চতুর্থ শ্রেণি: বড় রাজা ও ছোট রাজা অনুশীলনী প্রশ্ন উত্তর
চতুর্থ শ্রেণি: বড় রাজা ও ছোট রাজা

চতুর্থ শ্রেণি-বড় রাজা ও ছোট রাজা প্রশ্ন উত্তর

বড় রাজা ও ছোট রাজা প্রশ্ন উত্তর: বড় রাজা ছোট রাজা একটি হাস্যরসের ভাবার্থক গল্প। তবে এখানে ছোট রাজা ও বড় রাজা বলতে বোঝানো হয়েছে যে, বড়রা বড় বড় চিন্তা করে, ছোটদের কথা কখনোই ভাবে না। এ পৃথিবীতে যে বড়র চেয়ে ছোটদের অস্তিত্ব অনেক বেশি তা তাদের জানা নেই। তারা ভাবে বড় বড় হাতি ঘোড়া, বড় বড় কামান বারুদ আর বড় বড় সেনাপতি থাকলেই পৃথিবীতে সব কিছু করা সম্ভব।
নিচে চতুর্থ শ্রেণির বড় রাজা ও ছোট রাজা গল্পের প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হলো ।

চতুর্থ শ্রেণি-বড় রাজা ও ছোট রাজা প্রশ্ন উত্তর

১. শব্দগুলো পাঠ থেকে খুঁজে বের করি। অর্থ বলি।
দিগ্বিজয়, সেনাপতি, রাজত্ব, জয়ঢাক, চর, দূত, অগোচর, খাপ্পা, মন্ত্রণা, অণুবীক্ষণ, ফৌজ, অস্ত্র, সন্ধি, রথ-রথী, ঝুপঝাপ, রাজ্য, মুঠো।
উত্তর:
দিগ্বিজয় – চারদিকের নানান জায়গা জয় করা।
সেনাপতি – সেনাদলের প্রধান, প্রধান সৈনিক।
রাজত্ব – রাজার শাসন যেখানে চালু আছে।
জয়ঢাক – জয়ী হওয়ার পর যে ঢাক (একধরনের বাদ্য) বাজানো হয়।
চর – গোপন খবর সংগ্রহ করে দেন যিনি। যুদ্ধের কৌশল হিসেবে এই চর নিয়োগ করা হয়।
দূত – বার্তাবাহক।
অগোচর – চোখের আড়ালে থাকা।
খাপ্পা – রাগান্বিত হওয়া।
মন্ত্রণা – পরামর্শ।
অণুবীক্ষণ – চোখে দেখা যায় না এরকম জিনিস দেখার যন্ত্র।
ফৌজ – সৈনিক।
অস্ত্র – হাতিয়ার।
সন্ধি – চুক্তি হওয়া, বন্ধুত্ব।
রথ-রথী – রথে চড়ে যুদ্ধ করেন যিনি।
ঝুপঝাপ – পতনের শব্দ।
রাজ্য – রাষ্ট্র, যে দেশে পৃথক শাসন-ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত আছে।
মুঠো – মুষ্ঠি।

চতুর্থ শ্রেণি-বড় রাজা ও ছোট রাজা প্রশ্ন উত্তর

২. ঘরের ভিতরের শব্দগুলো খালি জায়গায় বসিয়ে বাক্য তৈরি করি।
ফাঁপরে, অন্যত্র, আন্দাজ, দিগ্বিজয়, রাজসিংহাসনে
ক. সমস্ত ছোট রাজ্য জয় করে রাজা …… বসলেন।
খ. রাজার খামখেয়ালিতে মন্ত্রী মহা …….. পড়লেন।
গ. রাজা ……… করে এসেছেন।
ঘ. শিকারের খোঁজে রাজা ………. যাচ্ছেন।
ঙ. রাজ্য জয়ের আনন্দে চারিদিকে …….. বাজছে।
চ. রাজা ……… করলেন ছোট রাজা পালিয়ে যেতে পারেন।
উত্তর:
ক. সমস্ত ছোট রাজ্য জয় করে রাজা রাজসিংহাসনে বসলেন।
খ. রাজার খামখেয়ালিতে মন্ত্রী ফাঁপরে পড়লেন।
গ. রাজা দিগ্বিজয় করে এসেছেন।
ঘ. শিকারের খোঁজে রাজা অন্যত্র যাচ্ছেন।
ঙ. রাজ্য জয়ের আনন্দে চারিদিকে জয়ঢাক বাজছে।
চ. রাজা আন্দাজ করলেন ছোট রাজা পালিয়ে যেতে পারেন।

৩. যুক্তবর্ণগুলো দেখি ও যুক্তবর্ণ দিয়ে গঠিত শব্দগুলো পড়ি ও লিখি।
উত্তর:
পাঠ্যবইয়ে উত্তর করা আছে।

৪. বাক্য রচনা করি।
রাজ্য, চর, রথ, মুঠো, রাজসিংহাসন
উত্তর:
রাজ্য -এ দেশ এক সময় কয়েকটি রাজ্যে বিভক্ত ছিল।
চর -চর রাজাকে রাজ্যের সব খবর দেয়।
রথ – রাজা রথে চড়ে শিকারে যান।
মুঠো -আমাকে একমুঠো চাল দাও।
রাজসিংহাসন- আমি রাজসিংহাসন চাই না।

৫. বাম পাশের শব্দাংশের সাথে ডান পাশের ঠিক শব্দাংশ মিলিয়ে বাক্য পড়ি ও লিখি।
বড় রাজা আর ছোট রাজা – সেখানে হাতি চলে না, ঘোড়া চলে না।
ক্রমে ক্রমে মস্ত বড় এই পৃথিবী – ঢোল হয়ে উঠল।
ছোট শহর এতটাই ছোট যে – বড় জিনিসকেই লক্ষ করে।
বড় রাজার আঙুল ফুলে – বড় রাজা জয় করে ফেললেন।
বড় বড় অস্ত্র – দিগ্বিজয় করতে চললেন।
উত্তর:
বড় রাজা আর ছোট রাজা ➙ দিগ্বিজয় করতে চললেন।
ক্রমে ক্রমে মস্ত বড় এই পৃথিবী ➙ বড় রাজা জয় করে ফেললেন।
ছোট শহর এতটাই ছোট যে ➙ সেখানে হাতি চলে না, ঘোড়া চলে না।
বড় রাজার আঙুল ফুলে ➙ ঢোল হয়ে উঠল।
বড় বড় অস্ত্র ➙ বড় জিনিসকেই লক্ষ করে।

চতুর্থ শ্রেণি-বড় রাজা ও ছোট রাজা প্রশ্ন উত্তর

৬. একই শব্দের ভিন্ন অর্থ শিখি।
চর – দূত।       
চর – নদীর চর।
চলা – পায়ে হাঁটা। 
চলা – চালিত হওয়া।
উত্তর: 
চর – দূত – রাজা গুপ্তচর মারফত খবর পেলেন।
চর – নদীর চর – নদীতে চর জেগে উঠেছে।
চলা – পায়ে হাঁটা – চলার পথে তাঁর সঙ্গে দেখা।
চলা – চালিত হওয়া – গাড়ি আবার চলতে শুরু করল।
৭. প্রশ্নগুলোর উত্তর বলি ও লিখি। 
(ক) বড় রাজা কীভাবে রাজ্য জয় করতে বের হলেন?
উত্তর: বড় রাজার রাজ্য জয়ের যাত্রা বিবরণী : বড় রাজার রাজ্য জয়ের কৌশল হলো- মস্ত জয়ঢাক পিটিয়ে, বড় বড় সেনাপতি সঙ্গে নিয়ে, বড় বড় কামান বন্দুক সাজিয়ে, হাতি ঘোড়ায় চড়ে রাজ্য জয় করা।
(খ) বড় রাজা ছোট রাজার উপর রেগে গেলেন কেন?
উত্তর: রেগে যাওয়ার কারণ : বড় রাজা ক্রমেই পৃথিবীর বড় বড় রাজ্য জয় করে চলছিলেন। এমন সময় চর এসে বলল, ‘মহারাজ, শুনে এলাম, ছোট রাজা ছোট রাজ্য নিয়ে সুখে রয়েছেন।’ এ কথা শুনেই বড় রাজা ছোট রাজার উপর রেগে গেলেন।
(গ) বড় রাজা কেন ছোট রাজ্যকে জয় করতে পারলেন না?
উত্তর: বড় রাজা রাজ্য জয় করতে পারেনি যে কারণে : ছোট রাজার রাজ্য ছিল খুবই ছোট। খালি চোখে দেখাই যায়না। সেখানে হাতি-ঘোড়া চলে না, কামান-বারুদ ঢুকে না। তাই বড় রাজা শেষ পর্যন্ত ছোট রাজার রাজ্যত্ব জয় করতে পারলেন না।
পরিশেষে বলা যায়, বড়রা সবসময়ই বড় বড় ভাবনা করে। কিন্তু বড়র মাঝে যে ছোটদের অস্তিত্ব আছে তা তাদের ভাবনায় পড়ে না। সুতরাং এ পৃথিবীতে বড় ও ছোট সবারই দরকার।
(ঘ) বড় রাজা কেন সন্ধি করতে চাইলেন?
উত্তর: সন্ধি করতে চাওয়ার কারণ : বড় রাজা ছোট রাজার সাথে কিছুতেই কুলিয়ে উঠতে পারছিলেন না।
কারণ, ছোট রাজার ফৌজগুলো বড় রাজার পায়ের নিচ দিয়ে চলে গেল। তাদের খালি চোখে দেখা যায় না। তাদের আক্রমণ করতে গিয়ে বাতাসে আক্রমণ করলো। তখন পৃথবীর যতো ঝুপঝাপ সবই বড় রাজার ছাউনির উপর পড়তে লাগল। তখন বড় বড় মন্ত্রী, সেনাপতিরা রাজাকে ফাঁপর দিতে লাগলেন। তখন বড় রাজা ছোট রাজার সাথে সন্ধি করতে চাইলেন।
(ঙ) বড় রাজা আর ছোট রাজার মধ্যে তোমার কাকে বেশি পছন্দ ? কেন?
উত্তর: বড় রাজা আর ছোট রাজার মধ্যে আমার ছোট রাজাকেই বেশি পছন্দ।
ছোট রাজা তাঁর ছোট রাজ্য নিয়েই সন্তুষ্ট। বড় রাজার মতো তিনি বিনা কারণে যুদ্ধ করতে চান না। তাঁর কথায় ও কাজে অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। এসব কারণেই ছোট রাজাকে আমার বেশি ভালো লাগে।
৮. অল্প কথায় গল্পটা বলি।
উত্তর: বড় রাজা ছোট রাজা দু’জনেরই ছিল রাজ্য জয়ের নেশা। তবে বড় রাজা বড় বড় হাতি, ঘোড়া, বড় বড় মন্ত্রী, সেনাপতি, বড় বড় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অহংকার নিয়ে রাজা জয় করতে যেতেন। রাজ্য জয় করেছেন অনেক। কিন্তু তার রাজ্যে কোনো শান্তি ছিল না। অন্য দিকে ছোট রাজা অল্প আয়োজন নিয়ে ছোট্ট একটি রাজ্য জয় করে সেখানেই শান্ত রইলেন। তাতে তার রাজ্যে শান্তি ছিল, একতা ছিল। এমন কথা শুনতে পেরে বড় রাজা কিছুতেই মানতে পারলেন না। তখন তিনি ছোট রাজার প্রতি প্রতিশোধ নিতে চাইলেন। কিন্তু ছোট রাজার রাজত্ব এমন ছোট ছিল যে, তাতে হাতি, ঘোড়া, কামান, বন্দুক এবং মন্ত্রী, সেনাপতি প্রবেশের মতো কোনো রাস্তা ছিল না। শেষ পর্যন্ত বড় রাজা ছোট রাজা এবং ছোট রাজ্যত্বটাকে হাতের মুঠোত চেপে ধরলেন। তখন ছোট রাজার ফৌজরা তার আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে বের হয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত তিনি ছোট রাজার সাথে সন্ধি করতে চাইলেন।
৯. কর্ম-অনুশীলন।
ক. শক্তির চেয়ে বুদ্ধির জোর বেশি-বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকের সহায়তায় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি।
উত্তর: প্রথমে শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে দুটি দলে ভাগ হয়ে নাও। এক পক্ষ ‘শক্তির চেয়ে বুদ্ধির জোর বেশি’ এ বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরবে। আরেক পক্ষ তাদের যুক্তি ভুল প্রমাণ করার চেষ্টা করবে। শিক্ষক পুরো বিষয়টি পরিচালনা ও বিজয়ী পক্ষ নির্বাচনের দায়িত্বে থাকবেন।
খ. বড় রাজা এবং ছোট রাজার ভূমিকায় অভিনয় করে দেখাই।
উত্তর: শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে নিজেরা চেষ্টা কর।

অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

১। ছোট রাজা ছোট রাজ্য জয়ের জন্য কীভাবে বের হলেন?
উত্তর: ছোট রাজা চললেন সাধারণ মানুষজনের সাজে, ছোট ছোট খেলনা কামান বন্দুক হাতি ঘোড়া নিয়ে ছোট একটি পুঁটলি বেঁধে, ছোট রাজ্য জয় করতে বড় রাজার পিছনে পিছনে।
২। বড় রাজা, বড় বড় মন্ত্রী, বড় বড় সেনাপতি ফাঁপরে পড়ল কেন?
উত্তর: বড় রাজা, বড় বড় মন্ত্রী, বড় বড় সেনাপতি এত হাতি ঘোড়া কামান বন্দুক নিয়েও যখন ছোট রাজাকে পরাজিত করতে পারলেন না তখন তারা ফাঁপরে পড়ল।
৩। ‘বড় রাজা ছোট রাজা’ গল্পের শিক্ষণীয় বিষয় কী?
উত্তর: ‘বড় রাজা ছোট রাজা’ গল্পের শিক্ষণীয় শিক্ষনীয় বিষয় হলো- শক্তির থেকে বুদ্ধির জোর বেশি।
৪। ‘দাদা, তুমি তোমার মস্ত রাজত্ব নিয়ে সুখে থাকো। ছোটতে-বড়তে সন্ধি হলে কী হয় তা জানো নাকি?’ এটি কে কার উদ্দেশ্যে বলেছিল?
উত্তর: ছোট রাজা বড় রাজাকে উদ্দেশ্য করে এ উক্তিটি করেছিল।
৫। ছোট রাজার রাজত্বের বর্ণনা দাও।
উত্তর: ছোট রাজার রাজত্ব ছিল খুবই ছোট। সেখানে কামান বন্দুক দিয়ে কোনো নিশানা করা যেতো না। হাতি ঘোড়া চলতে পারতো না। অনুবীক্ষণ লাগিয়ে মন্ত্রীদের মন্ত্রণালয় দেখতে হতো।
৬। বড় রাজা ছোট রাজাকে এবং তার রাজত্বকে টুটি চেপে ধরলে বড় রাজার কী হলো?
উত্তর: বড় রাজা ছোট রাজাকে এবং তার রাজত্বকে মুঠোয় চেপে ধরলে, জল যেমন গলে পালায় তেমনিভাবে ছোট রাজা, রাজ সিংহাসন, সেনা-সৈন্য সবই বড় রাজার আঙুলের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে গেল।
৭। ছোট রাজার সেনা-সৈন্য সব পালিয়ে যাওয়ার সময় বড় রাজার আঙুলটির কী অবস্থা হলো?
উত্তর: বড় রাজার আঙুলে কী যেন হুলের মতো বিঁধে গেল। তখন রাজার আঙুলটি ফুলে কলাগাছের মতো হয়ে উঠল।
৮। বড় রাজা আঙুল ফুলে কলাগাছ হলো কেন?
উত্তর: বড় রাজা ছোট রাজাকে টুটি চেপে ধরলে ছোট রাজা ও তার রাজসিংহাসন, রাজপুরী বড় রাজার আঙুলের ফাঁক দিয়ে সমস্তই বেরিয়ে গেল। বড় রাজা হাত খুলে দেখলেন মুঠো খালি। বুড়ো আঙুলের গোড়ায় মৌমাছির হুলের মতো একটি কী বিঁধে রয়েছে। যন্ত্রণায় বড় রাজার আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠল।
Codehorse App

Check Also

পাহাড়পুর রচনা চতুর্থ শ্রেণি (PDF)

পাহাড়পুর রচনা চতুর্থ শ্রেণি (PDF)

পাহাড়পুর রচনা চতুর্থ শ্রেণি (PDF): প্রিয় চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা, আজ আমরা সুন্দর একটি রচনা লিখব …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *