ফুটবল খেলোয়াড় পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন উত্তর
৫ম শ্রেণি: ফুটবল খেলোয়াড়

ফুটবল খেলোয়াড় পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা

ফুটবল খেলোয়াড় পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা: ফুটবল খেলোয়াড় ইমদাদ হক খেলতে গিয়ে প্রতিদিনই হাতে, পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। রাতে মেসে ফিরে চাকরকে দিয়ে ক্ষতস্থানে মালিশ লাগায়। তার হাত-পা এমনভাবে ভেঙেছে যে, মেসের বন্ধুরা ভাবে, ইমদাদ হক বুঝি আর খেলতে পারবে না। সারা রাত মালিশ লাগিয়ে ব্যথায় কুঁকড়ে নির্ঘুম কাটায়। অথচ সকাল হতেই সে আর বিছানায় থাকে না। বিকেলে তাকে আবার দেখা যায় ফুটবল মাঠে বল নিয়ে গোলপোস্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দুরন্ত গতিতে। ভাঙা পায়ের জাদুতে বন্ধ হেনে গোলের পর গোল দিয়ে জয়ের মশাল জ্বালে সে। যা দেখে দর্শকরা মহা কলরব তোলে। কিন্তু খেলোয়াড় ইমদাদ হক মেসে এসে আবার চাকরের খোঁজ করে। মালিশ লাগিয়ে সারা রাত চিৎকার করে কাটায়। সকাল হলেই তার জয়ের কথা পত্রিকায় আসে।

ফুটবল খেলোয়াড় পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা:

১. কবিতাটির মূলভাব জেনে নিই।
ইমদাদ হক একজন ফুটবল খেলোয়াড়। খেলায় জেতাই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। নিজের অবস্থা যেমনই হোক না কেন, খেলা-পাগল সে, খেলবেই। খেলতে গিয়ে ইমদাদ কত শত আঘাত পায়। তবু সেসব কষ্টকে পরোয়া না করে সে খেলে এবং তার জন্যই খেলায় জয় আসে। তার জন্যই সকল দর্শক আনন্দ পায়। এই কবিতায় খেলাচ্ছলে একটি আদর্শকে তুলে ধরা হয়েছে। তা হলো, মানুষ যদি মনপ্রাণ দিয়ে কিছু করে, তবে সে বড় কিছু করতে পারে।

২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
ক্ষত, পটি, মালিশ, ড্রিবলিং, বজ্র, কোলাহলকল, মহাকলরব।
উত্তর:
ক্ষত – শরীরের কাটা স্থান বা আঘাত পাওয়া স্থান।
পটি – কাপড়ের লম্বা টুকরা। এটা দিয়ে শরীরের কোনো স্থান বাঁধা থাকে।
মালিশ – যে ওষুধ বা মলম চেপে-চেপে শরীরে লাগাতে হয়।
ড্রিবলিং – এটা ফুটবল খেলার একটা কৌশল। পায়ে পায়ে গড়িয়ে নিয়ে কৌশলে বল কাটিয়ে নিয়ে যাওয়া।
বজ্র – ভীষণ শব্দ করে ঝড়ের আকাশে বিদ্যুৎ প্রকাশ পাওয়া।
কোলাহলকল – কোলাহল হলো অনেক মানুষের শোরগোল, গোলমাল। আর ‘কল’ বলতে বোঝায় মানুষের গলার সুন্দর আওয়াজ। এখানে খেলায় সকলে একসঙ্গে গোল-গোল চিৎকার করলে বেশ ভালো শোনায় বলে ‘কোলাহলকল’ বলা হয়েছে।
মহাকলরব – ভীষণ চিৎকার।

৩. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
বজ্র, পটি, মালিশের, ক্ষত, মহাকলরব;
ক. ইমদাদ হকের শরীরে অনেক আঘাতের___রয়েছে।
খ.সন্ধ্যাবেলায় পায়ে হাতে___বাঁধে সে।
গ.খেলায় জিতে দর্শকেরা___করে ফিরে যাচ্ছে।
ঘ.টেবিলের ওপর___শিশিগুলো রাখা আছে।
ঙ.___পড়ার শব্দে শিশুটির ঘুম ভেঙে গেল।
উত্তর: ক. ক্ষত; খ.পটি; গ.মহাকলরব; ঘ.মালিশের; ঙ.বজ্র;

৪. প্রশ্নগুলোর উত্তর জেনে নিই ও লিখি।
ক. সকাল বেলায় ফুটবল খেলোয়াড় ইমদাদ হকের বিছানা শূন্য পড়ে ছিল কেন?
উত্তর: ইমদাদ হক একজন ফুটবল খেলোয়াড়। সারা দিন ফুটবল খেলার কারণে তার হাতে-পায়ে অনেক ব্যথা হয়। সারা রাত সে কষ্ট পায়। কিন্তু সকাল বেলা তার ঘরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায় না। কারণ সারা রাতের ব্যথা ভুলে সকালে ইমদাদ ঠিকই খেলার মাঠে অনুশীলন করতে পৌছে যায়। আসলে ফুটবল খেলোয়াড় ইমদাদ হকের অনুশীলনে যাওয়ার কারণেই প্রভাত বেলায় বিছানা শূন্য পড়ে থাকে। 

খ. টেবিলের ওপরে ছোট-বড় মালিশের শিশি কবিকে উপহাস করছে কেন?
উত্তর: ইমদাদ হক একজন একনিষ্ঠ ফুটবল খেলোয়াড়। সারা দিন, খেলার কারণে রাতে তার হাতে-পায়ে অনেক ব্যথা হয়। সে ব্যথা কমানোর জন্য মেসের চাকর পটি বাঁধা হাতে-পায়ে সেঁক দিয়ে দেয়, ওষুধ মালিশ করে। আর ইমদাদ সারা রাত ব্যথায় কেঁদে কেঁদে ডাক ছাড়ে। কবি ইমদাদের অবস্থা জানার জন্য সকালে তার ঘরে গিয়ে দেখেন বিছানা শূন্য। ইমদাদ হক অনুশীলনের জন্য ঠিকই সকালে বেরিয়ে পড়েছে। ঘরের মধ্যে পড়ে আছে শুধু ছোট-বড় মালিশের শিশিগুলো। তখন নিজের ভুল ধারণার জন্য কবির মনে হয়েছে ঘরের শিশিগুলো তাঁকে উপহাস করছে।

গ. ইমদাদ হকের খেলা নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় কী লেখা হয়েছিল?
উত্তর: ফুটবল খেলোয়াড় ইমদাদ হক প্রতিদিন খেলতে গিয়ে হাতে-পায়ে আঘাত পায়। রাতে মেসে ফিরে চাকরকে দিয়ে ক্ষতস্থানে মালিশ লাগায় এবং ব্যথায় কষ্ট পায়। তবু সকাল হলেই সে মাঠে নেমে দুর্দান্ত খেলতে থাকে। ভাঙা পায়ের জাদুতে গোলের পর গোল করে দলকে জয় এনে দেয়। সকাল হলেই তার জয়ের কথা দৈনিক পত্রিকায় আসে।

ফুটবল খেলোয়াড় পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা:

৫. খালি জায়গায় কবিতার ঠিক লাইনটি লিখি।
ক……………………………………………,
সারা রাত শুধু ছটফট করে কেঁদে কেঁদে ডাক ছাড়ে।

খ. টেবিলের পরে বড় ছোট যত মালিশের শিশিগুলি,
……………………………………………….।

গ. গোল-গোল-গোল- মোদের মেসের ইমদাদ হক কাজি,
……………………………………………….।

উত্তর:

ক. মেসের চাকর হয় লবেজান সেঁক দিতে ভাঙা হাড়ে,
সারা রাত শুধু ছটফট করে কেঁদে কেঁদে ডাক ছাড়ে।

খ. টেবিলের পরে বড় ছোট যত মালিশের শিশিগুলি,
উপহাস যেন করিতেছে মোরে ছিপি-পরা দাঁত তুলি

গ. গোল-গোল-গোল- মোদের মেসের ইমদাদ হক কাজি,
ভাঙা দুটি পায়ে জয়ের ভাগ্য লুটিয়া আনিল আজি

৬. ইমদাদ হক সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লিখি।
উত্তর: ইমদাদ হক সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য নিচে দেওয়া হলো:
১. ইমদাদ হক একজন একনিষ্ঠ ফুটবল খেলোয়াড়।
২. ইমদাদ হক মেসে থাকত।
৩. নিজের অবস্থা যেমনই হোক না কেন, খেলা-পাগল সে. খেলবেই।
৪. অনেক বেশি খেলার জন্য রাতে ইমদাদের হাতে-পায়ে ব্যথা হতো।
৫. সমস্ত বাধা উপেক্ষা করে ইমদাদ ঠিকই জয় ছিনিয়ে আনত।

৭. কবিতাটি আবৃত্তি করি।
উত্তর: শিক্ষকের সহযোগিতা নিয়ে আবৃত্তি কর।

৮.কর্ম-অনুশীলন।
ক.আমার প্রিয় খেলা নিয়ে একটি রচনা লিখি।

ফুটবল খেলা

ভূমিকা: বর্তমানে বাংলাদেশের ক্রিকেটের পরেই জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। ইংরেজরা আসার আগে বাংলাদেশে এ খেলার প্রচলন ছিল না। তারাই ফুটবল খেলা প্রথম আমাদের দেশে প্রচলন করে। আজ দেশের সর্বত্র এ খেলা অনেক জনপ্রিয়।
বিবরণ: অনধিক একশ গজ দীর্ঘ এবং আশি গজ চওড়া একটি সমতল মাঠে ফুটবল খেলা হয়। মাঠের চারদিকে লাইন চিহ্নিত করা হয়। লাইনের বাইরে গেলে বল ‘আউট’ হয়। লম্বা দিকের দুই পাশে দুটি করে খুঁটি মাটিতে গেড়ে একটি লম্বা কাঠখণ্ড খুঁটিগুলোর মাথায় স্থাপন করে ‘গোলপোস্ট’ তৈরি করা হয়। ‘গোলপোস্ট’-এর এক খুঁটি থেকে অন্য খুঁটির দূরত্ব আট গজ। গোল লাইনের পেছন দিকে সংলগ্ন থাকে একটি জাল। খেলার সময় বিপক্ষের খেলোয়াড় বল গোল লাইন অতিক্রম করাতে পারলে গোল হয়। এ খেলায় প্রতিটি দলে এগারো জন করে খেলোয়াড় থাকে। খেলার সময় সবার আগে থাকে পাঁচ জন, তাদের বলে ফরোয়ার্ড। ফরোয়ার্ড লাইনের পিছনে থাকে তিন জন, তাঁদের নাম হাফব্যাক। তারা ফরোয়ার্ডদের সাহায্য করে। হাফব্যাক তিন জনের ঠিক পেছনেই থাকে দুজন ব্যাক আর গোলমুখে গোলরক্ষক। গোলরক্ষকের কাজ গোলপোস্টে বল ঢুকতে না দেওয়া। নির্দিষ্ট’ সীমানার মধ্যে গোলরক্ষক হাত দিয়ে বল ধরতে পারে। অন্য কোনো খেলোয়াড় হাতে বল ধরলে বা হাতে বল লাগলে ‘হ্যান্ড বল’ ধরা হয়। ফুটবল খেলার পরিচালককে বলে রেফারি। রেফারিকে সাহায্য করার জন্য মাঠের দুধারে থাকে দুজন সহকারী রেফারি। ফুটবল খেলার সময়কাল ৯০ মিনিট। মাঝখানে দশ মিনিটের বিরতি থাকে।
উপকারিতা: ফুটবল খেলা দেহের পেশিগুলো মজবুত করে এবং . শরীরকে শক্ত-সমর্থ করে গড়ে তোলে। মনকে করে প্রফুল্ল। খেলোয়াড়রা এ- খেলার মাধ্যমে শেখে ধৈর্যশীলতা, নিয়মানুবর্তিতা, কর্তব্যজ্ঞান আর আনুগত্য। মানুষের জীবনে এ গুণগুলো অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
উপসংহার: এ খেলার একটি অদ্ভুত আকর্ষণ আছে। ফুটবল নাম শুনলেই ছেলে-বুড়ো সবার মধ্যেই চাঞ্চল্য দেখা দেয়। ঝড়-বৃষ্টি অগ্রাহ্য করে সবাই ছোটে খেলা দেখতে। খেলা দেখতে দেখতে অনেকে বিশেষ বিশেষ ক্রীড়া দল বা ক্লাবের সমর্থক হয়ে পড়ে। দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে মাঝে মাঝে সংঘর্ষ ঘটে। আমাদের দেশের ফুটবল খেলার মানকে আরও উন্নত করার জন্য, চেস্টা করা দরকার।

খ. ফুটবল খেলা দেখতে যাওয়ার সাময়িক ছুটি চেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট একটা আবেদনপত্র লিখি।
উত্তর:
তারিখ: ১০.০৩.২০২৫
বরাবর,
প্রধান শিক্ষক
চকভেকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
পীরগঞ্জ, রংপুর।

বিষয়: ফুটবল খেলা দেখার জন্য সাময়িক ছুটির আবেদন।
জনাব
যথাবিহিত সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সবিনয় নিবেদন এই যে, আজ সকাল ১১টা থেকে ১২.৩০টা পর্যন্ত আমাদের বিদ্যালয় মাঠে চতুর্থ শ্রেণি ও পঞ্চম শ্রেণির মধ্যে একটি ফুটবল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। নির্ধারিত ঐ খেলাটি আমরা উপভোগ করতে চাই।
অতএব বিনীত নিবেদন, খেলাটি দেখার অনুমতি দিয়ে আমাদের সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সাময়িক ছুটি দিতে আপনার মর্জি হয়।

বিনীত নিবেদক
আপনার অনুগত
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষে.
মো. রায়হান সরকার
পঞ্চম শ্রেণি, শাখা দিবা, ক, রোল নম্বর ০২।

গ. নিচের ফরমটি খাতায়/কাগজে লিখে পূরণ করি।
উত্তর:

আন্তঃপ্রাথমিক বিদ্যালয় ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা
প্রতিযোগিতা ফরম

১. শিক্ষার্থীর নাম: মো. সুমন আলী
২. বিদ্যালয়ের নাম: থানার হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
৩. শ্রেণি: পঞ্চম
৪. ক. শিক্ষার্থীর পিতার নাম: মো. শহীদ আলী
খ. শিক্ষার্থীর মাতার নাম: মোসা. মাহমুদা আকতার
৫. বর্তমান ঠিকানা
গ্রাম/সড়ক নং: পরানপুর, ডাকঘর/মহল্লা: থানার হাট
উপজেলা: চাটখিল, জেলা: নোয়াখালী।
৬. স্থায়ী ঠিকানা
গ্রাম/সড়ক নং: পরানপুর, ডাকঘর/মহল্লা: থানার হাট
উপজেলা: চাটখিল, জেলা: নোয়াখালী।
৭. জন্ম তারিখ: ০১.০২.২০১৪ খ্রিস্টাব্দ
৮. প্রতিযোগিতায় যেসব বিষয়ে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক
ক. ফুটবল
খ. ১০০ মিটার দৌড়
গ. দেশাত্মবোধক গান

আরিফ আহমেদ
শ্রেণিশিক্ষকের স্বাক্ষর

মো. সুমন আলী
শিক্ষার্থীর স্বাক্ষর

আরও পড়ুন: হাতি আর শিয়ালের গল্প পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা

আরও পড়ুন: বীরের রক্তে স্বাধীন এ দেশ পঞ্চম শ্রেণীর বাংলা

Codehorse App

Check Also

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন

পঞ্চম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা পঞ্চম অধ্যায় বর্ণনামূলক প্রশ্ন: প্রায় চার হাজার বছর আগের কথা। ইরাক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *