চতুর্থ শ্রেণীর বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ১৫ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ: ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। পাকিস্তানের দুইটি ভাগ ছিল। একটি পূর্ব পাকিস্তান এবং অপরটি পশ্চিম পাকিস্তান। পাকিস্তানের রাজধানী ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। আর তাই পশ্চিম পাকিস্তানিরা শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করত। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাঙালিদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। বাঙালিরা তা মেনে নেয়নি এবং এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে।
১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকার রাজপথে মিছিল বের হয়। পুলিশ সে মিছিলে গুলিবর্ষণ করে। সেখানে রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত, শফিউরসহ অনেকেই শহিদ হন।
ভাষাশহিদদের স্মরণে ঢাকায় শহিদ মিনার গড়ে তোলা হয়। এছাড়া অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ছোট ছোট শহিদ মিনার গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা শহিদ দিবস হিসেবে পালন করি। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে দিনটি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবেও পালিত হয়।
চতুর্থ শ্রেণীর বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ১৫ আমাদের মুক্তিযুদ্ধ:
অল্প কথায় উত্তর:
প্রশ্ন-১। ভাষা আন্দোলন কখন হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন সংঘটিত হয়েছিল।
প্রশ্ন-২। ছয়-দফা দাবি কখন উত্থাপন করা হয়েছিল?
উত্তর: ছয়-দফা দাবি ১৯৬৬ সালে উত্থাপন করা হয়েছিল।
প্রশ্ন-৩। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয় কখন?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
প্রশ্ন-৪। বাংলার স্বাধীনতা। যুদ্ধ কয় মাস স্থায়ী হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট নয় মাস যুদ্ধ স্থায়ী হয়েছিল।
প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
প্রশ্ন-১। ১৯৭০ সালের নির্বাচন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন?
উত্তর: পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে থাকে। পাকিস্তান প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে। তাই সকল ক্ষেত্রে পূর্ব পাকিস্তানিদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রথমে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন শুরু হয়। ১৯৬৬ সালে বঙ্গঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ৬ দফা দাবি উত্থাপন করে যা ‘৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। মূলত সকল ক্ষেত্রে বাঙালিদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতেই ১৯৭০ সালের নির্বাচন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রশ্ন-২। বঙ্গবন্ধুকে কেন কারাগারে বন্দি করা হয়েছিল?
উত্তর: ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির দাবি ছয় দফা উত্থাপন করেন। এর মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানে স্বায়ত্তশাসনের দাবি তোলেন বঙ্গবন্ধু। এ কারণে বঙ্গবন্ধুসহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। এ মামলা আগরতলা মামলা নামে পরিচিত। এ মামলায় বঙ্গবন্ধুসহ অনেককে কারাগারে বন্দি করা হয়।
অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর:
১. ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভকরে। এটি ইংরেজি কত সাল ছিল?
ক. ১৯৪০
খ. ১৯৪৫
গ. ১৯৪৭ √
ঘ. ১৯৭১
২. রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকার রাজপথে মিছিলে কয়েকজন শহিদ হন। তন্মধ্যে অন্যতম হলেন-
ক. রফিক √
খ. আসাদ
গ. মতিউর
ঘ. শামসুজ্জোহা
৩. তুমি কত তারিখে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালন করতে বিদ্যালয়ে যাও?
ক. ২১শে ফেব্রুয়ারি √
খ. ২৬শে মার্চ
গ. ১০ই এপ্রিল
ঘ. ১৬ই ডিসেম্বর
৪. শহিদ দিবসে তুমি কীভাবে শহিদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে থাক?
ক. সমাবেশ করে
খ. গান গেয়ে
গ. মিছিল করে
ঘ. ফুল দিয়ে √
৫. লিটনও আমার মতো স্বাধীন বাংলাদেশের বাসিন্দা। স্বাধীনতা যুদ্ধের বছর বলতে আমরা কোন সালকে বুঝি?
ক. ১৯৪৮ সাল
খ. ১৯৪৭ সাল
গ. ১৯৭১ সাল √
ঘ. ১৯৬৯ সাল
৬. আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান হয়। কে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হন?
ক. রফিক
খ. সালাম
গ. জব্বার
ঘ. আসাদ √
৭. বঙ্গবন্ধুসহ আরো অনেকের বিরুদ্ধে কেন আগরতলা মামলা দেয়া হয়?
ক. ভাষা আন্দোলনের জন্য
খ. ৬ দফা দাবির জন্য √
গ. ১১ দফা দাবির জন্য
ঘ. গণঅভ্যুত্থানের দাবির জন্য
শূন্যস্থান পূরণ:
প্রশ্ন-১। পাকিস্তানের রাজধানী ছিল — পাকিস্তানে।
উত্তর: পশ্চিম।
প্রশ্ন-২। পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী — রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছিল।
উত্তর: উর্দুকে।
প্রশ্ন-৩। ১৯৫২ সালে — মিছিলে গুলিবর্ষণ করে।
উত্তর: পুলিশ।
প্রশ্ন-৪। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা — পালন করি।
উত্তর: শহিদ দিবস।
প্রশ্ন-৫। ভাষা শহিদদের স্মরণে গড়ে তোলা হয় —।
উত্তর: শহিদ মিনার।
প্রশ্ন-৬। ছয় দফার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু — দাবি তোলেন।
উত্তর: স্বায়ত্তশাসনের।
প্রশ্ন-৭। ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে — বিজয়ী হয়।
উত্তর: যুক্তফ্রন্ট।
প্রশ্ন-৮। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ — লাভ করে।
উত্তর: সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
প্রশ্ন-৯। ২৬ শে মার্চ শুরু হয় আমাদের — সংগ্রাম।
উত্তর: স্বাধীনতা।
প্রশ্ন-১০। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে — ভাষণ দেন।
উত্তর: ঐতিহাসিক।
শুদ্ধ/অশুদ্ধ নির্ণয়:
১. পাকিস্তানের রাজধানী ছিল ভারতে।
২. ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান বৃটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে।
৩. ভাষাশহিদদের স্মরণে ঢাকায় শহিদমিনার গড়ে তোলা হয়।
৪. ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট পরাজিত হয়।
৫. প্রতি বছর ২৬ মার্চ আমরা শহিদ দিবস হিসেবে পালন করি।
৬. ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম।
৭. পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙে দেয়।
৮. ১৯৭১ সালে ১০ই এপ্রিল বাংলাদেশে প্রথম অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়।
৯. বঙ্গবন্ধু হলেন স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি।
১০. মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশলক্ষ মানুষ শহিদ হন।
উত্তর: ১. অশুদ্ধ; ২. শুদ্ধ; ৩. শুদ্ধ; ৪. অশুদ্ধ; ৫. অশুদ্ধ; ৬. শুদ্ধ; ৭. শুদ্ধ; ৮. শুদ্ধ; ৯. শুদ্ধ; ১০. শুদ্ধ।
৪. মিলকরণ: ⮯
গাইড ও সাজেশন পেতে আমাদের অ্যাপটি ইন্সটল করো 👉 Install Now |
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন-১। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বাংলার দামাল ছেলেরা আন্দোলন করে কেন?
উত্তর: পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে চাপিয়ে দিতে চাইলে ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বাংলার দামাল ছেলেরা আন্দোলন করে।
প্রশ্ন-২। ভাষা শহিদদের স্মরণে কী গড়ে তোলা হয়েছে বলে তুমি জান?
উত্তর: ভাষা শহিদদের স্মরণে শহিদ মিনার গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রশ্ন-৩। যারা ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছেন আমরা তাদেরকে কী বলি?
উত্তর: যারা ভাষা আন্দোলনে জীবন দিয়েছেন আমরা তাদেরকে ভাষা শহিদ বলি।
প্রশ্ন-৪। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে একুশে ফেব্রুয়ারিতে কী দিবস পালিত হয়?
উত্তর: প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে একুশে ফেব্রুয়ারিতে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ পালিত হয়।
প্রশ্ন-৫। তোমার মতে ‘যুক্তফ্রন্ট’ কী?
উত্তর: ‘যুক্তফ্রন্ট’ হলো একটি রাজনৈতিক জোট যা ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ১৯৫৪ সালে গড়ে উঠে।
প্রশ্ন-৬। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা কেন দেওয়া হয় বলে মনে কর?
উত্তর: ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা উত্থাপন করেন। এ কারণে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা মামলা দেওয়া হয়।
প্রশ্ন-৭। তোমার মতে ১৯৬৯ সালে কেন গণঅভ্যুত্থান হয়?
উত্তর: ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দাবি উত্থাপন করলে ‘পাকিস্তান সরকার আগরতলা মামলায় জড়িয়ে তাকে কারাগারে বন্দি করেন। বঙ্গবন্ধুসহ সকল কারাবন্দিকে মুক্ত করার জন্য ছাত্রজনতা আন্দোলন শুরু করে এবং তা একসময় গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয় যা ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান নামে খ্যাত।
প্রশ্ন-৮। গণঅভ্যুত্থানে নিহত দুইজন শহিদের নাম লেখ।
উত্তর: গণঅভ্যুত্থানে নিহত দুইজন শহিদদের নাম হলো: (১) শহিদ আসাদ ও (২) শহিদ ড. শামসুজ্জোহা।
প্রশ্ন-৯। গণঅভ্যুত্থানের ফলে পাকিস্তানের কোন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন?
উত্তর: গণঅভ্যুত্থানের ফলে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।
প্রশ্ন-১০। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিতে গিয়ে কী বলেন?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিতে গিয়ে বলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
প্রশ্ন-১১। ‘কালো রাত’ বলতে তুমি কী বোঝ?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের রাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যা চালায়। তাই এই রাতকে ‘কালো রাত’ বলে।
প্রশ্ন-১২। কখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হয় বলে তুমি মনে কর?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ তারিখে মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।
বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন-১। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কে ছিলেন? ১৯৭০-এর নির্বাচনের ফলাফল কী ছিল?
উত্তর: ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়লাভ করে। বিপুল ভোটে জয়লাভ করলেও ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগকে সরকার গঠন করতে দেননি। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সারাদেশে বিক্ষোভ ও হরতাল চলতে থাকে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আন্দোলনের কর্মসূচি হিসাবে হরতাল-অবরোধ শুরু হয়।
প্রশ্ন-২। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি কী হয়েছিল? ছয়টি বাক্যে লেখ।
উত্তর: দেশ বিভাগের পরেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলা ভাষা নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে। ফলে এ নিয়ে পর্যায়ক্রমে আন্দোলন গড়ে উঠে। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলন চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করেছিল। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকার রাজপথে মিছিল বের হয়। সেই মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। সেখানে রফিক, সালাম, জব্বার, বরকত, শফিউরসহ অনেকে শহিদ হন।
প্রশ্ন-৩। মুক্তিযুদ্ধ কখন সংঘটিত হয়? এ যুদ্ধ সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর: মুক্তিযুদ্ধ ১৯৭১ সালে সংঘটিত হয়।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য হলো:
১. ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ চলে।
২. মুক্তিযুদ্ধ মুজিবনগর সরকারের অধীনে পরিচালিত হয়।
৩. এ যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ লোক শহিদ হন।
৪. রাজাকার, আলবদর নামে পরিচিত কিছু সংখ্যক বাঙালি পাকিস্তানিদের পক্ষে হত্যা, অগ্নিসংযোগ ও বর্বর নির্যাতন চালায়।
৫. এ যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন ভূ-খন্ডের পাশাপাশি একটি নতুন মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও সংগীত পাই।
প্রশ্ন-৪। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু কোথায় ভাষণ দেন? ১৯৭১-এর ৭ই মার্চ কী কারণে বিখ্যাত? পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ভাষণ দেন। ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও যখন আওয়ামী লীগকে সরকার গঠন করতে দেওয়া হয়নি, তখন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ প্রচন্ড ক্ষোভে ফেটে পড়ে। সারাদেশে বিক্ষোভ ও হরতাল চলতে থাকে। এ প্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানে এক বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এই জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
প্রশ্ন-৫। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ কত সালে সংঘটিত হয়? এ যুদ্ধ সংঘটিত হয় কেন? ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘গুরুত্বপূর্ণ কেন? চারটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ১৯৭১ সালে সংঘটিত হয়। পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ, নির্যাতন ও অধিকারের কারণে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৬ই ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর বাংলাদেশ ১৬ই ডিসেম্বর তারিখে বিজয় লাভ করে। পাকিস্তানি বাহিনী নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। তাই এ দিবসটি আমাদের জাতীয় জীবনে স্মরণীয় এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন-৬। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কখন নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে? তারা বাঙালিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কেন? ২৫শে মার্চকে কালোরাত বলা হয় কেন? চারটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙালিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
বাঙালিদের স্বাধীনতা সংগ্রামকে স্তব্ধ করে দেওয়ার জন্য তারা বাঙালিদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ আমাদের ইতিহাসে এক কলঙ্কিত রাত।
১৯৭১ সালের এই রাতে বর্বর শাসক ইয়াহিয়ার নির্দেশে পাকিস্তানি সৈন্যরা ঢাকাসহ সারাদেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিনা কারণে হত্যা করে অসংখ্য ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ, ইপিআর ও সাধারণ নারী পুরুষকে। আর এ কারণেই ২৫শে মার্চকে কালোরাত বলা হয়।
প্রশ্ন-৭। গণঅভ্যুত্থান কখন সংঘটিত হয়? গণ-অভ্যুত্থান সম্পর্কে যা জান পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর: গণঅভ্যুত্থান ১৯৬৯ সালে সংঘটিত হয়।
১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তানে ছাত্রদের আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নিলে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী মরিয়া হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুসহ সকল রাজবন্দীকে মুক্ত করার জন্য ছাত্র-জনতা আন্দোলন শুরু করে এবং তা এক সময় গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়, যা ‘৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান’ নামে খ্যাত। এই আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ঢাকা সেনানিবাসে আগরতলা মামলায় বন্দি সার্জেন্ট জহুরুল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদ, নবকুমার ইনস্টিটিউটের ছাত্র মতিউর এবং শ্রমিক রুস্তম পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এতে পূর্ব পাকিস্তান আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে সরকার বাধ্য হয়ে শেখ মুজিবকে মুক্তি দেয় এবং আগরতলা মামলা প্রত্যাহার করে নেয়।