেছি।
খ. আমাদের দেশে রয়েছে সুন্দর___।
গ. কোথায় পাহাড়, কোথায় নদী, কোথায়-বা এর সমুদ্রের___।
ঘ. একই দেশ অথচ কত___।
ঙ. দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ,___পাহাড়, সমুদ্র- এইসব।
চ. দেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই___হয়ে উঠবে আমাদের জীবন।
উত্তর: ক. সৌভাগ্য; খ.প্রকৃতি; গ.বেলাভূমি; ঘ.বৈচিত্র্য; ঙ.প্রান্তর; চ.সার্থক;

৩. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক. বাংলাদেশে বাঙালি ছাড়া আর কারা বাস করে?
উত্তর: বাংলাদেশ একটি বৈচিত্র্যময় দেশ। এ-দেশের বেশিরভাগ মানুষ বাঙালি। তবে বাঙালি ছাড়া আরও নানা জাতিসত্তার মানুষ যেমন- চাকমা, মারমা, মুরং, তঞ্চঙ্গা প্রভৃতি জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে বসবাস করে। তাছাড়া রাজশাহী ও জামালপুরে সাঁওতাল ও রাজবংশীরা বসবাস করে। এসব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে।

খ. বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মের উৎসবগুলোর নাম কী?
উত্তর: বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করে। তাদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান অন্যতম। এসব ধর্মানুসারীর প্রত্যেকের আলাদা আলাদা উৎসব রয়েছে। মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসব: ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আযহা। হিন্দুদের দুর্গাপূজা, কালীপূজাসহ আছে নানা উৎসব ও পার্বণ। বৌদ্ধদের ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা। খ্রিষ্টানদের আছে ইস্টার সানডে আর বড়দিন। এসব ধর্মীয় উৎসব নিজ নিজ সম্প্রদায়ের মানুষেরা স্বাধীনভাবে এদেশে পালন করে।

গ. বাংলাদেশের জনজীবনের বৈচিত্র্যসমূহ কী কী?
উত্তর: বাংলাদেশে রয়েছে বৈচিত্র্যময় জনজীবন। সেসব বৈচিত্র্যের মধ্যে রয়েছে প্রকৃতির বৈচিত্র্য, ভাষার বৈচিত্র্য, সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্য, জাতিসত্তার বৈচিত্র্য, পেশার বৈচিত্র্য, উৎসবের বৈচিত্র্য, পোশাক-আশাকের বৈচিত্র্য। এসব বৈচিত্র্যের মধ্যে যেমন নিজ নিজ সম্প্রদায় ও জাতিগোষ্ঠীর স্বতন্ত্র পরিচয় প্রকাশ পায়, তেমনই প্রকাশ পায় এদেশের বৈচিত্র্যময় পরিচয়।

ঘ. “দেশ হলো মায়ের মতো।”- দেশকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কেন?
উত্তর: আমাদের দেশে রয়েছে নানান প্রাকৃতিক সম্পদ। নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র এসব সেই ‘সম্পদের এক-একটি উৎস। মা যেমন আমাদের জন্ম দেন এবং তাঁর স্নেহ-মমতা দিয়ে আগলে রাখেন তেমনই আমাদের মাতৃভূমি তার আলো-বাতাস-জল ও সম্পদ দিয়ে সবাইকে বাঁচিয়ে রেখেছে। মায়ের মতোই আমাদের জীবনে এদেশের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে ‘দেশ হলো মায়ের মতো’ এ কথা বলে দেশকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

ঙ. জেলেদের পেশা কী? তারা যদি কাজ না করে তাহলে আমাদের কী হতে পারে?
উত্তর: আমাদের দেশে রয়েছে নানা পেশার মানুষ। তাদের মধ্যে অন্যতম জেলে। জেলেদের পেশা মাছ ধরা। মাছ আমাদের খাবার তালিকার অন্যতম উপাদান। কেননা মাছ বাঙালির খুব প্রিয় খাবার। এ কারণে বলা হয় ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’। তাছাড়া মাছ থেকে আমরা পর্যাপ্ত আমিষ পেয়ে থাকি। জেলেরা যদি কাজ না করে অর্থাৎ মাছ না ধরে, তাহলে, আমরা প্রয়োজনীয় আমিষের অভাবে নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হব। এ কারণে আমাদের দৈনন্দিন খাবার চাহিদা মেটাতে জেলেদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চ. আমরা একে অপরের উৎসবে সহযোগিতা করি- এ কথার দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: আমাদের সুন্দর এই বাংলাদেশে প্রকৃতির মতো মানুষের মাঝেও রয়েছে নানান বৈচিত্র্য। এদেশে নানা ধর্মের মানুষ বসবাস করে। তাদের মধ্যে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান অন্যতম। প্রত্যেক ধর্মের মানুষের রয়েছে নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব।
এমন কিছু উৎসব রয়েছে, যেগুলো হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে উদ্যাপন করে। বাংলা নববর্ষে পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন তেমনই একটি উৎসব। তাছাড়া রাখাইনদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিজু উৎসবও নববর্ষ উপলক্ষে উদ্যাপন করা হয়। সবাই নিজ নিজ ধর্মীয় প্রথা নিজস্ব নিয়মেই পালন করেন। কিন্তু সর্বজনীন উৎসবগুলো সবাই মিলেমিশে উদ্যাপন করে। এ কারণেই বলা হয়, ধর্ম যার যার, উৎসব যেন সবার।

ছ. দেশকে কেন ভালোবাসতে হবে?
উত্তর: দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র-এসব। দেশ হলো জননীর মতো। মা যেমন আমাদের স্নেহ-মমতা-ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখেন, দেশও তেমনই তার সম্পদ দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। তাই দেশকে ভালোবাসতে হবে।

৪. নিচের অনুচ্ছেদ অবলম্বনে ৩টি প্রশ্ন তৈরি করি।
দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র- এইসব। দেশ হলো মায়ের মতো। মা যেমন আমাদের স্নেহমমতা, ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখেন, দেশও তেমনই আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। এ দেশকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। দেশকে ভালোবাসার মধ্য দিয়েই সার্থক হয়ে উঠবে আমাদের জীবন।
প্রশ্ন:
১. দেশ মানে কী?
২. দেশকে জননীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে কেন?
৩. আমাদের জীবন কীভাবে সার্থক হয়ে উঠবে?

৫. বিপরীত শব্দ জেনে নিই। খালি জায়গায় ঠিক শব্দ বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
[বাঙালি-অবাঙালি], [বন্ধু-শত্রু], [দেশ-বিদেশ], [সার্থকতা-ব্যর্থতা]

ক. আমাদের বাংলাদেশের বাইরেও অনেক___আছে।
খ. আমরা সবাই পরস্পরের___।
গ. ___হলো মায়ের মতো।
ঘ. আমাদের___যে আমরা এদেশে জন্মেছি।
উত্তর: ক. বাঙালি; খ. বন্ধু; গ. দেশ; ঘ. সার্থকতা;

৬. নিচের বাক্য কয়টি পড়ি।
মনির খুব ভালো ছেলে। রবিন তার বন্ধু। মনির ও রবিন একত্রে মাঠে খেলে।
এখানে,
মনির, রবিন – বিশেষ্য পদ
খুব ভালো-বিশেষণ পদ
তার-সর্বনাম পদ
ও-অব্যয় পদ
খেলে-ক্রিয়া পদ

এবার নিচের বাক্য কয়টি থেকে ৫ ধরনের পদ খুঁজে বের করি।
বাংলাদেশের জনজীবন ভারি বৈচিত্র্যময়। এই দেশকে তাই ঘুরে ঘুরে দেখা দরকার। এজন্য দরকার দেশের নানা প্রান্তে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের বাড়ি বেড়াতে যাওয়া। সবাইকে সবার ভালোবাসা উচিত।
উত্তর:
১. বিশেষ্য পদ-বাংলাদেশ, বন্ধু।
২. বিশেষণ পদ- ভারি, বৈচিত্র্যময়।
৩. সর্বনাম পদ- সবার, সবাই।
৪. অব্যয় পদ-ও
৫. ক্রিয়াপদ- দেখা, যাওয়া।

৭. কর্ম-অনুশীলন।
ক. বাংলাদেশের যেকোনো উৎসব সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করি।
উত্তর: 

পহেলা বৈশাখ

পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের অন্যতম বড় উৎসব। এটি বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন, যা ১৪ এপ্রিল (বাংলা ১লা বৈশাখ) পালিত হয়। এই দিনে মানুষ নতুন বছরকে আনন্দের সঙ্গে বরণ করে নেয়। সকালের শুরুতে সবাই পরিষ্কার পোশাক পরে, বিশেষ করে সাদা-লাল রঙের পোশাক পরার প্রচলন বেশি। ঢাকায় রমনার বটমূলে ছায়ানটের আয়োজন, মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং গ্রাম-শহরের হাটবাজারে মেলা বসে। পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ ও নানা রকম পিঠা এই উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ। সবাই একে অপরকে শুভেচ্ছা জানায় এবং নতুন বছরকে আনন্দের সঙ্গে স্বাগত জানায়। পহেলা বৈশাখ আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

খ. শিক্ষকের নির্দেশনায় নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে (মাসে একবার) টেলিভিশন/রেডিও/খবরের কাগজে প্রচারিত সংবাদ দেখে/শুনে/পড়ে নিচের ছক অনুযায়ী আলাদা কাগজে তা লিখে আনি। পরে শ্রেণিকক্ষে পড়ে শোনাই ও অন্যদের লেখা শুনি।
উত্তর:
নিজে করো ।

আরও পড়ুন: পঞ্চম শ্রেণীর বিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

আরও পড়ুন: সংকল্প পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর

Codehorse App

Check Also

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন: প্রায় চার হাজার বছর আগের কথা। ইরাক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *