চতুর্থ শ্রেণি আবোল তাবোল প্রশ্ন উত্তর: একটি লোক তার মনে যখন যা করতে ইচ্ছে করে তাই করে। মনের আনন্দে কখনো সে কথা বলতে শুরু করলে কেউ তাকে থামাতে পারে না। কখনো ইচ্ছে হলে কথার প্যাঁচ্ কেটে গানও গাইতে থাকে। চোখে ঘুম নেমে এলে তার গানের পালা সাঙ্গ হয়।
চতুর্থ শ্রেণি আবোল তাবোল প্রশ্ন উত্তর:
১. জেনে নিই।
আবোল-তাবোল কথা বলার মানে মনের খেয়ালে কথা বলতে থাকা। আমরা কথা বলি যাতে অন্যে সে-কথা শোনে এবং শুনে কিছু একটা করে। যেমন, যদি বলি – মা, ভাত খাব। মা তখন আমায় ভাত দিতে ছুটবেন! কিন্তু যদি ভূতের মতো নাকি সুরে বলি ‘আঁউ মাঁউ খাঁউ ভাঁতের গন্ধ পাউ’ তখন মা ভাববেন, আমি খেলা করছি। সেটা তখন আবোল-তাবোল কথা হয়ে গেল, যে কথার অর্থ নেই, যে কথা দিয়ে কিছু বোঝাতে চাইছি না। এটি সে-রকমই একটি ছড়া, যা জোরে জোরে পড়লেই শুনতে মজা লাগে। একটা লোক মনের আনন্দে কেবলই বকবক করে কথা বলে চলেছে, ইচ্ছে হলে গানও গাইছে। যতক্ষণ না দুচোখে ঘুম নামল, ততক্ষণ সে এমনটাই করে গেল।
২. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
ঠেকায়, তবলা, ঘ্যাঁচাং ঘ্যাঁচ, প্যাঁচ, ঘুম, ঘনিয়ে এলো, মনের মাঝে, সাঙ্গ, রাম-খটাখট।
উত্তর:
ঠেকায় → বাধা দেয়, মানা করে।
তবলা → এক প্রকার বাদ্যযন্ত্র।
ঘ্যাঁচাং ঘ্যাঁচ →এক কোপে কিছু কেটে ফেলার আওয়াজ।
প্যাঁচ → মোচড়, মোড়ানো।
ঘুম → তন্দ্রা, নিদ্রা।
ঘনিয়ে এলো → ঘন হয়ে এলো, জড়ো হলো।
মনের মাঝে → মনের ভিতরে।
সাঙ্গ →শেষ, সমাপ্ত।
রাম-খটাখট → খুব জোরেশোরে খটাখট শব্দ। (রাম শব্দটি দিয়ে আমরা বড় আকারের কিছু বুঝাই। যেমন- রামছাগল, রামবোকা, হাঁদারাম)।
৩. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
ঘনিয়ে এলো ,সাঙ্গ, ঘ্যাঁচাং ঘ্যাঁচ, ঠেকায়, মনের মাঝে, প্যাঁচ
ক. তুহিন লেখাপড়ায় এতো ভালো যে ওকে …… কে?
খ. লোকটি ……… করে গাছের ডালটি কেটে ফেলল।
গ. বসে থাকতে থাকতে তার ঘুম …………..।
ঘ. ………দেওয়া কথা বোঝা যায় না।
ঙ. তাড়াতাড়ি খেলাধুলা ……… কর, পড়তে বসতে হবে।
চ. পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করায় তার …………. আনন্দের ঢেউ বয়ে যায়।
উত্তর:
ক. তুহিন লেখাপড়ায় এতো ভালো যে ওকে ঠেকায় কে?
খ. লোকটি ঘ্যাঁচাং ঘ্যাঁচ করে গাছের ডালটি কেটে ফেলল।
গ. বসে থাকতে থাকতে তার ঘুম ঘনিয়ে এলো।
ঘ. প্যাঁচ দেওয়া কথা বোঝা যায় না।
ঙ. তাড়াতাড়ি খেলাধুলা সাঙ্গ কর, পড়তে বসতে হবে।
চ. পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করায় তার মনের মাঝে আনন্দের ঢেউ বয়ে যায়।
৪. প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখে বলি ও লিখি।
প্রশ্ন ক. কী ছুটছে যাকে থামানো যাচ্ছে না?
উত্তর: কথা ছুটছে যাকে থামানো যাচ্ছে না।
প্রশ্ন খ. ধাঁই ধপাধপ আওয়াজে কোথায় তবলা বাজছে?
উত্তর: যে মনের খেয়ালে আবোল-তাবোল কথা বলে যাচ্ছে, থামার কোনো চেষ্টা করছে না তার মনের মাঝে ধাঁই ধপাধপ আওয়াজে তবলা বাজছে।
প্রশ্ন গ. কখন গানের পালা সাঙ্গ হলো?
উত্তর: আবোল-তাবোল কথা বলতে বলতে যখন লোকটার ঘুম ঘনিয়ে এলো তখন গানের পালা সাঙ্গ হলো।
প্রশ্ন ঘ. কথায় কী কাটে?
উত্তর: কথায় কাটে কথার প্যাঁচ।
৫. ছড়াটিতে যা বলা হয়েছে তা বর্ণনা করি।
উত্তর: এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা মনের খেয়ালে একা একাই কথা বলতে থাকে। কাউকে শোনানোর জন্য বা কাউকে উদ্দেশ করে তারা কোনো কথা বলে না। নিজের মনের খেয়ালে কথা বলে। আবার কখনো হাসে, উল্লাস করে ইত্যাদি। ছড়াটিতে এমনই একজন মানুষের কথা তুলে ধরা হয়েছে যার কথা একবার ছুটলে তাকে আর কেউ থামাতে পারে না। তার মনের মাঝে ধাঁই ধপাধপ আওয়াজ করে তবলা বাজে। কথার প্যাঁচ কথায়ই ঘ্যাঁচাং ঘ্যাঁচ করে কাটে। যখন তার ঘুম ঘনিয়ে আসে তখনই তার কথার বা গানের পালা সাঙ্গ হয়।
৬. ছড়াটি মুখস্থ করি ও বলি।
উত্তর: নিজে চেষ্টা করো।
৭. বই না দেখে ছড়াটি ঠিকমতো লিখি।
উত্তর: নিজে চেষ্টা করো।
৮. কর্ম-অনুশীলন।
ছড়ার মতো করে দুইটি লাইন লিখি।
উত্তর:
লঙ্কা খেয়ে পাখির ছানা,
ঝালের চোটে মেলল ডানা।
ছড়াটি লিখেছেন সুকুমার রায়
শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায় ৩০শে অক্টোবর ১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটোদের জন্য হাসির গল্প ও কবিতা লিখে বিখ্যাত হয়ে আছেন। ‘আবোল-তাবোল’, ‘হ-য-ব-র-ল’, ‘পাগলা দাশু’, ‘বহুরূপী’, ‘খাইখাই’, ‘অবাক জলপান’ তাঁর অমর সৃষ্টি। তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীও শিশুসাহিত্যিক ছিলেন। পুত্র সত্যজিৎ রায় বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক হলেও শিশু-কিশোরদের জন্য প্রচুর লিখেছেন। ১০ই সেপ্টেম্বর ১৯২৩ সালে সুকুমার রায় মৃত্যুবরণ করেন।