সুন্দরবনের প্রাণী পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর: বাংলাদেশের দক্ষিণে সমুদ্রের কোল ঘেঁষে সুন্দরবনের অবস্থান। এটি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এখানে প্রচুর গাছপালা ও পশুপাখি আছে। বাংলাদেশের সাথে জড়িয়ে আছে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের নাম। এগুলো শুধু নামেই রয়েল, নয়, জীবনযাপন প্রণালিতেও রাজকীয়। সুন্দরী গাছের আধিক্যের জন্য এ বনের নাম হয়েছে সুন্দরবন। এছাড়া এ বনে রয়েছে কেওড়া, গেওয়া, গোলপাতা প্রভৃতি উদ্ভিদ। সুন্দরবনের আর এক আকর্ষণ এখানকার চিত্রা হরিণ। তবে কিছু প্রাণী সুন্দরবনে আগে দেখা গেলেও এখন আর দেখা যায় না; গণ্ডার, হাতি, বুনো শুয়োর এগুলো এখন আর নেই। আবার এক সময় বাংলাদেশে প্রচুর শকুন দেখা যেত। কিন্তু শকুনও প্রায় বিলুপ্ত। জীবজন্তু সব দেশেরই অমূল্য সম্পদ। এগুলো সবই প্রকৃতির দান। আর প্রকৃতিতে কোনোকিছুই অপ্রয়োজনীয় নয়। এসব পশুপাখি, গাছগাছালি টিকে থাকলেই প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।
সুন্দরবনের প্রাণী পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর:
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
কোল, অস্ট্রেলিয়া, রয়েল, ভয়ংকর, অমূল্য, বিলুপ্তপ্রায়।
উত্তর:
কোল-কাছাকাছি বা সংলগ্ন জায়গা।
অস্ট্রেলিয়া – একটি মহাদেশ ও দেশ।
রয়েল – রাজকীয় বা রাজসিক।
ভয়ংকর – ভীতিকর বা আতঙ্কজনক।
অমূল্য – যার কোনো মূল্য নির্ধারণ করা যায় না, অত্যন্ত মূল্যবান।
বিলুপ্তপ্রায় – যা প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছে বা হারিয়ে যাচ্ছে।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
অমূল্য, অপার, সম্ভার, রয়েল, ভয়ংকর, বিলুপ্তপ্রায়;
ক. প্রকৃতির অপার___সমুদ্রের নিচে রয়েছে।
খ. বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে___বেঙ্গল টাইগার।
গ. বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি আবার___।
ঘ. রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের___সম্পদ।
ঙ. শকুন বাংলাদেশে এখন___পাখি।
উত্তর:
ক. প্রকৃতির অপার সম্ভার সমুদ্রের নিচে রয়েছে।
খ. বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
গ. বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি আবার ভয়ংকর।
ঘ. রয়েল বেঙ্গল টাইগার বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ।
ঙ. শকুন বাংলাদেশে এখন বিলুপ্তপ্রায় পাখি।
৩. প্রাণীগুলো চিনে নিই।
ক্যাঙ্গারু | একমাত্র অস্ট্রেলিয়াতেই পাওয়া যায় এমন একটি প্রাণী। এদের পা চারটি, কিন্তু পেছনের দুই-পা বড়ো আর সামনের দুই-পা ছোটো। এর ফলে অন্যান্য চতুষ্পদ প্রাণীর মতো এরা হাঁটাচলা করে না, পেছনের দুই-পায়ের জোর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। ক্যাঙ্গারু তার বুকের নিচে থাকা থলিতে বাচ্চা রাখে। |
চিতাবাঘ | এক প্রকার বাঘ। অন্য বাঘের সঙ্গে চিতাবাঘের পার্থক্য হলো চিতাবাঘ তাদের চেয়ে দ্রুত দৌড়াতে ও গাছে উঠতে পারে। |
গণ্ডার | কালো ও ধূসর রঙের চতুষ্পদ প্রাণী, উচ্চতা ও লম্বায় গরুর আকারের। এদের নাকের ওপর শিং থাকে। |
৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
ক. ক্যাঙ্গারু ও সিংহ বললেই কোন কোন দেশের কথা মনে পড়ে?
উত্তর: পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন প্রাণীর জন্য বিখ্যাত। বিশ্বের কোনো কোনো প্রাণীর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে দেশের নাম বা জায়গার নাম। যেমন- ক্যাঙ্গারু বললেই মনে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার কথা। সিংহ বললেই মনে ভেসে ওঠে আফ্রিকার কথা।
খ. বিভিন্ন ধরনের বাঘ সম্পর্কে তুমি যা জান লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা রাজকীয় বাঘের নাম। এগুলো সুন্দরবনে বাস করে। এ বাঘ দেখতে সুন্দর কিন্তু তার স্বভাব ভয়ঙ্কর। জীবজন্তু শিকার করে ও সুযোগ পেলে মানুষও খায়। একসময় সুন্দরবনে ছিল চিতাবাঘ ও ওলবাঘ। এগুলো এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
গ. দেশের জন্য পশুপাখি, জীবজন্তু কী উপকার করে তা নিজের ভাষায় লেখ।
উত্তর: যেকোনো দেশের জন্যই জীবজন্তু, পশুপাখি এক অমূল্য সম্পদ। পৃথিবীতে অপ্রয়োজনীয় পশুপাখি, জীবজন্তু বা বৃক্ষলতা বলতে কিছুই নেই। যেমন কাক দেখতে অসুন্দর হলেও এটি উপকারী পাখি। পাখি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির সঙ্গে ফসলের পোকামাকড় খেয়ে পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখে। পশুর মধ্যে গরুর কথা বলা যায়। গরুর দুধ মানুষের পুষ্টির চাহিদা মিটিয়ে থাকে। গরুর গোবর সবচেয়ে উপকারী জৈব সার। এভাবে পশুপাখি ও জীবজন্তু অর্থনৈতিকভাবেও একটি দেশকে সাহায্য করে থাকে।
ঘ. শকুন কীভাবে মানুষের উপকার করে?
উত্তর: শকুন বাংলাদেশের একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী। একসময় বাংলাদেশে প্রচুর শকুন দেখা যেত। শকুন দেখতে খুব একটা সুন্দর না হলেও খুব উপকারী পাখি। মানুষের পক্ষে যা ক্ষতিকর, সেসব আবর্জনা শকুন খায়। এর ফলে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন থাকে। এভাবেই শকুন মানুষের অনেক উপকার করে।
ঙ. পশুপাখি জীবজন্তু না থাকলে প্রকৃতির কী বিপর্যয় ঘটবে বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: পশুপাখি জীবজন্তু না থাকলে প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলবে। দেশের জলবায়ু, আবহাওয়া, গাছপালা, বৃক্ষলতা ইত্যাদি প্রাকৃতিক পরিমণ্ডলেই সে দেশের প্রাণিকুল জীবনধারণ করে। তাই পশুপাখি ও জীবজন্তু না থাকার অর্থ প্রাকৃতিক দূষণ। প্রকৃতি দূষিত হলে ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিকম্প এসব ঘটতেই থাকবে। তখন সুস্থ প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
৫. নিচের বাক্য দুটি পড়ি।
মানুষের পক্ষে যা ক্ষতিকর সেইসব আবর্জনা শকুন খেয়ে ফেলে। সে সত্যিকার অর্থে মানুষের উপকার ছাড়া অপকার করে না।
উপরের বাক্য দুটিতে অনেক শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। বাক্যে ব্যবহৃত প্রতিটি শব্দই
এক-একটি পদ:
শকুন…..বিশেষ্য পদ
ক্ষতিকর…..বিশেষণ পদ
সে…..সর্বনাম পদ
খায়…..ক্রিয়া পদ
ছাড়া…..অব্যয় পদ
পদ পাঁচ প্রকার: বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, ক্রিয়া, অব্যয়।
নিচের বাক্যগুলো থেকে বিশেষ্যপদ খুঁজে বের করো।
সুন্দরবনে বাঘ ছাড়াও আছে নানা রকমের হরিণ। কোনোটার বড়ো বড়ো শিং, কোনোটার গায়ে ফোঁটা ফোঁটা সাদা দাগ। এদের বলে চিত্রা হরিণ।
উত্তর:
বাঘ, হরিণ, শিং -বিশেষ্য পদ
বড় বড় – বিশেষণ পদ
কোনোটা – সর্বনাম পদ
ছাড়া – অব্যয় পদ
৬. নিচের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো একটি প্রাণী সম্পর্কে রচনা লিখি।
ক. আকৃতি –
খ. রং-
গ. কোথায় দেখা যায় –
ঘ. আবাসস্থল –
ঙ. খাদ্যাভ্যাস –
উত্তর:
গরু
ক. আকৃতি: গরু চতুষ্পদ প্রাণী। এগুলো সাধারণত উচ্চতায় তিন-চার ফুট এবং লম্বায় ছয়-সাত ফুট হয়। গরুর দুটি শিং, দুটি কান, দুটি চোখ একটি নাক ও একটি লেজ আছে।
খ. রং: বাংলাদেশে বেশ কয়েক রঙের গরু দেখতে পাওয়া যায়। তবে সাদা, কালো ও লাল রঙেরই বেশি দেখা যায়। এছাড়া এই তিন রঙের একসাথে মিশ্রণও লক্ষ করা যায়।
গ. কোথায় দেখা যায়: বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই বিশেষ, করে গ্রামাঞ্চলে কম-বেশি গরু দেখা যায়। তবে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোরে বেশি দেখা যায়।
ঘ. আবাসস্থল: গরু গৃহপালিত প্রাণী। বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলের প্রায় সব বাড়িতে গরু আছে। গরু রাখার ঘরকে গোয়ালঘর বলে।
৫. খাদ্যাভ্যাস: গরু প্রধানত তৃণভোজী প্রাণী। ধানের খড় গরুর প্রধান খাদ্য। এছাড়া নানা রকম ঘাস খেয়েও গরু জীবনধারণ করে। তবে খৈল, ভুসি, ভাত, সবজির খোসাও গরুকে খেতে দেখা যায়।
৭. ঠিক উত্তরটিতে টিক (√) চিহ্ন দিই।
ক. ক্যাঙ্গারু বললেই মনে পড়ে যে দেশের কথা-
১. ভারত
২. বাংলাদেশ
৩. অস্ট্রেলিয়া√
৪. আফ্রিকা
খ. আফ্রিকার কথা উঠলে কোন প্রাণীর কথা মনে হয়?
১. সিংহ√
২. হাতি
৩. বাঘ
৪. উট
গ. বাংলাদেশের কোন জঙ্গলে হাতি দেখতে পাওয়া যায়?
১. সিলেট ও খুলনার
২. ভাওয়াল ও মধুপুরের
৩. রাঙামাটি ও বান্দরবানের√
৪. উপরের সবখানে
ঘ. কোন পাখি ক্ষতিকর আবর্জনা খেয়ে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখে?
১. ঈগল
২. শকুন√
৩. চিল
৪. কাক
ঙ. কোন প্রাণীর গায়ে ফোঁটা ফোঁটা সাদা দাগ ও বড় শিং আছে?
১. চিতা বাঘ
২. চিত্রা হরিণ√
৩. ভালুক
৪. গণ্ডার
৮. কর্ম-অনুশীলন।
আমি এমন প্রাণীদের একটি তালিকা তৈরি করি- যাদের নাম শুনেছি, কিন্তু চোখে দেখিনি। পরে শ্রেণির সবার সাথে তা মিলিয়ে দেখি।
উত্তর: প্রাণীর নাম: গণ্ডার, জলহস্তী, পেঙ্গুইন, শুশুক, ক্যাঙ্গারু, সজারু, গাধা;