৪র্থ শ্রেণি হিন্দুধর্ম তৃতীয় অধ্যায় দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ: আমরা জানি, ধর্মগ্রন্থে ধর্মের কথা থাকে। ঈশ্বরের কথা থাকে। অন্যান্য জ্ঞানের কথাও থাকে। মানুষের মঙ্গলের কথা থাকে। জীবকে সেবা করার কথা থাকে। অনেক উপদেশ থাকে। এই উপদেশগুলো মেনে চললে আমাদের মঙ্গল হয়। আমরা এও জানি, বেদ হিন্দুদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ এবং বেদ ছাড়া হিন্দুধর্মের আরও অনেক ধর্মগ্রন্থ আছে। যেমন- উপনিষদ, পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি।
৪র্থ শ্রেণি হিন্দুধর্ম তৃতীয় অধ্যায় দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ:
ক. শূন্যস্থান পূরণ কর:
১। মহাভারত একটি___।
২। সংস্কৃত ভাষায় মহাভারত রচনা করেছেন___।
৩। মহাভারতের মূল কাহিনী ___ যুদ্ধ।
৪। ধৃতরাষ্ট্র ছিলেন___।
৫। কুরু-পাণ্ডবের যুদ্ধে ___অর্জুনের সারথি হয়েছিলেন।
৬। যেখানে ধর্ম, সেখানেই___।
উত্তর:
১। মহাভারত একটি বিশাল গ্রন্থ।
২। সংস্কৃত ভাষায় মহাভারত রচনা করেছেন ব্যাসদেব।
৩। মহাভারতের মূল কাহিনী কুরু-পাণ্ডবের যুদ্ধ।
৪। ধৃতরাষ্ট্র ছিলেন জন্মান্ধ।
৫। কুরু-পাণ্ডবের যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনের সারথি হয়েছিলেন।
৬। যেখানে ধর্ম, সেখানেই জয়।
খ. ডান পাশ থেকে শব্দ এনে বাম পাশের শব্দের সঙ্গে মেলাও:
উত্তর:
১। ধর্মগ্রন্থে উপাখ্যানের মধ্য দিয়ে দেওয়া হয় → উপদেশ।
২। শান্তনুর পর রাজা হন → বিচিত্রবীর্য।
৩। অর্জুনকে উপদেশ দিয়েছিলেন → শ্রীকৃষ্ণ।
৪। অসত্যের হয় → পরাজয়।
৫। কুরু ও পাণ্ডবদের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল মোট → আঠারো দিন।
৬। মহাভারতের শিক্ষা আমাদের জীবনে → কাজে লাগাব।
গ. সঠিক উত্তরটির পাশে টিক (✓) চিহ্ন দাও:
১। কে বাংলা ভাষায় মহাভারত অনুবাদ করেন?
ক. কাশীরাম দাস✓
খ. কৃত্তিবাস
গ. চণ্ডীদাস
ঘ. জ্ঞানদাস
২। মহাভারতে কয়টি পর্ব আছে?
ক. দশটি
খ. বারোটি
খ. ষোলটি
ঘ. আঠারোটি✓
৩। পান্ডুর ছেলেদের কী বলা হয়?
ক. পাণ্ডব✓
খ. কৌরব
গ. পৌরব
ঘ. সৌরভ
৪। পাণ্ডবরা কতো বছর বনবাসে ছিলেন?
ক. আট
খ. দশ
গ. বারো✓
ঘ. চৌদ্দ
৫। শ্রীকৃষ্ণ পান্ডবদের পক্ষ নিলেন কেন?
ক. সত্য রক্ষার জন্য
খ. ধর্ম রক্ষার জন্য✓
গ. সম্পদ রক্ষার জন্য
ঘ. বন্ধুত্ব রক্ষার জন্য
৬। মহাভারত থেকে আমরা কী শিক্ষা পাই?
ক. ধর্মের জয় হয়✓
খ. শক্তির জয় হয়
গ. ধনদৌলতের জয় হয়
ঘ. বুদ্ধিমানের জয় হয়
ঘ. নিচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষেপে উত্তর দাও:
প্রশ্ন ১। মহাভারতের পাঁচটি পর্বের নাম লেখ।
উত্তর: মহাভারতের পাঁচটি পর্ব হলো- ১. আদি পর্ব, ২. সভাপর্ব, ৩. বুন পর্ব, ৪. বিরাট পর্ব ও ৫. উদ্যোগ পর্ব।
প্রশ্ন ২। যুধিষ্ঠিরকে যুবরাজ হিসেবে কে মেনে নিলেন না? কেন?
উত্তর: যুধিষ্ঠিরকে যুবরাজ হিসেবে মেনে নিলেন না দুর্যোধন। তিনি পান্ডবদের মেরে ফেলার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু যুধিষ্ঠিরের কারণে তা পারে নি তাই।
প্রশ্ন ৩। মহাভারতের একটি পর্বকে সৌপ্তিক পর্ব বলা হয় কেন?
উত্তর: সৌপ্তিক পর্বে অশ্বথামা ঘুমন্ত পাণ্ডব সৈন্যদের হত্যা করেন। তাই এ পর্বের নাম হয় সৌপ্তিক পর্ব।
প্রশ্ন ৪। পান্ডবরা কেন বনে যেতে বাধ্য হন?
উত্তর: পান্ডবদের মধ্য থেকে দুর্যোধন যখন যুধিষ্ঠিরকে পাশা খেলায় আমন্ত্রণ জানায় তখন যুধিষ্ঠির তাতে রাজি হয়ে খেলা আরম্ভ করেন এবং এ খেলায় হেরে গেলে শর্ত অনুযায়ী তিনি বনে যেতে বাধ্য হন।
প্রশ্ন ৫। যুধিষ্ঠির ভীষ্মের কাছ থেকে কী সম্পর্কে জ্ঞান লাভকরেছিলেন?
উত্তর: যুধিষ্ঠির ভীষ্মের কাছ থেকে ধর্ম, শান্তি, অতিথিসেবা, আত্মশক্তি, গুরুভক্তি প্রভৃতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছিলেন।
প্রশ্ন ৬। পাণ্ডবদের রাজত্বকালে কুন্তী কাদের সঙ্গে বনে গিয়েছিলেন?
উত্তর: পান্ডবদের রাজত্বকালে কুস্তী ধৃতরাষ্ট্র, গান্ধারী, বিদুর ও – সঞ্জয়ের সঙ্গে বনে গিয়েছিলেন।
ঙ. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
প্রশ্ন ১। ধর্মগ্রন্থ পাঠ করলে আমাদের কী উপকার হয়?
উত্তর: ধর্মগ্রন্থে থাকে ধর্মের কথা, ঈশ্বরের কথা ও জ্ঞানের কথা। মানুষের মঙ্গল করা, জীবকে সেবা করা ইত্যাদি আমরা ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে জানতে পারি এবং জীবনে সেগুলোর প্রয়োগ ঘটাতে পারি।
প্রশ্ন ২। মহাভারতের উদ্যোগ পর্বের কাহিনী সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর: উদ্যোগ পর্বে পাণ্ডবরা তাদের শর্ত পূরণ করে দ্রৌপদীসহ হস্তিনাপুরে ফিরে এলেন। কিন্তু দুর্যোধন তাঁদের প্রাপ্য রাজ্য ফিরিয়ে দিলেন না। যুধিষ্ঠির এখন পাঁচ ভাইয়ের জন্য পাঁচটি গ্রাম চাইলেন। দুর্যোধন তাও দিলেন না। কৃষ্ণ উভয় পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করলেন। কিন্তু সব চেষ্টাই ব্যর্থ হলো। তখন পান্ডব ও কৌরব উভয়পক্ষ যুদ্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করল।
প্রশ্ন ৩। যদুবংশ কীভাবে ধ্বংস হয়?
উত্তর: যদুবংশ ধ্বংসের কারণ যাদবরাই। একদিন মহর্ষি বিশ্বামিত্র, কর্ম এবং নারদ দ্বারকায় এলেন। তখন কয়েকজন যাদব মহর্ষিদের প্রতারণা করার ফন্দি আঁটেন। তাঁরা শাম্বকে মহিলা সাজিয়ে মহর্ষিদের বললেন, দেখুন তো এর ছেলে না মেয়ে হবে? মহর্ষিগণ প্রতারণা বুঝতে পারলেন। তাঁরা বললেন এর পেট থেকে একটা লোহার মুসল বের হবে এবং এর দ্বারাই যদুবংশ ধ্বংস হবে। শ্রীকৃষ্ণের সামনে এ মুসলের উপস্থিতির কারণেই যদুবংশ ধ্বংস হয়।
প্রশ্ন ৪। ‘ভীষ্মের শরশয্যা’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: পাণ্ডব ও কৌরবদের মধ্যে দশ দিন ধরে ভীষণ যুদ্ধ হয়। সেই যুদ্ধের সময় ভীষ্মের শরীরে এত শর নিক্ষিপ্ত হয় যে, তাঁর দেহ মাটিতে পড়ে না। তিনি শরের ওপর শুয়ে থাকেন। একেই বলে ‘ভীষ্মের শরশয্যা’।
প্রশ্ন ৫। শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার বিষয়বস্তু কী?
উত্তর: হস্তিনাপুরে কৌরব ও পাণ্ডবদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে মতবিরোধের ফলে যুদ্ধের জন্য দুপক্ষই প্রস্তুত। কৌরব পক্ষের সেনাপতি ভীষ্ম। আর পান্ডব পক্ষের সেনাপতি অর্জুন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ হন অর্জুনের রথের সারথি। যুদ্ধক্ষেত্রে বিপক্ষে গুরুজন ও আত্মীয়-স্বজনদের দেখে অর্জুনের মন বিষাদগ্রস্ত হয়। তিনি শ্রীকৃষ্ণকে বলেন, আত্মীয়-স্বজনরাই যদি না থাকে তাহলে সেই রাজ্যে সুখ কোথায়? শ্রীকৃষ্ণ তখন অর্জুনকে বলেন- এ যুদ্ধ ধর্মযুদ্ধ। ধর্মের জন্য, ন্যায়ের জন্য যুদ্ধ করলে তাতে পাপ হয় না। এতে অর্জুনের মন শান্ত হয়। তিনি যুদ্ধ করতে উদ্যোগী হন। মহাভারতে বর্ণিত অর্জুনের প্রতি শ্রীকৃষ্ণের এসব উপদেশসমূহই হচ্ছে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার বিষয়বস্তু।
প্রশ্ন ৬। মহাভারতের প্রধান শিক্ষা কী?
উত্তর: মহাভারতের প্রধান শিক্ষা হলো সত্যের জয় অসত্যের পরাজয়। যথা ধর্ম তথা জয়। কেবল নিজের সুখ কামনা করতে নেই। সকলকে নিয়ে সুখি হওয়াই মানুষের লক্ষ্য হওয়া উচিত। অধর্ম আচরণ করলে তার বিনাশ হয়।