৫ম শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ১০ প্রশ্নোত্তর: প্রতিদিন আমরা প্রচুর তথ্য পাই। এই তথ্য প্রতিনিয়তই বাড়ছে। কিছু তথ্য সঠিক আবার কিছু তথ্য সঠিক নয়। তথ্য খুঁজে পেতে, বুঝতে, মূল্যায়ন ও ব্যবহার করতে আমাদের যথাযথ দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
আমাদের জীবনে তথ্যের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। তথ্য আমাদের নতুন কিছু শিখতে ও কী করতে হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। তাই আমাদের তথ্য জানতে হবে এবং সকলের সাথে তা বিনিময় করতে হবে। তথ্য বিনিময় হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কোনো তথ্য বন্ধু, পরিবার এবং অন্যান্য মানুষের সঙ্গে আদান প্রদান করা হয়। তথ্য বিনিময় আমাদের নিরাপদ থাকতে, ভালোভাবে বাঁচতে এবং বিপদ থেকে রক্ষা পেতে সাহায্য করে।
আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে তথ্য বিনিময়ের গুরুত্ব অপরিসীম। দেশে সংক্রামক রোগ যেমন-ফ্লু ছড়িয়ে পড়তে পারে এই তথ্যটি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত হলে ফুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পাবে। মানুষ এই তথ্যটি জানতে পেরে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগ থেকে রক্ষা পাবে। আবার মনে কর, আবহাওয়াবিদরা জানালেন যে, প্রচণ্ড জলোচ্ছ্বাস হবে। এই তথ্যটি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত হলে সমুদ্র উপকূলের অনেক মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষা পাবে। সমুদ্রের মাছ ধরার ট্রলার ও জাহাজগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করতে পারবে।
আমরা বিভিন্নভাবে তথ্য বিনিময় করতে পারি। যেমন-অন্যের সাথে কথা বলে, চিঠি লিখে ইত্যাদি। বর্তমানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) তথ্য বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ইমেইল, টেলিভিশন, রেডিও, মোবাইল ফোন ইত্যাদি হলো আইসিটি। আইসিটি মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ সহজ করেছে। আইসিটি ব্যবহার করে সহজেই তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিনিময়, বিস্তার ও ব্যবহার করা যায়।
২. তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিনিময়:
প্রশ্ন: প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা কীভাবে তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও বিনিময় করতে পারি?
(১) ইন্টারনেট ব্যবহার করে আমরা কীভাবে সহজে তথ্য সংগ্রহ করতে পারি?
আমরা বই, খবরের কাগজ, টেলিভিশন অথবা রেডিওর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করতে পারি। তবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা অনেক সহজ। ইন্টারনেট হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের কম্পিউটারগুলোকে সংযুক্তকারী বিশাল নেটওয়ার্ক। আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্যটি কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে সহজেই পেতে পারি। এছাড়া এতে নিজস্ব উদ্ভাবন ও সংগৃহীত তথ্য প্রকাশ করতে পারি।
নিচে ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের কিছু মৌলিক ধাপ দেওয়া হলো-
১) search ইঞ্জিন যেমন- গুগল (google), ইয়াহু (yahoo), পিপীলিকা (pipilika) ইত্যাদি ব্যবহার করি।
২) যে বিষয়ের তথ্যটি অনুসন্ধান করছি সে বিষয় সম্পর্কিত “মূল শব্দটি” “Search Bar” এ লিখে “search” লেখাটিতে ক্লিক করি অথবা “Enter key” তে চাপ দেই।
৩) সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের যে তালিকাটি এসেছে সেখান থেকে ওয়েবসাইট বেছে নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যটি সংগ্রহ করি।
৪) যতবার প্রয়োজন ততবার পূর্বের ধাপগুলো পুনরাবৃত্তি করি। অথবা আরও সুনির্দিষ্ট ‘মূল শব্দ’ নির্বাচন করে প্রয়োজনীয় তথ্যটি অনুসন্ধান করি।
২) কীভাবে তথ্য সংরক্ষণ করব
ইন্টারনেটে তথ্যটি অনুসন্ধানের পর প্রাপ্ত তথ্যটি আমরা খাতায় লিখে, ছবি তুলে, ভিডিও রেকর্ড করে সংরক্ষণ করতে পারি। বর্তমানে আমরা তথ্য সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তি যেমন- পেন ড্রাইভ, সিডি, ডিভিডি, মেমোরি কার্ড ইত্যাদি ব্যবহার করি।
(৩) কীভাবে প্রযুক্তির সাহায্যে তথ্য বিনিময় করব?
প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে অন্যদের সাথে তথ্য বিনিময় করতে পারি তা আমরা চতুর্থ শ্রেণিতে শিখেছি। টেলিফোন বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আমরা মানুষের সাথে কথা বলতে পারি। তথ্য আদান প্রদানের জন্য চিঠি লিখতে পারি। ক্যামেরার মাধ্যমে আমরা ছবি তুলে বা ভিডিও করে তথ্য বিনিময় করতে পারি। বর্তমানে খুদেবার্তা (এসএমএস), ইমেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক বা টুইটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমেও তথ্য আদান প্রদান করতে পারি।
৫ম শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ১০ প্রশ্নোত্তর:
১. সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন (✔) দিই।
১) তথ্য সংরক্ষণের জন্য কোনটি ব্যবহার করা হয়?
ক. টিভি
খ. রেডিও
গ. সংবাদপত্র
ঘ. সিডি✔
২) তথ্য বিনিময়ের জন্য কোন যন্ত্রটি ব্যবহার করা হয়?
ক. বাস
খ. থার্মোমিটার
গ. মোবাইল ফোন✔
ঘ. ঘড়ি
গাইড ও সাজেশন পেতে আমাদের অ্যাপটি ইন্সটল করো 👉 Install Now |
২. সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
১) তিনটি তথ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তির নাম লিখি।
উত্তর: তিনটি তথ্য সংরক্ষণ প্রযুক্তির নাম হলো-
১. সিডি, ২. মেমোরি কার্ড ও ৩. পেনড্রাইভ।
২) কোন প্রযুক্তির সাহায্যে তথ্য বিনিময় করা যায়?
উত্তর: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এর সাহায্যে তথ্য বিনিময় করা যায়। যেমন- কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ই-মেইল, মোবাইল ফোন ইত্যাদি।
৩. তথ্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: তথ্য আমাদের নতুন কিছু শিখতে সাহায্য করে। যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে তা কিভাবে করতে হবে সে ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তথ্য জানা না থাকলে কোনো কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব নয়। তাই তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. ইন্টারনেট কী?
উত্তর: ইন্টারনেট হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের কম্পিউটারগুলোকে সংযুক্তকারী এক বিশাল নেটওয়ার্ক।
৫) বাংলাদেশে ব্যবহৃত তিনটি “Search engine” এর নাম লিখি।
উত্তর: বাংলাদেশে ব্যবহৃত তিনটি ‘Search engine’ এর নাম হলো-১. গুগল (google), ২. ইয়াহু (yahoo) ও ৩. পিপীলিকা (pipilika)।
৩. বর্ণনামূলক প্রশ্ন:
প্রশ্ন ১। “বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আসছে” এই তথ্যটি তুমি টেলিভিশন থেকে পেলে। এখন তুমি কী করবে?
উত্তর: “বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় আসছে” টেলিভিশন থেকে পেলে নিম্নলিখিত কাজগুলো করব:
১. প্রথমেই পরিবার ও প্রতিবেশীর সাথে তথ্যটি বিনিময় করব।
২. দূরে থাকা পরিচিতজনদের মোবাইল ফোন বা টেলিফোনের মাধ্যমে তথ্যটি জানাব।
৩. খুদে বার্তা (এসএমএস), ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক বা টুইটার ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমেও সবাইকে জানাতে পারি।
৪. পরিবার ও পরিচিত সবাইকে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় বা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে যাব।
প্রশ্ন ২। কীভাবে আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করব তা বর্ণনা কর।
উত্তর: নিম্নলিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করে আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করব-
১. যেকোনো’ একটি ‘Search engine’ যেমন ‘google’ ব্যবহার করব।
২. যে বিষয়ের তথ্য অনুসন্ধান করছি সে বিষয় সম্পর্কিত মূল শব্দটি ‘Search Bar’ এ লিখব।
৩. তারপর লেখাটিতে বা ‘Enter Key’ তে চাপ দিব।
৪. সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের যে তালিকাটি এসেছে, সেখান থেকে ওয়েবসাইট বেছে নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যটি সংগ্রহ করব
প্রশ্ন ৩। কেন তথ্য খুঁজে পেতে, বুঝতে, মূল্যায়ন ও ব্যবহার করতে আমাদের যথাযথ দক্ষতা অর্জন করতে হবে?
উত্তর : বর্তমান সময়ে তথ্যের বেশিরভাগ উৎসগুলো আইসিটি
নির্ভর। বর্তমান সময়ে তথ্যের সবচেয়ে বড় উৎস হলো ইন্টারনেট। ইন্টারনেট থেকে তথ্য লাভের ক্ষেত্রে বিভিন্ন আইসিটি প্রযুক্তি যেমন- কম্পিউটার, মোবাইল ফোন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহের মৌলিক ধাপগুলোও সঠিকভাবে জানা থাকতে হবে। সংগৃহীত তথ্যের যথার্থতা ও মূল্যায়নও গুরুত্বপূর্ণ। সংগৃহীত তথ্যটি সঠিক ও কার্যকর না হলে তা মূল্যহীন। অর্থাৎ তথ্য আহরণ, বুঝা, মূল্যায়ন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক জ্ঞান থাকা জরুরি। তাই এসবের জন্য যথাযথ দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
প্রশ্ন ৪। তথ্য বিনিময় না করলে কী হতে পারে ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: তথ্য লাভের পর তা বিনিময় করা জরুরি। যদি তথ্য বিনিময় করা না হয় তবে নিম্নরূপ সমস্যা হতে পারে-
১. নিরাপদ জীবনযাপন সম্ভব হবে না।
২. ভালোভাবে বাঁচা যাবে না।
৩. বিভিন্ন বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।
৪. জীবন ও সম্পদের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
৫. রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।
প্রশ্ন ৫। তোমার একজন বন্ধু জাপানে থাকে। তুমি তার সাথে তথ্য বিনিময় করতে চাও। কোন কোন উপায়ে তুমি তার সাথে তথ্য বিনিময় করতে পার? এর জন্য তোমার কী কী প্রযুক্তির দরকার হবে? লেখ।
উত্তর: জাপানে থাকা বন্ধুর সাথে তথ্য বিনিময়ে নিচের
উপায়গুলো অবলম্বন করতে পারি-
১. টেলিফোন বা মোবাইল ফোনে কথা বলার মাধ্যমে,
২. ই-মেইল আদান-প্রদানের মাধ্যমে,
৩. চিঠি লিখে,
৪. এসএমএস এর মাধ্যমে,
৫. ইন্টারনেট নির্ভর অন্যান্য মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে।