শব্দদূষণ সুকুমার বড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণি বাংলা: আমাদের চারপাশে সব সময়ই কোনো না কোনো শব্দ হতে থাকে। বিশেষ করে শহরে। গ্রামেও শব্দ শোনা, যায়, তবে তা মিষ্টি-মধুর শব্দ। গ্রামে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি তাদের স্বরে ডাকে। গাছে গাছে পাখপাখালি মিষ্টি-মধুর সুরে গান করে। রাতে কুকুরের দল জোরে ডেকে ওঠে। তারপরও শহরের তুলনায় গ্রামে শব্দদূষণ কম হয়। শহরে ঝাঁকে ঝাঁকে পাতি কাক ডেকে ওঠে। গাড়ির হর্নের হাঁকে ঘুমানো যায় না। চারপাশে সিডি, টিভি, টেলিফোন বাজে। দরজায় কলিংবেল বাজে। ছোটদের স্কুল মাঠে হইচইয়ের শব্দে কান পাতা দায় হয়ে। পড়ে। তাই শহরের জীবনজ্বালা শব্দদূষণ গ্রামে নেই। গ্রামে জীবন কাটে মিষ্টি-মধুর সুরের আবেশে, ছন্দে-আনন্দে।
শব্দদূষণ সুকুমার বড়ুয়া পঞ্চম শ্রেণি বাংলা:
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
নিশিরাত, কিচির মিচির, ফেরিঅলা, শব্দদূষণ।
উত্তর:
নিশিরাত – গভীর রাত।
কিচির মিচির – পাখির ডাকাডাকির আওয়াজ।
ফেরিঅলা – রাস্তায় বা বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে ঘুরে যারা জিনিসপত্র বিক্রি করেন।
শব্দদূষণ – অত্যন্ত কোলাহল বা নানা রকম শব্দের মিশ্রণ।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
ফেরিঅলা, নিশিরাত, শব্দদূষণ, কিচির মিচির;
ক. ___চেঁচামেচি করো না, সবাই ঘুমুচ্ছে।
খ. ভোর বেলাতেই___পাখির শুনতে শুনতে আমার ঘুম ভাঙে।
গ. ___হাঁক দিচ্ছে-থালাবাসন চাই?
ঘ. ___আমাদের শোনার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
উত্তর:
ক. নিশিরাত চেঁচামেচি করো না, সবাই ঘুমুচ্ছে।
খ. ভোর বেলাতেই কিচির মিচির পাখির শুনতে শুনতে আমার ঘুম ভাঙে।
গ. ফেরিঅলা হাঁক দিচ্ছে-থালাবাসন চাই?
ঘ. শব্দদূষণ আমাদের শোনার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৩. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি।
প্রশ্ন ক. কবিতায় কোন কোন পশু ও পাখির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর: ‘শব্দদূষণ’ কবিতায় নানা পশু ও পাখির কথা বলা হয়েছে। সেগুলো নিচে দেওয়া হলো: পশুর নাম: গরু, কুকুর। পাখির নাম: হাঁস, কবুতর, মোরগ, দোয়েল, চড়ুই, ঘুঘু, টুনটুনি, পাতি কাক।
প্রশ্ন খ. শহরে কী কারণে শব্দদূষণ হয়?
উত্তর: শহরে নানা কারণে শব্দদূষণ ঘটে। যেমন- ঝাঁকে ঝাঁকে পাতি কাকের উচ্চ স্বরে ডাক, গাড়ির হর্নের শব্দ, সিডি, টিভি, টেলিফোন, দরজার বেল, ফেরিঅলার ডাকের শব্দ, বিদ্যালয়ের মাঠে ছোটদের হইচই ইত্যাদি।
প্রশ্ন গ. কুকুরের ডাক আর পাখির ডাকের মধ্যে কোনটি তোমার ভালো লাগে? কেন?
উত্তর: কুকুরের ডাক আর পাখির ডাকের মধ্যে পাখির ডাক আমার ভালো লাগে।
ভালো লাগার কারণ: কুকুর খুব জোরে চিৎকার করে ডাকে, যা শুনে আমার ভয় ও বিরক্তি লাগে। কিন্তু পাখি গাছের ডালে বসে মনের সুখে কিচিরমিচির শব্দ করে। এ শব্দ শুনে ভয় না লেগে আনন্দ পাওয়া যায়। তাছাড়া পাখির ডাক কানে শুনতেও ভালো লাগে, শব্দদূষণও ঘটায় না। পাখির ডাকে এক ধরনের সুর থাকে যা আমার মনে আনন্দ এনে দেয়। এসব কারণে পাখির ডাক আমার ভালো লাগে।
প্রশ্ন ঘ. গ্রামের মানুষ কোন পাখির ডাক শুনে ঘুম থেকে ওঠেন?
উত্তর: গ্রামে দিনের বেলা প্রায় সময়ই নানান পাখির ডাকের শব্দ শোনা যায়। এগুলোর মধ্যে মোরগ, হাঁস, কবুতর, দোয়েল, চড়ুই, ঘুঘু, টুনটুনি অন্যতম। তবে গ্রামের মানুষ বিশেষ করে মোরগের ডাক শুনে ঘুম থেকে ওঠেন।
৪. শহুরে জীবনের সাথে গ্রামের জীবনের তুলনা করি ও লিখি।
বিষয়বস্তু | শহুরে জীবন | গ্রামের জীবন |
---|---|---|
পরিবেশ | যান্ত্রিক | প্রাকৃতিক |
শব্দ | শব্দদূষণ ঘটে | শব্দদূষণ ঘটে না |
রাস্তা-ঘাট | পাকা ও প্রশস্ত | কাঁচা ও সংকীর্ণ |
জীবনযাত্রা | ব্যয়বহুল ও কঠিন | খরচ কম ও সহজ |
হাট-বাজার | বেশি | কম |
৫. কথাগুলো বুঝে নিই।
পল্লির সেই সুরে ভরে যায় মন
শহুরে জীবন জ্বালা- শব্দদূষণ।
শহরে শান্তিতে বসবাস করা মুশকিল। কারণ হাজার রকমের শব্দ কান ঝালাপালা, করে দেয়। গ্রামে শব্দ অনেক কম, তার ফলে মনের শান্তি বজায় থাকে।
৬. কবিতাটি আবৃত্তি করি।
উত্তর: কবিতাটি প্রথমে সঠিক উচ্চারণে বারবার পড়ে মুখস্থ কর। তারপর কবিতাটির ভাব ও ভাষা অনুযায়ী আবৃত্তি কর। এক্ষেত্রে তোমরা শ্রেণিশিক্ষকের সাহায্য নিতে পার।