৫ম শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ৮ মহাবিশ্ব প্রশ্ন উত্তর: পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব ৩,৮৪,৪০০ কি.মি.। আলো প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৩,০০,০০০ কি.মি. বেগে চলে। আর তাই, চাঁদ থেকে পৃথিবীতে আলো পৌঁছাতে ১.৩ সেকেন্ড সময় লাগে। পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব প্রায় ১৫,০০,০০,০০০ কি.মি.। সূর্য থেকে পৃথিবীতে আলো এসে পৌঁছাতে প্রায় ৮ মিনিট সময় লাগে। তার মানে হলো আমরা সবসময়ই ৮ মিনিট পূর্বে সূর্য থেকে উৎসারিত আলো দেখতে পাই।
যদি আমরা আলোর গতিতে চলতে পারতাম তবে আকাশগঙ্গা ছায়াপথের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যেতে আমাদের ১,৩০,০০০ বছর সময় লাগত। মহাকাশের ছায়াপথসমূহের মধ্যে আকাশগঙ্গা একটি ছায়াপথ। স্যার এডিংটনের মতে, প্রতি ছায়াপথে গড়ে দশ সহস্রকোটি নক্ষত্র রয়েছে।
মহাবিশ্ব এখনও প্রসারিত হচ্ছে। আর এই কারণে মহাবিশ্বের প্রকৃত আকার সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেন না। তবে মহাকাশ সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণা থেকে আমরা ধারণা করতে পারি, মহাবিশ্ব কত বড়। মহাকাশ সম্পর্কিত গবেষণাকে বলা হয় জ্যোতির্বিজ্ঞান। বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তি যেমন-দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করছেন। গ্যালিলিও গ্যালিলি উন্নত দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে প্রমাণ করেছেন যে, সৌরজগতের গ্রহগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য বর্তমানে বিজ্ঞানীরা মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করেছেন এবং মহাকাশ দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করছেন।
৫ম শ্রেণির বিজ্ঞান অধ্যায় ৮ মহাবিশ্ব প্রশ্ন উত্তর:
১. সঠিক উত্তরে টিক চিহ্ন (✔) দিই।
১) কোনটি সঠিক?
ক. চাঁদের নিজস্ব আলো রয়েছে
খ. চাঁদ একটি উপগ্রহ✔
গ. চাঁদ একটি গ্রহ
ঘ. চাঁদ সূর্যের চারপাশে ঘোরে
২) সূর্যের চারদিকে একবার ঘুরে আসতে পৃথিবীর কত সময় লাগে?
ক. ২৪ দিন
খ. ২৮ দিন
গ. ৩৬৫ দিন✔
ঘ. ৭ দিন
২. সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন:
প্রশ্ন ১। পৃথিবীর দুই ধরনের গতি কী কী?
উত্তর: পৃথিবীর দুই ধরনের গতি হলো- আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি।
প্রশ্ন ২। দিন এবং রাত কী কারণে হয়?
উত্তর: পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারণে দিন এবং রাত হয়।
প্রশ্ন ৩। চাঁদের বিভিন্ন দশার কারণ কী?
উত্তর: চাঁদের অর্ধাংশ সূর্যের আলোতে সব সময়ই আলোকিত থাকে। কিন্তু পৃথিবীকে আবর্তনের সময় পৃথিবীর দিকে মুখ করা চাঁদের আলোকিত অংশের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়। এর ফলে চাঁদের বিভিন্ন দশার সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ৪। গ্রহ ও উপগ্রহের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: গ্রহ নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। অন্যদিকে উপগ্রহ কোনো একটি গ্রহকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়। যেমন- পৃথিবী একটি গ্রহ যা সূর্যকে আবর্তন করে, অন্যদিকে চাঁদ একটি উপগ্রহ, যা পৃথিবীকে আবর্তন করে।
প্রশ্ন ৫। গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় কেন?
উত্তর: গ্রীষ্মকালে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে হেলে। থাকে। ফলে এ সময় উত্তর গোলার্ধে সূর্য খাড়াভাবে কিরণ দেয়। তাই দিনের সময়কাল দীর্ঘ হয় এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।
গাইড ও সাজেশন পেতে আমাদের অ্যাপটি ইন্সটল করো 👉 Install Now |
৩. বর্ণনামূলক প্রশ্ন:
প্রশ্ন ১। ঋতু পরিবর্তনের কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ঋতু পরিবর্তনের কারণ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো-
১. পৃথিবীর নিজস্ব ঘূর্ণনের ফলে।
২. পৃথিবীর সূর্যের দিকে হেলে থাকা অক্ষের কারণে।
৩. সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর আবর্তনের জন্য।
৪. পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ সূর্যের দিকে বা সূর্যের বিপরীত দিকে সরে পড়ার কারণে।
৫. সূর্যের আলো খাড়াভাবে বা তির্যকভাবে পড়ার কারণে।
প্রশ্ন ২। সূর্যকে পূর্ব থেকে পশ্চিম আকাশে চলমান মনে হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: পৃথিবী প্রতি ২৪ ঘণ্টায় নিজ অক্ষে একবার সম্পূর্ণ ঘুরছে।
এ ঘূর্ণনের সময় পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ঘূর্ণায়মান থাকে। পৃথিবীর এ ঘূর্ণনের কারণেই সূর্য পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম দিকে তার অবস্থান পরিবর্তন করছে বলে মনে হয়। অর্থাৎ সূর্যকে পূর্ব থেকে পশ্চিম আকাশে চলমান মনে হয়।
প্রশ্ন ৩। পৃথিবীর অর্ধেক উত্তরাংশ সূর্যের দিকে হেলে পড়লে কী ঘটে? তখন দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের কী পরিবর্তন ঘটে?
উত্তর : পৃথিবীর অর্ধেক উত্তরাংশ সূর্যের দিকে হেলে পড়লে সূর্য অপেক্ষাকৃত উঁচুতে অবস্থান করে এবং উত্তর গোলার্ধে খাড়াভাবে কিরণ দেয়। ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। এ সময় দিনের সময়কাল দীর্ঘ হয় এবং রাত ছোট হয়।
প্রশ্ন ৪। কীভাবে সৌরজগৎ, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি ও মহাবিশ্ব সম্পর্কযুক্ত?
উত্তর: সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান গ্রহ ও উপগ্রহ নিয়ে সৌরজগৎ গঠিত। আবার গ্যালাক্সি হচ্ছে নক্ষত্রের একটি বিশাল সমাবেশ। মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্যালাক্সি রয়েছে। আর সৌরজগৎ একটি গ্যালাক্সির অন্তর্ভুক্ত যার নাম মিল্কিওয়ে। আবার এ মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি হচ্ছে মহাবিশ্বের একটি অংশ। এভাবেই সৌরজগৎ, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি ও মহাবিশ্ব সম্পর্কযুক্ত।
প্রশ্ন ৫। নিচের ছবি দুইটি দেখ। দুইটি ছবিই দিনের একই সময়ে একই স্থানে তোলা হলেও দেখতে ভিন্ন। এর কারণ কী?
উত্তর: নিচের ছবি দুটি দিনের একই সময়ে তোলা হলেও বছরের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে তোলা। প্রথম ছবিটি তোলা হয়েছে জুন মাসের কোনো একদিন বিকাল ৫:০০ টায়। এ সময় ঐ স্থানে গ্রীষ্মকাল চলছে। আর গ্রীষ্মকালে দিনের সময়কাল দীর্ঘ হয় বলে বিকাল ৫:০০ টায়ও সন্ধ্যা নামেনি। তাই স্থানটি রৌদ্রোজ্জ্বল। অন্যদিকে দ্বিতীয় ছবিটি তোলা হয়েছে ডিসেম্বর মাসে। এ সময়ে ঐ স্থানে শীতকাল। আর শীতকালে দিন অপেক্ষাকৃত ছোট হয় বলে বিকাল ৫:০০ টায় সন্ধ্যা নেমে গেছে। তাই ছবিটি দেখতে অন্ধকারাচ্ছন্ন।