অতিথির স্মৃতি গল্পের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন: এই পর্যায়ে আমরা ৮ম শ্রেণীর বাংলা বইয়ের অতিথির স্মৃতি গল্পের কিছু জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করব।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর:
১. পাখি চালান দেয়া কাদের ব্যবসায়?
উত্তর: পাখি চালান দেয়া ব্যাধদের ব্যবসায়।
২. কাকে দেখে লেখকের সবচেয়ে বেশি দুঃখ হতো?
উত্তর: একটা দরিদ্র ঘরের মেয়েকে দেখে লেখকের সবচেয়ে বেশি দুঃখ হতো।
৩. ‘কী রে, যাবি আমার সঙ্গে? -এ প্রশ্ন কাকে উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে?
উত্তর: ‘কী রে, যাবি আমার সঙ্গে?’-এ প্রশ্ন একটা কুকুরকে উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে।
৪. কার যৌবনে শক্তিসামর্থ্য ছিল?
উত্তর: কুকুরটার যৌবনে শক্তিসামর্থ্য ছিল।
৫. লেখক কাকে অতিথি হিসেবে ঘরে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানান?
উত্তর: লেখক একটি কুকুরকে অতিথি হিসেবে ঘরে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানান।
৬. আলো নিয়ে কে এসে উপস্থিত হলো?
উত্তর: আলো নিয়ে চাকর এসে উপস্থিত হলো।
৭. ‘ও আমার অতিথি, ওকে পেট ভরে খেতে দিও’-কাকে এ আদেশ দেয়া হয়েছে?
উত্তর: ‘ও আমার অতিথি, ওকে পেট ভরে খেতে দিও।’-বামুন ঠাকুরকে এ আদেশ দেয়া হয়েছে।
৮. বেড়াতে বের হলে লেখকের পথসঙ্গী হয় কে?
উত্তর: বেড়াতে বের হলে লেখকের পথসঙ্গী হয় কুকুরটি।
৯. মালির বউ কাকে মারধর দিয়ে বের করে দিয়েছে?
উত্তর: মালির বউ লেখকের অতিথি তথা কুকুরটাকে মারধর দিয়ে বের করে দিয়েছে।
১০. কে লেখকের কাছে গোপনে নালিশ জানাতে চায়?
উত্তর: কুকুরটি লেখকের কাছে গোপনে নালিশ জানাতে চায়।
১১. কাদে দরজা খোলার শব্দে অতিথি পালাল?
উত্তর: চাকরদের দোর খোলার শব্দে অতিথি পালাল।
১২. শরীর না সারলেও লেখককে কোথা থেকে বিদায় নিতে হলো?
উত্তর: শরীর না সারলেও লেখককে দেওঘর থেকে বিদায় নিতে হলো।
১৩. সবাই বকশিশ পেলেও কে বকশিশ পেল না?
উত্তর: সবাই বকশিশ পেলেও অতিথি অর্থাৎ কুকুরটি বকশিশ পেল না।
১৪. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে রাত তিনটায় লেখকের ঘুম ভেঙে যায় কেন?
উত্তর: ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে একজনের গলাভাঙা একঘেয়ে সুরে ভজনের শব্দ শুনে রাত তিনটায় লেখকের ঘুম ভেঙে যায়।
১৫. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে উল্লিখিত বেনে-বৌ পাখির গায়ের রং কেমন?
উত্তর: ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে উল্লিখিত বেনে-বৌ পাখির গায়ের রং হলুদ।
১৬. লেখক বেরিবেরি রোগীদের চিনতেন কীভাবে?
উত্তর: লেখক পা ফোলা দেখে বেরিবেরি রোগীদের চিনতেন।
১৭. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে বেনে-বৌ পাখি কোথায় বসে হাজিরা হাঁকত?
উত্তর: ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে বেনে-বৌ পাখি দুটি প্রাচীরের ধারের ইউক্যালিপটাস গাছের সবচেয়ে উঁচু ডালটায় বসে হাজিরা হাঁকত।
১৮. দেওঘরে কোন ঘরে পীড়িতদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা বেশি?
উত্তর: দেওঘরে মধ্যবিত্ত গৃহস্থের ঘরে পীড়িতদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা বেশি।
১৯. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে লেখক কাকে অতিথি বলেছেন?
উত্তর: ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে লেখক একটি কুকুরকে অতিথি বলেছেন।
২০. সন্ধ্যার পূর্বেই কাদের ঘরে প্রবেশ করা প্রয়োজন ছিল?
উত্তর: বাতব্যাধিগ্রস্তদের সন্ধ্যার পূর্বেই ঘরে প্রবেশ করা প্রয়োজন ছিল।
২১. অতিথিশালার বাড়তি খাবারের প্রবল অংশীদার কে ছিল?
উত্তর: অতিথিশালার বাড়তি খাবারের প্রবল অংশীদার ছিল বাগানের মালির স্ত্রী মালিনী।
২২. কুকুরটি কখন লুকিয়ে বাড়িতে এসেছিল?
উত্তর: কুকুরটি দুপুরবেলা লুকিয়ে বাড়িতে এসেছিল।
২৩. বেঁচে যাওয়া খাবার কে নিয়ে গিয়েছিল?
উত্তর: মালির বৌ বেঁচে যাওয়া খাবার নিয়ে গিয়েছিল।
২৪. শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত উপন্যাসের খণ্ড কয়টি?
উত্তর: শরৎচন্দ্রের শ্রীকান্ত উপন্যাসের খণ্ড চারটি।
২৫. ‘বেরিবেরি’ কী?
উত্তর: বেরিবেরি শোথ জাতীয় রোগ, যাতে হাত পা ফুলে যায়।
২৬. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে ভোরে ওঠে কোনটি?
উত্তর: ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে ভোরে ওঠে দোয়েল।
২৭. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি উপন্যাসের নাম লেখ।
উত্তর: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি উপন্যাস হলো দেবদাস।
২৮. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের মূল বিষয় কী?
উত্তর: মানবেতর প্রাণীর সঙ্গে মানুষের মমত্বের সম্পর্কের স্বরূপই হলো ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের মূল বিষয়।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর:
১. বেরিবেরির আসামি বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বেরিবেরির আসামি বলতে শোথ জাতীয় রোগাক্রান্তদের বোঝানো হয়েছে। বেরিবেরি একটি কঠিন রোগ। এ রোগ হলে হাত-পা ফুলে যায়। ফলে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে বিঘ্ন ঘটে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ অসহায় বোধ করে। মানুষের বাঁকা চোখের চাহনি থেকে রক্ষা পেতে তারা রোগাক্রান্ত স্থান ঢেকে রাখতে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে। তাই শোথ জাতীয় রোগাক্রান্ত ব্যক্তিদের লেখক বেরিবেরির আসামি বলে আখ্যায়িত করেছেন।
২. বেনে-বৌ পাখির অনুপস্থিতিতে লেখকের ব্যস্ত হয়ে ওঠার কারণ কী?
উত্তর: বেনে-বৌ পাখির অনুপস্থিতিতে লেখক অজানা ভয়ের নীরব বেদনায় ব্যস্ত হয়ে উঠলেন। দেওঘরের প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিল অপূর্ব। প্রাচীরঘেরা বাগানের মধ্যে সকালবেলায় লেখক বিভিন্ন পাখির আনাগোনা লক্ষ করতেন। তিনি লক্ষ করতেন হলদে রঙের একজোড়া বেনে-বৌ পাখি প্রতিদিন একটু বিলম্বে আসত। এরা প্রাচীরের ধারের ইউক্যালিপটাস গাছের সবচেয়ে উঁচু ডালটায় বসে হাজিরা হেঁকে যেত। হঠাৎ একদিন তাদের অনুপস্থিতিতে লেখক অজানা ভয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। তিনি ভাবলেন হয়তো পাখি দুটি ব্যাধের হাতে ধরা পড়েছে।
৩. লেখক বাড়ি পৌঁছাতে কুকুরের সাহায্য কামনা করলেন কেন?
উত্তর: অন্ধকার রাতে নিঃসঙ্গ সময়ের নিকটতম বন্ধু মনে করে বাড়ি পৌঁছাতে লেখক কুকুরের সাহায্য কামনা করলেন। দেওঘরে লেখক একদিন বাতব্যাধিগ্রস্ত কয়েকজন বৃদ্ধের হাঁটার গতিময়তা দেখে হাঁটতে অনুপ্রাণিত হন। সেদিনই তিনি হাঁটতে বের হন এবং বহুদূর চলে যান। অন্ধকার ঘনিয়ে এলে লেখক নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে করেন। আর তখনই পেছনে একটি কুকুরের উপস্থিতি লক্ষ করলেন। এই মানবেতর প্রাণীটিকে দেখে লেখকের মাঝে মানবতাবোধ জেগে উঠল। লেখক আপন সঙ্গী ভেবে অন্ধকার রাতে বাড়ি পৌঁছতে কুকুরটির সাহায্য কামনা করলেন।
৪. লেখকের অতিথি বারান্দার নিচে বসেছিল কেন?
উত্তর: লেখকের প্রতি আনুগত্য ও ভালোবাসা থাকায় তারই সান্নিধ্য কামনায় অতিথি কুকুরটি বাইরের বারান্দার নিচে বসেছিল। একদিনের পরিচয়েই লেখকের সঙ্গে কুকুরটির বন্ধুত্ব হয়। কুকুরটির প্রতি যেমন লেখকের মমত্ববোধ সৃষ্টি হয় তেমনি লেখকের প্রতিও অতিথি কুকুরটির আনুগত্য ও ভালোবাসা প্রকাশ পায়। প্রথমে কুকুরটি লেখকের অপেক্ষায় গেটের বাইরে অবস্থান করে। পরবর্তীতে তারই সান্নিধ্য কামনায় বাইরের বারান্দার নিচে বসে থাকে।
৫. ‘ফোলা পায়ের লজ্জা ঢাকতে বেচারাদের কত না যত্ন’- বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: ‘ফোলা পায়ের লজ্জা ঢাকতে বেচারাদের কত না যত্ন’- কথাটি বেরিবেরি রোগে ভোগা মেয়েদের সম্পর্কে বলা হয়েছে। বিকেলবেলা লেখকের বাড়ির সামনে দিয়ে পা ফোলা মেয়েরা দলবেঁধে যেত। বেরিবেরি রোগের কারণে তাদের পা ফুলে গেছে, যা পায়ের সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলেছে। পায়ের এ ফোলা অবস্থা ঢাকতেই তারা গরমের দিনেও মোজা পরত।
৬. ‘দেহ যেমন শীর্ণ মুখ তেমনি পান্ডুর’- কথাটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: দেওঘরে দেখা দরিদ্র ঘরের মেয়েটির শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে লেখক এ কথাটি বলেছেন। লেখক পথের ধারে বসে বৈকালিক ভ্রমণে বেরুনো রোগীদের লক্ষ করতেন। বেরিবেরি আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে একটি অল্পবয়সি মেয়ের শরীর ছিল রোগা, চেহারা বিবর্ণ। তার চলার শক্তি ছিল না, অথচ কোলে একটি শিশু। উদ্ধৃত উক্তিটি মেয়েটির করুণ অবস্থাকেই তুলে ধরেছে।
৭. মালির বউ কুকুরটাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল কেন?
উত্তর: মালির বউয়ের খাবারে কুকুরটি ভাগ বসিয়েছিল বলে মালির বউ বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল।অতিথিশালার অতিথিদের জন্য রাঁধা উদ্বৃত্ত খাবারগুলো নিয়মিত ভোগ করত মালির বউ। কুকুরটি সে খাদ্যের অংশীদার হিসেবে জুটলে তাতে মালির বউয়ের স্বার্থে বাধা পড়ে। তাই কুকুরটিকে সে মেরে বের করে দিয়েছিল।
৮. ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পের গল্পকারের সকাল কাটে কীভাবে?
উত্তর: ‘অতিথির স্মৃতি’ গল্পে গল্পকারের পাখিদের ভাবনায় সকাল কাটে। রাত শেষ হতে না হতেই পাখিদের আনাগোনা শুরু হয়। সেই সাথে গল্পকারের ব্যস্ততাও বেড়ে যায়। একের পর এক পাখিরা আমগাছ, বকুলকুঞ্জ, অশ্বত্থ গাছের মাথা থেকে বের হয়ে আসে। গল্পকার তা পরমানন্দে দেখতে থাকেন। পাখিরা যেমন প্রত্যহ হাজিরা হাঁকে, তেমনি গল্পকারও নিয়মিতভাবে সকালবেলা পাখিদের সময় দেন। কোনো পাখি এক, দুইদিন না আসলে তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে উঠতেন। আবার পাখিদের ফিরে আসা দেখে ভাবনা ঘোচে তার। এমনিভাবে গল্পকারের প্রতিটি সকাল পাখিদের সাথেই কেটে যায়।
আজ আমরা অতিথির স্মৃতি গল্পের জ্ঞান ও অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর আলোচনা করলাম । পরবর্তীতে এই গল্পের বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল প্রশ্ন আলোচনা করব। আজকের সমাধান PDF Download করে নাও নিচের দেওয়া Answer Sheet বাটনে ক্লিক করে।