চতুর্থ শ্রেণি হাত ধুয়ে নাও প্রশ্ন উত্তর: হাত ধুয়ে নাও গল্পের অন্তু বেশ চঞ্চল। সে ঠিকমতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকত না। খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নিত না। তাই তার সর্দি-জ্বর লেগেই থাকত। অন্তুর মামা তার চলাফেরা ও অভ্যাসগুলো দেখে তাকে এ সম্পর্কে বলেন এবং নিজে অন্তুর হাত-মুখ ধুয়ে -পরিষ্কার করে দেন। আর অন্তুকে বলেন- খাওয়ার আগে নিয়মিত হাত ধুতে ও গোসল করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে।
চতুর্থ শ্রেণি হাত ধুয়ে নাও প্রশ্ন উত্তর:
১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
চঞ্চল, খাবলে খাওয়া, চেটেপুটে, অসুখ-বিসুখ, টয়লেট, জীবাণু, ভাগিনা, সতর্ক, অভ্যাস।
উত্তর:
চঞ্চল→অস্থির, অশান্ত, ছটফটে।
খাবলে খাওয়া → এক মুঠোয় যতটুকু খাবার তুলে খাওয়া যায় তাই বোঝায়।
চেটেপুটে → জিহ্বা আর ঠোঁট দিয়ে একসাথে চেটে পরিষ্কার করে খাওয়া।
অসুখ-বিসুখ →রোগ-ব্যাধি।
টয়লেট →যেখানে পায়খানা-প্রস্রাব করা হয়, শৌচাগার।
জীবাণু → খালি চোখে দেখা যায় না এমন ক্ষতিকারক ক্ষুদ্র প্রাণী বা জীব।
ভাগিনা →বোনের ছেলে।
সতর্ক →সাবধান, হুঁশিয়ার।
অভ্যাস →স্বভাব।
২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
অসুখ-বিসুখ, চঞ্চল, খাবলে খেতে, চেটেপুটে, রোগ বালাই
ক. চড়–ই পাখি অনেক ……… হয়।
খ. ক্ষুধার্ত লোকটি খাবার পেয়ে ………থাকল।
গ. মজার আচার পেয়ে সবাই ………খাচ্ছে।
ঘ. শরীরের যত্ন না নিলে ………লেগেই থাকবে।
ঙ. .…… থেকে বাঁচার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা চাই।
উত্তর:
ক. চড়–ই পাখি অনেক চঞ্চল হয়।
খ. ক্ষুধার্ত লোকটি খাবার পেয়ে খাবলে খেতে থাকল।
গ. মজার আচার পেয়ে সবাই চেটেপুটে খাচ্ছে।
ঘ. শরীরের যত্ন না নিলে অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকবে।
ঙ. রোগ বালাই থেকে বাঁচার জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা চাই।
৩. বাংলা ভাষায় অনেক রকমের শব্দ রয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কিছু বিদেশি। এই লেখাটিতে টয়লেট, বিরিয়ানি, জরুরি- এগুলো বিদেশি শব্দ। এরকম আরও শব্দ জেনে নিই এবং তা দিয়ে বাক্য রচনা করি।
রিক্সা, সরকারি, আদালত, বেঞ্চ, স্টেডিয়াম, স্টেশন, বাস
উত্তর:
রিক্সা -রিক্সা পরিবেশ দূষণ করে না।
সরকারি -আমাদের বিদ্যালয়টি সরকারি।
আদালত -কেউ অন্যায় করলে আদালত তার বিচার করে।
বেঞ্চ -স্কুলের বেঞ্চে বসে আমরা লেখাপড়া করি।
স্টেডিয়াম -ঢাকার গুলিস্তানে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম অবস্থিত।
স্টেশন -কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রেন চলাচল করে।
বাস -ঈদের সময় আমরা বাসে চড়ে গ্রামের বাড়িতে যাই।
৪. প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখে বলি ও লিখি।
প্রশ্ন ক. অন্তু মামার কাছ থেকে কী সম্পর্কে জেনেছিল?
উত্তর: অন্তু মামার কাছ থেকে হাত ধোয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জেনেছিল।
অন্তু এতটাই চঞ্চল ছিল যে হাত না ধুয়েই খেতে বসত। ঠিকমতো সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করত না। ফলে তার সর্দি-জ্বর, অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকত। এসব দেখে অনুর মামা তাকে খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নিতে বলেন এবং টয়লেট ব্যবহার করার পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করতে বলেন। ঠিকমতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলেই বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, অন্তু তার মামার কাছ থেকে সে সম্পর্কেই জেনেছিল।
প্রশ্ন খ. কেন অন্তুর অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকত?
উত্তর: ঠিকমতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না থাকার কারণে অনুর এটা-সেটা অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকত। অনু স্বভাবে এতটাই চঞ্চল ছিল যে বাইরে ধুলাবালির মধ্যে
খেলাধুলা করে এসেও হাত না ধুয়ে খেতে বসত। টয়লেট থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করত না। নিয়মিত গোসল করত না। ফলে তার এটা-সেটা অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকত।
প্রশ্ন গ. সব সময় হাত পরিষ্কার না রাখলে কী হয়?
উত্তর: সব সময় হাত পরিষ্কার না রাখলে হাতে লেগে থাকা জীবাণু খাবারের সঙ্গে আমাদের পেটে চলে যায়। ফলে ঐসব জীবাণু থেকে পেটের অসুখ, সর্দি-জ্বর ইত্যাদি রোগ হয়। তাই কিছু খাওয়ার আগে দুই হাত সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হয়। তা না হলেই বিভিন্ন অসুখ-বিসুখে ভুগতে হয়।
ঘ) হাত ধুয়ে পরিষ্কার রাখার সঙ্গে আর কী করতে হয়?
উত্তর: হাত ধুয়ে পরিষ্কার রাখার সাথে সাথে হাতের নখগুলোও পরিষ্কার রাখতে হয়।
প্রশ্ন ঙ. হাত পরিষ্কার দেখালেও হাতের মধ্যে জীবাণু কেমন করে থাকে?
উত্তর: হাত পরিষ্কার দেখালেও হাতের মধ্যে বিভিন্নভাবে জীবাণু লেগে থাকে। কারণ জীবাণু এত বেশি ক্ষুদ্র যে তা খালি চোখে দেখা যায় না। আমরা হাত দিয়ে অনেক কিছু ধরি, অনেকের হাতের সঙ্গে হাত মেলাই, ধুলাবালির মধ্যে খেলাধুলা করি, চলাফেরা করি। এ সবকিছুতেই জীবাণু থাকতে পারে যা হাতে লেগে যায়। তাই খাওয়ার আগে বা টয়লেট করার পর সাবান দিয়ে হাত না ধুলে তাতে জীবাণু থাকে।
প্রশ্ন চ. কী অভ্যাস করলে অসুখ-বিসুখ অনেক কমে যায়?
উত্তর: ভালো করে হাত ধোয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস করলেই অসুখ-বিসুখ অনেক কমে যায়। পেটের অসুখ কিংবা সর্দি-জ্বরসহ বেশিরভাগ অসুখই হাত থেকে খাবারের মাধ্যমে পেটে জীবাণু প্রবেশের কারণে হয়। অনেক ছেলে-মেয়েই আছে যারা ঠিকমতো হাত ধোয় না। টয়লেট থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে না। ফলে তাদের হাতে থাকা জীবাণু খাবারের মাধ্যমে পেটে চলে যায়। আর পেটের অসুখসহ সর্দি-জ্বর এবং বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ হয়। তাই ভালো করে হাত ধোয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার অভ্যাস করলেই অসুখ-বিসুখ অনেক কমে যায়।
প্রশ্ন ছ. অন্তু মামাকে কী কথা দিয়েছিল?
উত্তর: অন্তু মামাকে কথা দিয়েছিল যে সে ঠিকমতো হাত ধোবে। আর সবাইকে বলবে, সুস্থ থাকতে চাও তো হাত ধুয়ে নাও।
৫. গোসল করা কেন দরকার- পাঁচটি বাক্যে বলি ও লিখি।
উত্তর: গোসল করার প্রয়োজনীয়তা: সমস্ত শরীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য গোসল করা একান্ত দরকার। গোসল করলে শরীর, মন ভালো থাকে। অসুখ-বিসুখ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ধুলাবালি ও রোগ-জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই গোসল করা দরকার।
৬ . বিপরীত শব্দ লিখি এবং তা দিয়ে একটি করে বাক্য লিখি।
সুগন্ধ -দুর্গন্ধ :আবর্জনার দুর্গন্ধে পরিবেশ নষ্ট হয়।
হাত -পা :বাইরে থেকে এসে হাত-পা ধুতে হয়।
প্রিয় -অপ্রিয় :আমি কারও অপ্রিয় হতে চাই না।
বকা -আদর :মা তার সন্তানকে আদর করেন।
হিসাব -বেহিসাব :বেহিসাবি হলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
সোজা -বাঁকা :বাঁকা লেখা দেখতে খারাপ লাগে।
৭. কর্ম-অনুশীলন।
ক) কেন আমরা হাত ধুয়ে থাকি তা বলি।
খ) শ্রেণিকক্ষে হাত ধোয়ার অভিনয় করে দেখাই।
উত্তর:
ক) আমাদের হাতে নানাভাবে অনেক ধরনের রোগ জীবাণু লেগে যায়। হাত পরিষ্কার না করলে এগুলো খাবারের সঙ্গে আমাদের শরীরের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এর ফলে আমরা নানা রকম রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত। এসব রোগ-ব্যাধি থেকে শরীরকে মুক্ত রাখতে আমরা হাত ধুয়ে থাকি।
খ) শ্রেণিকক্ষে হাত ধোয়ার অভিনয় করে দেখাতে হলে প্রথমেই একটি টিউবওয়েলকে বোঝাতে হবে। আর তা বোঝাতে টিউবওয়েলের হাতল চাপার অভিনয় করতে হবে। হাতল চেপে হাতে পানি নিতে হবে। পাশে থাকা সাবান নিয়ে হাতে ঘষতে হবে। তারপর আবার হাতল চেপে হাতে পানি নিয়ে ধুয়ে দেখাতে হবে।